যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, একজন স্বৈরশাসকের পকেট থেকে বিএনপির সৃষ্টি, তারা কি সেটা ভুলে গেছে? তারা নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা সংগ্রাম করছে! প্রথমে রাজনীতিবিদদের গালি দিয়ে মিলিটারি লেবাস পরে ক্ষমতা দখল এবং তারপর লেবাস খুলে নিজেই রাজনীতিতে নামা। রাজনৈতিক দলের কিছু উচ্ছিষ্টদের নিয়ে দল গঠন করা। সেই বিএনপি আজকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে। তাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তারা নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় গুলশানের কালাচাঁদপুর সরকারি স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে ঈদ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের উদ্যোগে শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ পরশ বলেন, ওরা হত্যা-খুন-গুমের কথা বলে, আওয়ামী লীগ ২১ বছর সব ধরণের নির্যাতন সহ্য করেছে। হত্যার শিকার হয়েছে, বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে, পোড়ানো হয়েছে, জেল-জুলুম হয়েছে। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে বিজয় মিছিলও করেনি, যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এই সংযমের প্রতিদান কী পেলাম? ৩০ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হত্যা করেছিল ওরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারী-শিশু নির্যাতন করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আদলে।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে প্রতি রাতে মানুষকে বিনা বিচারে ফাঁসি দেওয়া হতো। এভাবে আড়াই হাজার সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। আজকে তারা আইন-শৃঙ্খলা এবং হত্যা-গুমের কথা বিদেশিদের কাছে নালিস করে। আজকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে গঠিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র চাচ্ছে। যাদের জন্মের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই, তারা গণতন্ত্রের কথা বলছে। একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলছে, অন্যদিকে সাংবাদিকদের গায়ে হাত দিচ্ছে, পুলিশেল ওপর চড়াও হচ্ছে।
যুবলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শেখ পরশ বলেন, আমাদের সামনে অনেক কাজ। আপনারা যদি যুবলীগ করতে চান তাহলে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে। শেখ হাসিনা যে রাজনৈতিক মানদণ্ড স্থাপন করেছেন সেটা অনুসরণ করতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যেতে হবে। আমাদের আগামীতে এই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কোন জনবিচ্ছিন্ন সুশীলদের পূর্ব-নির্ধারিত সুশাসনের সংজ্ঞা দ্বারা আমাদের পরিচালিত হতে হবে না। আমাদের সুশাসনের সংজ্ঞা শেখ হাসিনা রচিত করেছেন। সেটা হচ্ছে মানবিকতা, ন্যায়পরায়ণতা ও স্বচ্ছতা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকার এ দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল আর শেখ হাসিনার সরকার জঙ্গিবাদ নির্মূল করে দিয়েছে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দিয়েছে, তাই এমপি-মন্ত্রী বলেন, আর প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না, সাজা হচ্ছে। অনেক সরকার দেখেছি কিন্তু এই সততা ও ন্যায়পরায়ণতা আর কোন সরকার দেখাতে পারেনি এই ৫০ বছরে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার খুলে পড়ে দেখুন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি এমন কোন প্রতিশ্রুতি নেই, যেটা শেখ হাসিনা সরকার পূরণ করেনি।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আমরা যখন মানুষের সেবা করছি তখন দেশবিরোধী শক্তি, জনগণের অর্থ লুণ্ঠনকারী দল জামায়াত-বিএনপি আবারও দেশকে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশি প্রভুদের কাছে নালিশ করছে। বিদেশি প্রভুদেরকে নিয়ে নামি-দামি হোটেলে ইফতার পার্টি করে চলেছে। এই জামায়াত-বিএনপি ১৯৭১ সালে মানুষ হত্যা করছে আমাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, ২০০১-২০০৬ সালেও একই কায়দায় জ্বালাও-পোড়াও করেছে। এ দেশের সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, গুম, খুন করেছে। ২০১৩-২০১৪ সালেও সারাদেশে অবরোধ দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস করে হাজার হাজার যানবাহন জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে। ১৬৫ জন জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। সেই একই চেহারার আভাস পাচ্ছি ২০২৩ সালে এসেও। বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে, সেখানেও এই বিএনপি-জামাতের হাত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোন বিদেশি প্রভু দিয়ে ক্ষমতার বদল হবে না। কে ক্ষমতায় থাকবে না থাকবে তা নির্ধারণ করবে এ দেশের জনগণ। দেশের জনগণ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পাশে রয়েছে।
