এর আগের প্রতিবেদনে আমরা দেখেছি ডেসটিনির অর্থ আত্নসাতে বরখাস্ত কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান যে অপতৎপরতা ছিল তার ইতিহাস । তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসে (বর্তমানে বিজিবিতে) দায়িত্ব পালনকালে একাধিক অনৈতিক কাজের কারণে বরখাস্ত করা হয় কর্নেল শহিদ উদ্দিন খানকে। এরপর থেকে জঙ্গি অর্থায়ন, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা , কখনও গুজব, কখনও অপপ্রচার , কখনও বিতর্কিত ব্যক্তির সঙ্গে ফেসবুক লাইভ কিংবা নিজে ফেসবুক লাইভে এসে বা স্ট্যাটাস দিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন। আজ আমরা জানবো জাল টাকার মামলায় স্ত্রীসহ কর্নেল (বরখাস্ত) শহীদের যে ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে সেই তথ্য । ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রীর মালিকানাধীন ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন বারিধারা ডিওএইচএস এর ২ নং রোডের ১৮৪ নং বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ আরেকটি পিস্তল, একটি শর্টগান, দুই রাউন্ড কার্তুজ এবং শর্টগানের দুইটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে । এছাড়া তাদের শোবার ঘরের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে এক হাজার টাকার তিন বান্ডিল জাল টাকার নোট যার পরিমান তিন লাখ টাকা উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ফেইক কারেন্সী নোট টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নি.) বিপ্লব কিশোর শীল ওই দিনই ক্যান্টনমেন্ট থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া সে সময় তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধ আইনেও একটি মামলা করা হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর আদালত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় এরপর ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সৈয়দা হাফছা ঝুমা তাদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যই বরখাস্ত কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান এবং তার স্ত্রী মিসেস ফারজানা আনজুম খানের বিরুদ্ধে তিন লাখ জাল টাকার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। অর্থদণ্ড আনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ সাজা পরোয়ানা ইস্যু করেছে। কিন্তু এই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত শহীদ উদ্দিন খান ও তার স্ত্রী মিসেস ফারজানা আনজুম খান লণ্ডনে পলাতক রয়েছেন। মামলার অপর দুই আসামি সৈয়দ আকিদুল আলী ও খোরশেদ আলম পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছে আদালত। খালাসপ্রাপ্ত হবার আগে আকিদুল আলী ও খোরশেদ আলম কারাগারে ছিলেন। এ মামলায় এ খালাস পেলেও অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের মামলায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা দেওয়া হয়েছে । তাই তারা কারামুক্ত হতে পারেন নি । শহীদ তার নিজ স্বার্থের সব কিছুই করতে পারে তার তালে নেচে আকিদুল আলী ও খোরশেদ আলম এর মত মানুষেরা বার বার বিপদে পড়েছেন । শহীদ উদ্দিন আগা গোড়াই ধুরন্ধর স্বভাবের একজন মানুষ তার অপকর্মের লিষ্ট শেষ হবার নয় । পরবর্তী প্রতিবেদনে আসছে তার আরও একটি অপকর্মের ইতিহাস …।