logo
Wednesday , 27 December 2023
  1. সকল নিউজ

জমজমাট প্রচারণা, সরগরম ভোটের মাঠ

প্রতিবেদক
admin
December 27, 2023 9:25 am

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র ১১ দিন। সারা দেশের মতো ঢাকা জেলা ও মহানগরীর ২০টি আসনে ১৫৬ জন প্রার্থীর জমজমাট প্রচারণা চলছে। ঢাকা-৪ থেকে ঢাকা-১৮—এই ১৫টি আসন পড়েছে ঢাকা মহানগরে। মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলি প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে লাগানো পোস্টারে ছেয়ে গেছে। চলছে মিছিল-মিটিং ও পথসভা। ভোটারদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেট। অনলাইনেও চলছে ভোটের প্রচার। প্রার্থীদের পক্ষে তাদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভোট চাচ্ছেন। প্রার্থী ছাড়াও ভোটের মাঠ সরগরম রেখেছেন তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনরা। তারাও নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। জমে উঠেছে ভোটের মাঠে প্রচারযুদ্ধ। গণসংযোগ থেকে শুরু করে পোস্টার-ব্যানার সাঁটানো, মাইকিং এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন প্রার্থীরা।

ঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৩টি নিয়ে বেশ ‘নির্ভার’ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও তাদের অনুসারীরা। এই আসনগুলোতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের জয় সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছেন তারা সবাই। বাকি সাতটি আসনে আওয়ামী লীগেরই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে নৌকার প্রার্থীদের। একটি আসন আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টিকে (জাপা)। সেই আসনেও জাপা প্রার্থীর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

ভোটযুদ্ধের আভাস যেসব আসনে: ঢাকা-১ আসনে মূল লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই নেতার মধ্যে। এই আসনে সালমান এফ রহমান আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তিনি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা। লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হেভিওয়েট এই দুই প্রার্থী সমানতালে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল বিএনপির মুফিদ খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির শামসুজ্জামান চৌধুরী, গণফণ্টের শেখ মো. আলী, ওয়ার্কার্স পার্টির মো. করম আলী এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আ. হাকিম এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন। স্থানীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে মূল ভোটযুদ্ধ হবে লাঙ্গল প্রার্থীর সঙ্গে। উভয়ই গতকালও ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন। ঢাকা-৪ আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সানজিদা খানম। পরের দুই নির্বাচনেই আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয় জাতীয় পার্টিকে (জাপা)। আবু হোসেন বাবলা দুই মেয়াদেই এমপি নির্বাচিত হন। এবারে আর আসন সমঝোতায় যায়নি আওয়ামী লীগ। ফের প্রার্থী করা হয়েছে সানজিদাকে। তবে আবু হোসেন বাবলাও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন। এছাড়া রয়েছেন আরও সাত জন প্রার্থী। তবে তাদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আওলাদ হোসেন, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব ছিলেন।

ঢাকা-৫ আসনে ভোটের মাঠে দ্বিমুখী লড়াইয়ের প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা। এই আসনে মোট প্রার্থী ১২ জন। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে হারুনর রশীদ মুন্নাকে। তবে ২০০৮ থেকে টানা তিন বার এই আসনে নৌকা নিয়ে এমপি হয়েছিলেন প্রয়াত হাবিবুর রহমান। তার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল দলীয় প্রার্থিতা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। ট্রাক প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন তিনি। এছাড়া আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. কামরুল হাসান ঈগল প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন।

ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রার্থী ঢাকা-১৪ আসনে: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ৭ থেকে ১২ পর্যন্ত এবং সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে ঢাকা-১৪ আসন। এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৪ জন প্রার্থী। তবে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, বাঁশি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ফরিদুল হক হ্যাপি, ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন ও কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ব্যবসায়ী মো. লুত্ফর রহমান (সিআইপি)। এই চার জন ছাড়া বাকি প্রার্থীদের নির্বাচনি পোস্টার দেখা গেলেও মাঠে তত্পরতা নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ভোটাররা। বাঁশি-ট্রাকের চাপে রয়েছেন নৌকার নিখিল। প্রথম বার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া নিখিলের পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগও পুরোপুরি নেই। বরং তার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকেই সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। তবে চার জনই শৃঙ্খলা বজায় রেখে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ঢাকা-১৪ আসনে অন্য ১০ প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) আলমাস উদ্দিন (লাঙ্গল), জাসদের আবু হানিফ (মশাল), তৃণমূল বিএনপির নাজমুল ইসলাম (সোনালী আঁশ), বিএনএফের কামরুল ইসলাম (টেলিভিশন), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মাহবুব মোড়ল (আম), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ (একতারা), সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আসিফ হোসেন (ছড়ি), জেড আই রাসেল (ঈগল), এমরুল কায়েস খান (রকেট) ও মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ (দালান)। গতকাল নির্বাচনি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নৌকার পাশাপাশি বাঁশি-ট্রাক প্রতীকের পোস্টার-ব্যানারের উপস্থিতিও রয়েছে। এছাড়া কেটলি, লাঙ্গল ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর পোস্টারও চোখে পড়েছে। রকেট ও সোনালী আঁশ প্রতীকের পোস্টারও কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন শনিবার সকালে। ভোটের মাঠে তাকেই সবচেয়ে শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী মনে করছেন স্থানীয়রা। সব মিলিয়ে ঢাকা-১৪ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। তবে সবাই শান্তিপূর্ণভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ - সকল নিউজ