logo
Sunday , 11 December 2022
  1. সকল নিউজ

বিদ্যুৎ,পানি ও তেল ব্যবহারে সবাই সাশ্রয়ী হোন : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেদক
admin
December 11, 2022 11:31 am

বিদ্যুৎ, পানি, তেল ব্যবহারে সবাই সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে যেখানে যতটুকু জায়গা আছে উৎপাদন করার আহ্বান জানান তিনি।

গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বেগম রোকেয়া দিবস-২০২২’ ও ‘বেগম রোকেয়া পদক-২০২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যেকটা মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু আমাদের দেশ নয়, উন্নত দেশগুলো আরও খারাপ অবস্থায় আছে।’

সে জন্য ‘যার যেখানে যতটুকু জায়গা আছে সেখানে যে যা পারেন উৎপাদন করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ,পানি, তেল ব্যবহারে সবাই সাশ্রয়ী হোন। সবাই সঞ্চয়ী হোন এই আন্তর্জাতিক বিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা এসেছে সেই ধাক্কা যেন আমাদের দেশে আসতে না পারে। আমাদের নিজেদেরকেই নিজেদের সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। যেটা আমরা ইতোমধ্যেই নিয়েছি।’

‘মাঝে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মানুষের কিছু কষ্ট হচ্ছে এবং এটা আন্তর্জাতিক একটা অবস্থার কারণে হয়েছে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের উৎপাদন ঠিক রাখি, নিজেদেরটা নিজেরা করব। কারো কাছে হাত পেতে চলব না, ভিক্ষা করে চলব না।’

‘যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময় জাতির পিতা বলেছিলেন, তার মাটি ও মানুষ আছে তা দিয়েই তিনি দেশকে গড়ে তুলবেন’, সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই চিন্তা থেকেও আমরা যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি, সবাই যদি একটু মিতব্যয়ী হই, সাশ্রয়ী হই ইনশাল্লাহ মন্দা আমাদেরকে গ্রাস করতে পাবে না। আন্তর্জাতিকভাবে অনেক উন্নত দেশ এখন নিজেদেরকে অর্থনৈতিক মন্দার দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশ আল্লাহর রহমতে এখনো দেয়নি, দেয়া লাগবে না বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ, আমরা নিজেরাই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে চলবো, এগিয়ে যাব। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে নারী সমাজ।’

অনুষ্ঠানে ‘নারী জাগরণের মধ্যেই সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণে বাংলাদেশকে একটি উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে’ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। নারী জাগরণের মধ্য দিয়েই ১৯৪১ সাল নাগাদ সেই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য ডেল্টা প্ল্যানও করেদিলাম, যাকে ভিত্তি করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের নারীদের শিক্ষা, নারীদের জাগরণ, নারীদের যতটুকু অর্জন এর পেছনে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে। ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। তিনি যদি সেই অচলায়তন ভেঙে নিজে শিক্ষা গ্রহণ করে মেয়েদের শিক্ষার ব্যবস্থা না করতেন, তাহলে আমরা আজকে যে যেখানে আছি, কেউ থাকতে পারতাম না।’

‘বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ছিল মেয়েরা জজ-ম্যাজিস্ট্রেট হবে। নারীরা সমস্ত দায়িত্ব নেবে। তিনি যে আকাঙ্খা করেছিলেন আমরা কিন্তু ধীরে ধীরে তা অর্জনের পথে।’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

‘নারীরা যারা বাইরে কাজ না করে শুধু সংসারে কাজ করে সেখানেও কিন্তু অনেক কাজ। এটাও তাদের কর্মক্ষেত্রে শ্রম হিসেবে বিবেচনা করতে হবে’ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে গবেষণা করেন, মেয়েরা কোথায় কোথায় কাজ করছে। এই জায়গায় যেখানে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়, সেই জায়গাকে কর্মক্ষেত্র হিসেবে গ্রহণ করা হয় না। আমার মনে হয়, এটা ঠিক নয়।’

প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় লিঙ্গ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এরা তো কোনো অপরাধ করেনি! এরা তো বাবা-মায়েরই সন্তান। বাবা-মাকে ফেলে দিয়ে তাদের রাস্তায় চলে যেতে হবে কেন? তাদের কোন জীবন-জীবিকার কিছু থাকবে না-এটাতো হতে পারে না। শুধু নারী অধিকার-নারী অধিকার বলে অনেকে আন্দোলন সংগ্রাম করছেন। কখনো এই শ্রেণির কথা কেউ চিন্তা করেন নি। আমরা সংবিধানে তাদের স্বীকৃতি দিয়েছি। তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকবে, লেখাপড়া শিখবে, চাকরি পাবে, কাজ-প্রশিক্ষণ পাবে, একটা সুস্থ জীবন তারা পাবে। প্রতিটি ফরমে নারী-পুরুষের সঙ্গে থার্ড জেন্ডার আমরা লাগিয়ে দিয়েছি।’

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল।

পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে ড. আফরোজা পারভীন নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন।

সর্বশেষ - সকল নিউজ