logo
Wednesday , 20 March 2024
  1. সকল নিউজ

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আরও একটি র‌্যাম্প খুলছে আজ

প্রতিবেদক
admin
March 20, 2024 10:50 am

গাড়ি নামার জন্য আরও একটি র‌্যাম্প খুলে দেওয়া হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়কে) প্রকল্পের। এর ফলে আরও দেড় কিলোমিটার অংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। এই র‌্যাম্পটি ব্যবহার করে রাজধানীর তেজগাঁও থেকে কাওরানবাজারের চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) মুখী নিচের সড়কে নামতে পারবে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় কাওরানবাজার এলাকায় এই র‌্যাম্পটি যানবাহন ব্যবহারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সবচেয়ে বড় এই উড়াল সড়কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। যানজট নিরসনে রাজধানীর বিমান বন্দরের কাওলা থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এর মধ্যে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশটি গত বছর সেপ্টেম্বরে খুলে দেয়া হয়।

এই উড়াল সড়কে গাড়ি ওঠানামার জন্য ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১ র‌্যাম্প রয়েছে। র‌্যাম্পসহ পুরো প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ। ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমে আসবে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ হ্রাস পাবে। ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ অংশের সংযোগ ও ট্রাফিক ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। উত্তর ও দক্ষিণ গেটওয়ের সংযোগ উন্নত হবে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সার্বিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান।
এ বিষয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র প্রকল্প পরিচালক এ এইচএম শাখাওয়াত আকতার  বলেন, ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত ৩১টি র‌্যাম্প রয়েছে। এই র‌্যাম্পগুলো ব্যবহার করে গাড়ি উড়াল সড়কে ওঠানামা করতে পারবে। গত বছর ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ খুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার কাওরানবাজারমুখী আরও একটি র‌্যাম্প খুলে দেওয়া হবে।

এই অংশটি চালু হলে আরও দেড় কিলোমিটার অংশ বৃদ্ধি পাবে। আমাদের এখন পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ অংশে কাজ চলছে। এখানে সোনারগাঁও হোটেলের পাশে একটা ওঠার র‌্যাম্প হবে। পুরো প্রকল্প এই বছরে শেষ হবে।
উড়াল সড়কে ৩১টি র‌্যাম্প ॥ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়কে) ওঠানামার জন্য মোট ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে প্রথম অংশে রয়েছে ১০টি র‌্যাম্প। এগুলো হলো-হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দুটি র‌্যাম্পের মধ্যে বিমানবন্দর ইএন- র‌্যাম্পের দৈর্ঘ্য ৯৯৪ মিটার, বিমানবন্দর ইএক্স র‌্যাম্প-৫২২ মিটার। এছাড়া কুড়িল এলাকায় তিনটি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। এগুলো হলো-কুড়িল ইএন-ওয়ান-৬৯৭ মিটার, কুড়িল ইএন-টু-৮২৫ মিটার, কুড়িল ইএক্স-৭০৪ মিটার।

বনানী এলাকায় চারটি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলো হলো- বনানী ইএন-ওয়ান-৭৪৬ মিটার, বানানী ইএন-টু-৬০০ মিটার, বনানী ইএক্স-ওয়ান-৪১৫ মিটার ও বনানী ইএক্স-টু-৫১৬ মিটার। প্রথম অংশের ৫৬৫ মিটার দীর্ঘ ক্যান্টনমেন্ট ইএক্স-টু-র‌্যাম্পের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
দ্বিতীয় অংশে ১৫টি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে মহাখালী এলাকায় উড়ার সড়কে প্রবেশের জন্য একটি ও বের হওয়ার জন্য দু’টি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া তেজগাঁও এলাকায় উড়াল সড়কে প্রবেশের জন্য তিনটি ও বের হওয়ার জন্য দুটি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। সোনারগাঁও হোটেল এলাকায় উড়াল সড়কে প্রবেশের জন্য তিনটি ও বের হওয়ার জন্য চারটি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে। তৃতীয় অংশে উড়াল সড়কে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য কমলাপুর এলাকায় চারটি ও কুতুবখালী এলাকায় ২টি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হবে।
কাওলা-তেজগাঁও আসতে সময় লাগবে ১২ মিনিট ॥ রাজধানীতে যানজট নিরসনে নেওয়া ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের চুক্তি সই হয়েছিল ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের জুনে। কাওলা থেকে উড়াল সড়কটি যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত। মোট দূরত্ব ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। বর্তমানে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার উড়াল সড়কে চলাচল করছে যানবাহন।
উড়াল সড়কের রুট হচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে। ফার্মগেট পর্যন্ত উড়ালসড়কে ১১টি টোল প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো পথ চালু হলে তা যানবাহনে পাড়ি দিতে ২০ মিনিট লাগবে। কাওলা থেকে তেজগাঁও অংশ পর্যন্ত আসতে ১২ মিনিট লাগে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে এটি বাস্তবায়ন করছে ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড। শেয়ার হোল্ডার্স ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড (থাইল্যান্ড) ৫১ শতাংশ, চায়না শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ (সিএসআই) ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ।

সর্বশেষ - সকল নিউজ