গত ১৫ বছরের বেশি সময় সাংগঠনিক ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপি। দলে রয়েছে নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি। ভবিষ্যৎ পরিণতি নিয়েও হতাশ নেতাকর্মীদের একাংশ। বিএনপি পুনর্গঠনে ‘অতিমূল্যায়ন’ আর ‘অবমূল্যায়ন’ নিয়ে আছে জটিলতা। চেয়ারপারসন অসুস্থ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বিদেশে। স্থায়ী কমিটিতে নেই ‘ধার-ভার’ থাকা নেতা। অঙ্গ সংগঠনগুলোর কমিটি-নেতৃত্ব নিয়েও আছে অসন্তোষ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যর্থতা সেটা আরও বেশি প্রতিষ্ঠিত করেছে। সব মিলিয়ে অনেকটাই নড়বড়ে অবস্থা বিএনপির।
আর এই নড়বড়ে অবস্থার জন্য দায়ী ‘সঠিক নেতৃত্ব’- যা উঠে এসেছে বিএনপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির করা জরিপে। জরিপে দেখা যায়, তারেক রহমানের নেতৃত্ব চায় না দলের ৭২ শতাংশ নেতাকর্মী। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির জরিপে এমন তথ্য উঠে আসায় চক্ষু ছানাবড়া তারেকপন্থী নেতাকর্মীদের।
জরিপে উঠে এসেছে, একাদশ জাতীয় সংসদের পর থেকে তারেকপন্থী নেতাকর্মীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে বিএনপিতে। অপরিপক্ক নেতৃত্ব, কমিটি বাণিজ্য, মননোয়ন বাণিজ্যের কারণেই দলে জনপ্রয়িতায় ভাটা পড়ে তারেক রহমানের।
জরিপ বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির অহ্বায়ক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির তাগিদ থেকে দলের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা খুঁজে বের করতে এ জরিপ চালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। জরিপে তারেক রহমানের নেতৃত্বের দুর্বলতাই বেশি উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে দেশে নেই। ফলে বাংলাদেশের পরিবর্তিত বাস্তবতা সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। কোন নেতাকর্মী কি করছেন, সে সম্পর্কেও লন্ডনে বসে পর্যাপ্ত এবং সঠিক ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়। যার ফলে তিনি একের পর এক ভুল করছেন। বিভিন্ন কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে প্রায়ই পক্ষপাতিত্ব এবং অযোগ্যদের দায়িত্ব দিচ্ছেন।
তারেকবিরোধী নেতারা মনে করছেন, বিএনপিকে তারেকের কর্তৃত্বমুক্ত করতে পারলে আন্তর্জাতিকভাবেও ভালো ফল পাওয়া যাবে। কারণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার ভাবমূর্তি ভালো নয়। সবাই তাকে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী হিসেবে চেনে। তারেকমুক্ত হলেই বিএনপি পাবে নতুন দিশা।