logo
Monday , 19 June 2023
  1. সকল নিউজ

আঁখির মৃত্যুর কারণ নিয়ে যা জানাল ল্যাবএইড

প্রতিবেদক
admin
June 19, 2023 9:13 am

সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মৃত মাহবুবুর রহমান আঁখিকে প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ ও হার্ট অ্যাটাকের পর ল্যাব এইড হাসপাতালে আনা হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীকে অচেতন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে অ্যাম্বুলেন্সে ল্যাবএইড হাসপাতালে আনা হয় বলে জানিয়েছে তারা।

রোববার (১৮ জুন) ল্যাব এইড হাসপাতালের পক্ষ থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-এ-খোদা এসব তথ্য জানিয়েছেন পাশাপাশি তারা একটি বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেছে।

জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, গত ১০ জুন বিকেল ৩টা ৩৯ মিনিটে মাহবুবা রহমান আঁখিকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে অচেতন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে অ্যাম্বুলেন্সে ল্যাবএইড হাসপাতালে আনা হয়েছি। তখন তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন। তার প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ ও হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল।

রোগীর শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি জানান, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউ-তে রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছিল। রোগীর অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ১২ জুন ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। সে অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান অব্যাহত ছিল। রোগীর ইউরিন আউটপুট বন্ধ থাকায় ডায়ালাইসিস প্রদান করা হচ্ছিল। সকল প্রকার প্রচেষ্টার পরও রোগীর কোনো প্রকার উন্নতি পরিলক্ষিত হয়নি।

এর আগে, গত ৯ জুন প্রসব ব্যথা উঠায় রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে মাহবুবা রহমান আঁখিকে ভর্তি করা হয়। যদিও সেই সময়ে সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না, তারপরও রোগীদের পক্ষ থেকে সংযুক্তা সাহার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, তিনি আছেন এবং অপারেশন থিয়েটার কাজ করছেন।

ভুক্তভোগীর স্বামী ইয়াকুব আলী জানিয়েছিলেন, তার স্ত্রীকে যখন অটিতে ঢুকানো হয় এবং নরমাল ডেলিভারির জন্য চেষ্টা শুরু করা হয়, তখনও সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে আছেন কি না জানতে চাওয়া হয়। ওই সময়ও কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি আছেন এবং তিনি তার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরে জানা যায় ডা. সংযুক্তা সাহা ছিলেন না এবং তারা রোগীর কোনোরকম চেক-আপ ছাড়াই ডেলিভারির কাজ শুরু করে দেন। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই আঁখি সেন্সলেস হয়ে যায়। পরে শেষ পর্যন্ত তার কোনো ইমপ্রুভমেন্ট হয়নি।

এ বিষয়ে শুরু থেকেই আঁখির স্বামী ইয়াকুবের সঙ্গে লুকোচুরি করছিলেন চিকিৎসকরা। একপর্যায়ে ইয়াকুবকে জানানো হয়, সেন্ট্রাল হাসপাতালে তার স্ত্রীর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। তাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পরে স্ত্রীর জীবন বাঁচাতে গত ১০ জুন ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে আঁখিকে ভর্তি করান ইয়াকুব। এরপর সেন্ট্রাল হাসপাতালে এসে জানতে পারেন তার নবজাতক হাসপাতালের এনআইসিইউতে মারা গেছে।

পরবর্তীতে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানে আঁখিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। তবে তার কোনো ইমপ্রুভমেন্ট ছিল না। চিকিৎসকরাও জানিয়েছিলেন, আঁখির ইমপ্রুভমেন্ট হওয়ার সম্ভাবনাও কম। তার শরীরের কিডনি, লিভার, হার্ট এবং অন্য কোনো অংশ কাজ করছিল না। এরমধ্যে ব্রেন স্ট্রোকও করেন আঁখি, সেই সঙ্গে রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিল না তার। ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ার কারণে শরীরের অন্য অংশগুলো কাজ করতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছিল। এতে হাসপাতালে ভর্তির পুরো সময় তাকে রক্ত দিতে হয় এবং যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিঃশ্বাস চলবে ততক্ষণ পর্যন্ত রক্ত দিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

১৪ জুন এজাহারনামীয় দুই আসামি ডা. মুনা সাহা ও ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করেছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু ঘাটতি দেখতে পান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। জরুরি চিকিৎসায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আইসিইউসহ প্রতিষ্ঠানটিতে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধের নির্দেশ দেয় অধিদপ্তর। পাশাপাশি ডা. সংযুক্তা সাহাকে ওই প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ সেবা দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত