আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার আশঙ্কা করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আর ১৪ মাস পরে নির্বাচন। এখন নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি অশুভ চক্র আছে। যারা হিন্দুদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ভারত সরকারকে জানিয়ে দিতে চায়- এ কাজটা আওয়ামী লীগ করেছে। আওয়ামী লীগের হাতে মাইনরিটি নিরাপদ নয়- এই মেসেজ দিতে চায়। এদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
রবিবার (২ অক্টোবর) সকালে রামকৃষ্ণ মিশনের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, শেখ হাসিনার সরকার একাধারে ১৩ বছর ক্ষমতার মঞ্চে আসীন আছে। এই ১৩ বছরে ১৩টি দুর্গাপূজা হয়েছে। এবার ৩২ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, এই ১৩ বছরে মাত্র একটি বার দুর্গাপূজা সহিংসতার টার্গেট হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার টার্গেট হয়েছে। দুর্বৃত্তদের টার্গেট হয়েছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের বাড়িঘর টার্গেট হয়েছে। মন্দির টার্গেট হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি দোকানপাটে পর্যন্ত হামলা হয়েছে। হামলা হয়েছে, উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বলতে চাই একাধারে ১১টি দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে হয়েছে। কোনও শান্তি বিনষ্ট হয়নি। কিন্তু গতবার দুর্ভাগ্যজনক কিছু ঘটনা ঘটে গেছে।
গতবার দুর্গাপূজায় হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, ১১ বছর যখন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, তাতে এবারও শান্তিপূর্ণ হবে- এরকম চিন্তাভাবনা থেকে সতর্কতার কিছুটা অভাব ছিল। কোথাও কোথাও রাজনৈতিকভাবে আমরা অসতর্ক ছিলাম এ কথা সত্য। চৌমুহনীতে ছিল ভয়াবহ অবস্থা। একাত্তরের বর্বরতাকেও হার মানায়। চৌমুহনীতে যা ঘটেছে, কুমিল্লায় যা ঘটেছে, রংপুরে যা ঘটেছে!
তিনি নির্বাচনের প্রার্থীদের উদ্দেশ করে বলেন, ভোটে হিন্দুদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইতে যান। নিজেদের বিপদ মনে করে ভোট প্রার্থী হন। কিন্তু হিন্দুরা যখন বিপদে পড়ে তখন কোথায় থাকেন? আমি সে কথা এবারও বলছি।
মন্ত্রী বলেন, দুর্গাপূজাটা যাতে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে মণ্ডপ পরিদর্শনে এসেছি। কিছু কথা বলছি একারণে, হিন্দু ভাইবোনেরা আপনারা ভয় পাবেন না। আতঙ্কিত হবেন না। এবার আমরা প্রস্তুত। আশা করি দুর্বৃত্তরা, যারা আপনাদের ওপর হামলা চালায়। তারা কোনও দলের নয়। তারা দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তরা যে দলেরই হোক, তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। বিচার না হলে প্রশ্রয় পাবে। তাদের ব্যাপারে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আজ পূজা কমিটি আমাকে বলেছে বিচার হয় না। কেন বিচার হবে না? বাংলাদেশের সব অপরাধীদের বিচার শেখ হাসিনা করেছেন। এমনকি নিজের দলের লোকেরাও রেহাই পায়নি। যারা হিন্দুদের বাড়িঘরে, মণ্ডপে হামলা করে, যে পরিচয়ই হোক এই দুর্বৃত্তদের ক্ষমা নেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রাখতে এদের বিচারের সম্মুখিন হতে হবে। আমি দেশের বিরোধী যারা আছে, তাদেরও এ বিষয়ে আহ্বান জানাব।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।