ঠিকই চলছিলো গণঅধিকার পরিষদ। আসছিলো বিদেশ থেকে অনুদানও। যা ভাগবাটোয়ারা করে খাচ্ছিলো নুর-রেজা কিবরিয়া-রাশেদ-তারেকসহ গণঅধিকার পরিষদের অন্যান্য সদস্যরা। এর ফাঁকে দলকে না জানিয়ে টাকার লোভে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করে বসেন নুরুল হক নুর। এতেই ঘটে বিপত্তি। সাফাদির থেকে পাওয়া ৪০০ কোটি টাকার ভাগ গেলো কই?
গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এমন বিষয় আগে কখনো ঘটেনি। প্রবাসীদের টাকায় চলা দলটিতে প্রথম দিকে সামঞ্জস্যতা ছিলো। টাকার ভাগ সমান সমান হতো। কিন্তু নুরের পারসোনাল একাউন্টে যেসব টাকা আসতো, সে টাকার হদিস কারো জানা ছিলো না। তার একাউন্টে টাকা আসলে দল জানবে না কেনো? দলের কি এ বিষয়ে জানার কোনো অধিকার নেই? এ নিয়ে যখন প্রশ্ন তুলি, তখনই ঘটে বিপত্তি। টাকার হিসাব চাওয়া কি আমার অপরাধ?
রেজা কিবরিয়া বলেন, আমার কাছে দলই মুখ্য, টাকা নয়। নুর প্রবাসে কমিটি গঠনের ব্যাপারে নিজেকে প্রধান উপদেষ্টা বানিয়ে অনুমোদন দিয়েছেন। অথচ দলের প্রধান হিসেবে আমাকে ওই পদ দেওয়ার কথা। আমাকে প্রধান করলে, আমি টাকার সুষ্ঠু বণ্টন করতে পারতাম। আমি প্রধান না হওয়ায় দলের ফান্ডের কোনো সুষ্ঠু হিসাব নেই। কাউকে হিসাব-নিকাশ দিতে চান না নুর। আমি দলের প্রধান, কিন্তু আমাকে হিসাব-নিকাশ দেন না। হিসাব চাওয়ার পর, আমি শত্রু হয়ে যাই।
এছাড়া ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে তিনি যে বৈঠক করেছেন; এটি কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, কী কারণে, কেন ওই বৈঠক করলেন এবং বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন কেন? ইসরাইলের সঙ্গে আমাদের কী সম্পর্ক? তারা কি দলকে ক্ষমতায় নিয়ে যাবে? নাকি ভিপি নুর টাকা পেয়েছেন? অবশ্য যারা তাকে গাড়িতে করে নিয়ে গেছেন তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের পর ‘কালো একটি ব্যাগ’ নিয়ে তিনি গাড়িতে উঠেছেন। কালো ব্যাগ টাকা-পয়সা নিয়ে তিনি কী করেছেন? নিজের স্বাক্ষরে কেন করেছেন– জানি না। আবার ভারতসহ বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকের সঙ্গেও গোপন বৈঠক করেন নুর। অথচ দলের আহ্বায়ক তা জানেন না। এসব কারণে রেজা-নূরের মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। নুর যদি অর্থের সুষম বণ্টন করতেন, তবে রেজা-নুরের মধ্যকার সম্পর্কের এতো অবনতি হতো না বলেই মনে হচ্ছে।