বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে শর্ত নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল বাংলাদেশ সফরে আসছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৬ অক্টোবর ১০ দিনের জন্য প্রতিনিধিদল ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঋণ চাওয়া হয়েছে। অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে গত জুলাইয়ে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখা ও বাজেট-সহায়তার জন্য আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। চিঠিতে ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করা না হলেও সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সবমিলিয়ে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ চায়।
ওয়াশিংটনে চলমান আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল। রবিবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের গভর্নর বলেন, আইএমএফ থেকে ঋণ পাওয়ার মৌখিক আশ্বাস পাওয়া গেছে আলাদাভাবে বিশ্বব্যাংক থেকে ১০০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। তবে ঋণ দিতে বাংলাদেশকে নানামুখী শর্তও দেবে আইএমএফ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৪৫০ কোটি ডলারের মধ্যে লেনদেনের ভারসাম্য বাবদ ১৫০ কোটি ডলার ও বাজেট-সহায়তা বাবদ ১৫০ কোটি ডলার পাওয়া যেতে পারে। বাকি ১৫০ কোটি ডলার পাওয়া পেতে পারে আইএমএফের নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই সহায়তা তহবিল থেকে। এই নতুন তহবিলের ঋণ পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তুলনামূক সহজ শর্তে এই ঋণ পাওয়া যাবে। তবে লেনদেন ভারসাম্য ঠিক রাখতে দেওয়া ঋণের শর্ত তুলনামূলক কঠিন হতে পারে।
এসব শর্তের বিষয়ে আব্দুর রউফ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ চায় বাংলাদেশের রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন হোক। রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রম গতিশীল হোক। ব্যাংক খাতে বর্তমানে উচ্চ মাত্রার খেলাপি ঋণ রয়েছে। আইএমএফ চায়, এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরুক। করপোরেট সুশাসন বলিষ্ঠ হোক।
উল্লেখ্য, এর আগে আইএমএফের প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসেছিলেন। তারা আলাদাভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে শুরু করে অর্থ বিভাগ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেন। সেসময় সার্বিক অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সরকারের ভর্তুকি কমাতে নানা উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হয়। এবার ঋণের শর্ত নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানাগেছে।