logo
Wednesday , 20 September 2023
  1. সকল নিউজ

আগামী ৫ অক্টোবর ইউরেনিয়াম হাতে পাবে বাংলাদেশ

প্রতিবেদক
admin
September 20, 2023 9:46 am

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ধাপ সম্পন্ন হবে আগামী ৫ অক্টোবর। এ দিন বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের (ইউনিট-১) ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবে রাশিয়া। ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্ত হবেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। উপস্থিত থাকার কথা আছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানোর।

ইউরেনিয়াম হলো বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জ্বালানি। প্রকল্প বাস্তবায়নে এটাই চূড়ান্ত ধাপ। ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের পর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলবে বছরজুড়ে। প্রথম ইউনিট থেকে গ্রিডে চূড়ান্তভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ হতে পারে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে। বিলম্বের কারণ হলো, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আধুনিক গ্রিড লাইন নির্মাণের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটা এখনো বেশ পিছিয়ে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘৫ অক্টোবর ইউরোনিয়াম হস্তান্তর হবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। দীর্ঘ চেষ্টায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে। এটা দেশের বিরাট অর্জন।তিনি বলেন, ‘ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ড ভ্লাদিমির  পুতিন থাকবেন ভার্চুয়ালি।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আইএইএ মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর বলেন, ‘কিছু বিষয় আছে, যেগুলোতে রাশিয়ার অনুমোদন লাগবে। আমরা এ ধরনের বিষয় তাদের কাছে পাঠিয়েছি। আজ-কালের মধ্যে এটা হয়ে আসবে। আশা করছি, শিগগিরই ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানটি হবে। সম্ভবত ৫ তারিখে অনুষ্ঠানটি করতে পারব।’

কোনো দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) পৌঁছালে তখন দেশটি আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে অন্তর্ভুক্ত হয়। সে হিসেবে অক্টোবরে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ জ্বালানি আমদানি খুবই স্পর্শকাতর। পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য আইএইএর অনুমোদন ও লাইসেন্স বাধ্যতামূলক। রাশিয়ার রপ্তানি নীতির আলোকে অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। রাশিয়া থেকে দেশে আনা এবং প্রকল্প এলাকায় নেওয়ার সময় জ্বালানির কঠোর নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের প্রশিক্ষিত সদস্যরা।

এই জ্বালানি সরবরাহ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টিভিইএল। এর আগে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও টিভিইএলের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি হয়। এই বিশেষায়িত জ্বালানি ‘রড’ রাশিয়ায় উৎপাদন হবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ‘ভিভিইআর ১২০০’ মডেলের। এই মডেলের কেন্দ্র রাশিয়ার বাইরে বাংলাদেশেই প্রথম নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কেন্দ্রে দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ১২০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি গত ডিসেম্বরে উৎপাদনে আসার কথা ছিল। দ্বিতীয় ইউনিটটি চলতি বছর উৎপাদনে আসার কথা। কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভির বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির কাজ পেয়েছিল জার্মানির ‘সিমেন্স এজি’। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের দিকে ছিল। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে কাজের গতি কমে যায়।

অন্যদিকে গ্রিড লাইন নির্মাণের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রিড লাইন ও সাবস্টেশন নির্মাণের কাজ এগোতে পারেনি। তবে এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। আশা করছি, গ্রিড লাইন সময়মতো হবে। গ্রিড লাইন নির্মাণ সম্পূর্ণ না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা যাবে না।’

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (রসাটম) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়ন করছে। আর্থিক অঙ্কে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প এটি। প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের ৯০ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া।

সর্বশেষ - সকল নিউজ