বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চীনের সহযোগিতা বানচাল করতেই ‘ঋণের ফাঁদের’ গল্প প্রচার করা হচ্ছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন গত সোমবার ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
সম্প্রতি লন্ডনের ফিন্যানশিয়াল টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল চীনের ঋণের ফাঁদ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। এরপর অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি ব্যাখ্যা ফিন্যানশিয়াল টাইমস প্রকাশ করে।
সেখানে বলা হয়, অর্থমন্ত্রীর অন্য দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে দুইবার চিন্তা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন, কিন্তু তিনি চীন সম্পর্কে কিছু বলেননি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে ফিন্যানশিয়াল টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ব্যাখ্যার বিষয়ে একজন সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা নিয়ে ব্যাখ্যা আমি দেখেছি। আমরা সব সময় বলি, শব্দের চেয়ে তথ্য-উপাত্তই বেশি জোরালো। আর সত্য সব সময় টিকে থাকবে। ’
ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, “আমি আবারও জোর দিতে চাই, বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীন সব সময় অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে। যখন ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড (বিআরআই)’ সহযোগিতার কথা আসে, তখন আমরা সব সময় আলোচনা ও একসঙ্গে কাজ করি এবং একসঙ্গে লাভবান হই। ’
চীনা মুখপাত্র বলেন, বছরের পর বছর ধরে উন্নয়নশীল দেশগুলোর চাহিদার আলোকে, অবকাঠামো এবং জনগণের কল্যাণে তাদের প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে চীন যথেষ্ট পরিমাণে কম সুদের হার এবং দীর্ঘমেয়াদি ছাড়ে ঋণ দিয়েছে।
চীনা মুখপাত্র আরো বলেন, গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ঋণ বুলেটিন অনুযায়ী, ২০২১ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ছিল তার মোট বৈদেশিক ঋণের ৫৯ শতাংশ। সেখানে চীনের ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৭ শতাংশ।
ফিন্যানশিয়াল টাইমসকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশ উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশে চীনের দেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় চার কোটি ডলার। এটি বাংলাদেশের ৪১৬ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি এবং ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণের তুলনায় সামান্য।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গণমাধ্যমকে নিরপেক্ষতা, ন্যায্যতা, সত্যবাদিতা ও নির্ভুল তথ্য দেওয়ার নীতিকে সমুন্নত রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন।