logo
Wednesday , 17 January 2024
  1. সকল নিউজ

দেশকে অশান্ত রাখতে চায় বিএনপি

প্রতিবেদক
admin
January 17, 2024 9:35 am

বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলোর বর্জনের মধ্যেই গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত নতুন মন্ত্রিসভা দায়িত্বও নিয়েছে। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে নানা কর্মসূচি পালন করে আসা বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন পর্যন্ত হরতাল পালন করলেও নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত এ জাতীয় কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করেনি। তারপরেও নির্বাচনের আগে কয়েক মাসের সহিংস ঘটনাবলী ও পরিস্থিতির পর নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কতটা এসেছে এখনো সেই প্রশ্ন আলোচনায় আসছে। তবে বিএনপি নেতাদের ভাষ্য অনুসরণ করলেই স্পষ্ট বোঝা যায়, নিজেদের স্বার্থেই আগামী কয়েক মাস বাংলাদেশকে অশান্ত রাখতে চায় দলটি।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘সরকার আরও একটি ইলেকশন ক্রাইম করায় তাদের নিরাপদ প্রস্থানের পথ সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।’

আন্দোলনের মুখেই তাদের পতন ঘটানোর আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নতুন সরকার দেশি-বিদেশি চাপ অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে। তার অভিযোগ দেশের ‘অর্থনীতিকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে’। সবমিলিয়ে আপাতত দৃশ্যমান রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সরকারের সামনে না থাকলেও এতে করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এসেছে কি-না বা আসার ইঙ্গিত মিলছে কি-না সেই প্রশ্নও এখন বড় হয়ে উঠছে।

নির্বাচনের পর সরকার গঠনের কাজ শেষ করলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা নির্বাচনকে গ্রহণ করেনি। এখন তারা কী করে সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে সরকার।

শপথ গ্রহণের পর রোববার প্রথম সচিবালয়ে অফিস করেছেন নতুন সরকারের মন্ত্রীরা। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি তারা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছেন। এখন আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে সরকার দেশি-বিদেশি সব চাপ অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে।

এর আগে নির্বাচনের পর থেকেই ওবায়দুল কাদেরসহ সিনিয়র নেতারা বারবারই বলেছেন যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে ‘অর্থনৈতিক সংকটে’র প্রসঙ্গটি কীভাবে মোকাবেলা হবে তা নিয়ে দলের ভেতরে বাইরে উদ্বেগ আছে।

এদিকে কয়েক দফা ক্ষমতায় থাকা বিএনপি কেন পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন পেয়েও চূড়ান্ত কূটনৈতিক বিজয় আনার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারল না-সেই প্রশ্ন এসেছে জোটসঙ্গীদের দিক থেকে।

বিএনপি নেতারা অবশ্য বলছেন, ভারতের কারণেই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার মতো পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত তৈরি করা যায়নি, তবে নির্বাচনকে যে প্রকাশ্যে পশ্চিমারা গ্রহণ করেনি সেটিকে তারা সাফল্যই মনে করছেন। এখন সরকার গঠন হয়ে যাওয়ায় দলটির নেতারা মনে করছেন, স্বাভাবিক রাজনৈতিক ধারায় ফিরে আসাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জেলে থাকা অসংখ্য নেতাকর্মীর মুক্তিই এখন আপাতত প্রাধান্য পাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের নেতারা। আর তাই আগামী কয়েক মাস মাঠ গরম রাখার নির্দেশ এসেছে লণ্ডন থেকে।

এ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের নেতা যেহেতু লণ্ডনে থাকেন সেহেতু সেখান থেকেই দলের নির্দেশনা আসবে এটা স্বাভাবিক বিষয়। এ নিয়ে এত কথার তো কিছু নেই। আর বিদেশি বন্ধুতের সহযোগিতা ছাড়া বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে ক্ষমতায় আসা যায় না, এটাই বাস্তবতা। যেমন- আওয়ামী লীগ ভারতের পরম সহযোগিতায় ক্ষমতায় বসে আছে বলেই আমরা মনে করি। মূলত জনগণের আন্দোলনে সরকারের পতন হবে, এমনটা আপনি শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারবেন না। সরকার পতন করতে হলে বিদেশি চাপ অবশ্যই দরকার। ঠিক তেমনি টিকে থাকতে হলেও বিদেশি শক্তির আশীর্বাদও দরকার। আর তাই মাঠ গরম না রাখলে আমরাও দল হিসেবে আমাদের বন্ধু দেশগুলোর কাছে মূল্যায়ন হারিয়ে ফেলবো।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বিরোধী দলের বিরোধিতা অতিক্রম করে আপাতত সরকার নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে পারলেও তা স্থিতিশীলতায় রূপ দেওয়া যাবে কি-না সেটা বুঝতে আরও সময় লাগবে। সরকার যেভাবে এগুচ্ছে সেটিও দেখতে হবে। বিরোধী মত ও দলগুলোর কার্যক্রম কতটা সহিংস হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত মাঠ আমরা ছাড়ছি না। সহজে তো অবশ্যই না। শান্ত ভাবে কখনো কোনো আন্দোলন সফল হয় না। এই বাস্তবতা তো মানতেই হবে। আর আমি এতটুকু বলতে পারি যে, হয়তো কিছুদিন গেলে বোঝা যাবে সত্যিকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশে ফিরে আসে কি-না।

সর্বশেষ - সকল নিউজ