বৈঠকে তিনি বলেছেন, দল ও দলের নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এ কারণে তিনি নির্বাচন করবেন না।
রওশন এরশাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এবারও তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছি। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।’
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মজিবুল হক সহযোগিতা না করার কারণে দলের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন রওশন।
তিনি বলেন, ‘এমন অবস্থায় দলের নেতাদের অবমূল্যায়ন করার কারণে আমার নির্বাচনে অংশ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
এর আগে বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে ঢাকার গুলশানের বাসায় দলের অনুসারীদের নিয়ে এক বৈঠকে বসেন রওশন এরশাদ। বৈঠকে মনোনয়ন বঞ্চিত রওশনপন্থী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বৈঠকের পর রওশন এরশাদ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নেননি।
জাপা সূত্র জানায়, রওশন তাঁর ছেলেসহ কয়েকজন অনুসারীর জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সম্মত হননি জি এম কাদের। ফলে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত অটল ছিলেন রওশন।
দলের একাধিক নেতা বলেন, রওশনপুত্র সাদ এরশাদের রংপুর-৩ আসনে জি এম কাদেরের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনকেন্দ্রিক দ্বন্দ্বের শুরু হয়। দলের কর্তৃত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে আগেই বিভেদ ছিল।
বৈঠক শুরুর আগে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার অনুসারী ও রংপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়া মশিউর রহমান রাঙ্গা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা যাব, কীভাবে যাব সে বিষয় নির্ধারণ করতেই এই বৈঠক। আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের সঙ্গে বসে আমরা সবাই একটা সিদ্ধান্ত নেব।’
এদিকে রওশন এরশাদের ময়মনসিহং-৪ আসনে দলীয় নেতা আবু মুসা সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে জাতীয় পার্টি।
রওশন এরশাদ মনোনয়ন না নেওয়ায় আজ রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়।
জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, রওশন এরশাদ নির্বাচন করবেন না এমন সিদ্ধান্ত জেনেই তাঁর আসনে বিকল্প প্রার্থী ঠিক করে রেখেছিলেন জি এম কাদের। তবুও আজ রাত ৯টা পর্যন্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব রওশন এরশাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
এ সময়ে তিনি মনোনয়ন সংগ্রহ না করায় বিকল্প প্রার্থী আবু মুসাকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়। আবু মুসা সরকার ময়মনসিংহ জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
গত সোমবার জাতীয় পার্টি যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে ঘোষণা করা হয় ২৮৭টি নাম। তাতে জায়গা হয়নি রওশনপন্থী কোনো নেতার। এমনকি গত নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া রওশনপন্থীদের দলীয় মনোনয়ন ফরম দেওয়া হয়নি।