logo
Saturday , 25 February 2023
  1. সকল নিউজ

দুই যুগ ধরে উপকূলের মানুষকে সুপেয় পানি পৌঁছে দিচ্ছেন ‘পানির ফেরিওয়ালা’ নূপুর

প্রতিবেদক
admin
February 25, 2023 12:07 pm

এমনিতেই কয়রা উপজেলায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট আছে। এক কলসি পানযোগ্য পানি আনতে ছুটতে হয় মাইলের পর মাইল। নূপুর খাতুন ভাবলেন বাড়ি বাড়ি পানি পৌঁছে দেওয়ার কথা। ভাবনা থেকেই শুরু করলেন কয়রা উপজেলার আমাদী এলাকায় পানি বিক্রির কাজ।

নূপুর খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে আমাদী গ্রামের একটি পুকুর থেকে পানি নিয়ে কলসিপ্রতি এক টাকা দরে বিভিন্ন দোকানে ও বাড়িতে দিতাম। তবে এখন আর পুকুরের পানি মানুষ নিতে চায় না। তাই কয়রার মসজিদকুঁড় সেতুসংলগ্ন একটি সাপ্লাই পানির কারখানা থেকে পানি নিয়ে ভ্যানে করে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছি। কত রোদ, বৃষ্টি, ঝড় আমার মাথার ওপর দিয়ে যায়। তারপরও দিনে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হচ্ছে। পানি পৌঁছে দিলে প্রতি কলসি পানিতে মানুষ তিন টাকা করে দেয়। এ ছাড়া স্বামী বশির সরদারও গ্রামে গ্রামে ফেরি করে হলুদ বিক্রি করে কিছু আয় করেন।’

কথা না থামিয়ে নূপুর খাতুন বলতে থাকেন, ‘হাত–পা আছে, তাই খেটে খাচ্ছি, সব জিনিসের যেভাবে দাম বাড়ছে, তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিন ভ্যানগাড়িতে কলসি ভরে পানি বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোরকমে দুমুঠো ভাত খাচ্ছি। কত কষ্ট করে জীবন যাপন করি, তা কাউকে বলে বোঝাতে পারব না। মাঝেমধ্যে না খেয়েও থাকতে হয়। এতিম মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম। তার কপালেও সুখ জুটল না। তিন বছরের একটি ছেলেসহ তাকে ফেলে রেখে জামাই চলে গেছে।’

প্রায় ২৪ বছর ধরে পানি বিক্রির কাজ করছেন বলে জানান নূপুর খাতুন। তিনি বলেন, ‘মানুষের ছুটিছাটা আছে। আমার ঈদেও রেস্ট নাই। প্রতিদিন ভোররাতে উঠে একটি দোকানে ১০-১২ কেজি পেঁয়াজ কেটে দিই। সেখান থেকে মাসে ১ হাজার ১০০ টাকা আয় হয়। আর দিনের বেলায় পানির ভ্যান চালাই।’ তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাঁকে বড্ড অস্বস্তিতে ফেলেছে বলে জানান তিনি।

কয়রা উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রেশমা আক্তার বলেন, নূপুরের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।

সর্বশেষ - সকল নিউজ