logo
Sunday , 15 January 2023
  1. সকল নিউজ

জি এম কাদেরের নিষেধাজ্ঞা উঠবে কি না, জানা যাবে আজ

প্রতিবেদক
admin
January 15, 2023 9:38 am

চেয়ারম্যান হিসেবে দল পরিচালনা এবং দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে আদালতের ‘অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা’র আওতায় থাকা জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের টানা আড়াই মাস ধরে চুপচাপ। নিষেধাজ্ঞার কারণে গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে শুধু দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেই নয়, কার্যত রাজনীতিরই বাইরে রয়েছেন তিনি। দলের চেয়ারম্যান হিসেবে কোনো কার্যক্রমই করতে পারছেন না। এই বাধা কাটবে কি না, তা জানা যেতে পারে আজ রবিবার।

দল থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধার একটি মামলায় গত বছরের ৩০ অক্টোবর জি এম কাদেরের ওপর দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম-জেলা জজ মাসুদুল হক। নিষেধাজ্ঞা খারিজ চেয়ে জি এম কাদেরের করা আবেদন গত বছরের ১৬ নভেম্বর খারিজ করে দেয় একই আদালত। আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে জি এম কাদের জেলা জজ আদালতে মিস আপিল করেন। এর ওপর গত ৯ জানুয়ারি শুনানি শেষে আজ আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। এ কারণে জি এম কাদেরসহ জাপার নেতা-কর্মীদের আজ চোখ থাকছে আদালতের দিকে।

জি এম কাদেরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম গতকাল শনিবার ইত্তেফাককে জানান, ‘জিয়াউল হক মৃধা যে মামলাটি করেছেন, তা চলতে পারে না। কারণ, মামলা করার এখতিয়ারই তার নেই। মামলায় উনি (মৃধা) জি এম কাদেরকে স্বঘোষিত চেয়ারম্যান বলেছেন। অথচ সেই জি এম কাদেরই ওনাকে পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা করেছিলেন। এছাড়া মামলায় মৃধা সাহেব নিজেকে জাপার উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু জাপার উপদেষ্টা বলে এই পার্টিতে কোনো পদ নেই, রয়েছে চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা।’

জাপা সূত্রে জানা গেছে, দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরের যৌথ ‘ঐক্যবার্তায়’ নতুন করে আশা দেখছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। টানা প্রায় সাড়ে তিন মাস দলের অভ্যন্তরে চলা বিবাদের মধ্যে গত ৯ জানুয়ারি যুক্ত বিবৃতি দিয়ে ‘ঐক্যের বার্তা’ দেন রওশন ও জি এম কাদের। জাপার প্যাডে রওশন ও কাদের স্বাক্ষরিত ঐ যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘জাপায় বিভক্তির প্রশ্নই ওঠে না। বরং আমরা দুজনই ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের প্রয়াত নেতা এইচ এম এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাপাকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বদ্ধপরিকর।’ জাপার দায়িত্বশীল একাধিক নেতার মতে, জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলাকারী জিয়াউল হক মৃধা যেহেতু রওশনের অনুসারী, সে কারণে মৃধাও সবকিছু নতুন করে ভাবছেন।

জানা গেছে, ‘আগামী নির্বাচনে জাপা অংশ নেবে’—যুক্ত ঘোষণায় জি এম কাদেরের কাছ থেকে কৌশলে এমন অঙ্গীকার আদায় করে নিয়েছেন রওশন। ৯ জানুয়ারির ঐ যুক্ত ঘোষণায় রওশন ও কাদের দুই জনই বলেছেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিতব্য আগামী সংসদ নির্বাচনে জাপা অংশ নেবে।’ জাপার একাধিক নেতা জানান, জি এম কাদেরের কাছ থেকে এমন লিখিত ওয়াদা আদায় করতে পারায় আপাতত দৃশ্যমান একধরনের সমঝোতা হয়েছে দুই জনের মধ্যে। তবে এর স্থায়িত্ব নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত, নিম্ন আদালতে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় হাইকোর্টে যান জি এম কাদের। গত বছরের ২৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের দেওয়া অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে হাইকোর্ট। তবে জিয়াউল হক মৃধা পরদিনই আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে গেলে আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। সেটির ওপর পরে ফুলকোর্টে শুনানি শেষে জি এম কাদেরকে বিচারিক আদালতে যাওয়ার আদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

দলের সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধাকে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর মৃধা গত বছরের ৪ অক্টোবর জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে অবৈধ ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। একই মামলায় দল থেকে মৃধার বহিষ্কারাদেশকে বেআইনি ঘোষণা এবং দলীয় গঠনতন্ত্রের ২০-এর উপধারা ১(১) অবৈধ ঘোষণা চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, একই আদালতে দায়ের করা মসিউর রহমান রাঙ্গার মামলায় গত বছরের ৮ নভেম্বর জি এম কাদেরকে কারণ দর্শাতে বলেছেন যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হক। এ মামলায়ও দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জি এম কাদেরের ওপর কেন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে না, সে ব্যাপারে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। জানা গেছে, এই মামলায় ইতিমধ্যে আপত্তি দাখিল করেছেন জি এম কাদের। আপত্তির ওপর ইতিমধ্যে শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ১৯ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। গত বছরের ২৩ অক্টোবর মামলাটি করেন রাঙ্গা।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত