logo
Tuesday , 9 April 2024
  1. সকল নিউজ

একীভূত হচ্ছে আরও দুই ব্যাংক, আজ চুক্তি সই

প্রতিবেদক
admin
April 9, 2024 9:47 am

দুর্বল আরও দুটি ব্যাংক তুলনামূলক সবল দুই ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে উচ্চ খেলাপি ঋণের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) যাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) যাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে। একীভূতকরণ নিয়ে এই চার ব্যাংকের মধ্যে আজ সোমবার চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে। এর বাইরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাচ্ছে বেসিক ব্যাংক। ঈদের পরই ব্যাংক দুটির মধ্যে একীভূতকরণ চুক্তি হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এরপরই একীভূতকরণের আলোচনায় রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, এবি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক এবং বিদেশ ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। এভাবে একীভূতকরণের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ব্যাংকের সংখ্যা ৪৪টি করা হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে চার ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (বিডিবিএল সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) সঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের একীভূত করণের বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়। এর আগে বেসরকারি খাতের শরিয়াভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে নাজুক পদ্মা ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ দুই ব্যাংকের আদলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আজ সোমবার চার ব্যাংকের চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকও একীভূত হচ্ছে। ব্যাংকটি নিয়ে আলোচনা রয়েছে।

অগ্রণী ব্যাংকের সঙ্গে বেসিককে একীভূত করা হতে পারে। ঈদের পরই ব্যাংক দুটির মধ্যে একীভূতকরণ চুক্তি হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে এসব খারাপ ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে এ খাত-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংক সংবাদ সম্মেলনে সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে একীভূতকরণের পরামর্শ দিয়েছে। জোরপূর্বক একীভূতকরণ না করার কথা বলেছে সংস্থাটি। এই তিন ব্যাংকের একীভূতকরণের পর আলোচনায় রয়েছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল, এবি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামিক এবং বিদেশী ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। এভাবে একীভূতকরণের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ব্যাংকের সংখ্যা ৪৪টি করা হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। একের পর এক ব্যাংক একীভূত হওয়ার খবরে আমানত নিয়ে এমনই দুশ্চিন্তায় আছেন ওই সব ব্যাংকের অনেক গ্রাহক। পদ্মা ব্যাংকের মতিঝিল শাখার গ্রাহক ফাতিমা তুজ জোহরা বলেন, ‘এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরে গ্রাহক হিসেবে উদ্বিগ্ন হয়ে ৫ লাখ টাকা তুলে ফেলছি। এটা আর কোনো বেসরকারি ব্যাংকে রাখব না।’ পদ্মা ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, একীভূত কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আতঙ্ক বেড়েছে আমানতকারীদের। সে জন্য পদ্মা ব্যাংকের টাকা অস্বাভাবিকভাবে তুলছেন গ্রাহকেরা। গ্রাহকরা যখন তাঁর আমানত নিয়ে দুশ্চিন্তায়, তখন ব্যাংকের কর্মীরা উদ্বেগে আছেন তাঁদের চাকরি নিয়ে। একীভূত হওয়ার পর দুর্বল ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের চাকরি যে থাকবে না, একীভূতকরণের নীতিমালাতেই তা উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এর বাইরে অন্য কর্মীদের তিন বছরের মধ্যে ছাঁটাই না করার নিশ্চয়তাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরও কর্মীদের উদ্বেগ কাটছে না। তাঁদের আশঙ্কা, এই মুহূর্তে চাকরি না গেলেও তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ পদে পদায়ন এবং ঋণ আদায় ও আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে চাপে ফেলা হতে পারে। বিডিবিএল ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সরকারি ব্যাংকও একীভূত হতে পারে, তা চিন্তার বাইরে ছিল। সোনালী ব্যাংকের তো কাজ করাই কঠিন হয়ে পড়বে। আবার কোথায় পদায়ন করেÑ এ নিয়েও ভয় কাজ করছে।’ এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, ‘ব্যাংক একীভূত করার সময় যাতে কর্মচারীদের গণহারে ছাঁটাই করা না হয়, সে জন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক রোডম্যাপে সুরক্ষা ব্যবস্থা রেখেছে। এর পরও কারও অন্যায় পেলে তো ব্যবস্থা নেবে।’

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতকারীদের সুরক্ষা দিতে পারলেও কর্মী ছাঁটাইয়ের শঙ্কা থাকবে। কারণ, একই এলাকায় দুই ব্যাংকের দুটি শাখা থাকলে সেখানে একটি শাখা কমানো হবে। তখন ওই শাখার কর্মীরা কোথায় যাবেন? শুধু শাখা পর্যায়ে নয়, ব্যাংকের ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি হারাতে পারেন।’চাকরি হারাবেন এমডি-ডিএমডিরা ॥ নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, একীভূত হওয়া দুর্বল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) চাকরি হারাবেন। এ ছাড়া একীভূত হওয়া দুই ব্যাংকের মধ্যে খারাপ অবস্থায় থাকা ব্যাংকের পরিচালক আগামী ৫ বছর অন্য কোনো ব্যাংকে পরিচালক হতে পারবেন না। তবে পাঁচ বছর পর আবার একীভূত হওয়া ব্যাংকের পর্ষদে ফিরতে পারবেন। যদিও এক্ষেত্রে তাদের কিছু শর্ত মানতে হবে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, এ বিধানের মাধ্যমে সেসব পরিচালককে এক ধরনের দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যাদের কারণে ব্যাংক খারাপ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পাঁচ বছর বিরতির পর তাদের আবার পর্ষদে ফেরার বন্দোবস্ত রাখা হলো।

বাধ্যতামূলক একীভূতকরণ ॥ নীতিমালার আলোকে, খারাপ অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলো নিজ থেকে একীভূত না হলে বাধ্যতামূলকভাবে একীভূতকরণ করা হবে। এক্ষেত্রে দুই ব্যাংক এক করার আগেই নগদে পাওনা পরিশোধ করা হবে। একীভূতকরণের আগে দুই ব্যাংকের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে হবে। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে সর্বশেষ আদালতের কাছে একীভূতকরণের আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব ব্যাংক নিজ থেকে একীভূত হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাদের বিভিন্ন নীতি সহায়তা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সিআরআর, এসএলআর সংরক্ষণে ছাড় দেয়া হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণভাবে একটি ব্যাংকের ৪ শতাংশ হারে নগদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হয়। এখন ৫০ হাজার কোটি টাকার একটি ব্যাংকের হয়তো ১ শতাংশ সিআরআর ছাড় দেওয়া হলো। এতে ওই ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকা ছাড় পেল। এ পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে ব্যাংকটি ভালো করতে পারবে।

নীতিমালা জারির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সার্কুলারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন এবং মধ্যস্থতায় একটি ব্যাংক অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে পারে। সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনে দ্রুত সংশোধনমূলক ব্যবস্থা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, বিদেশী ব্যাংকের শাখাও একীভূত করা যাবে। তবে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যাংক একীভূত হবে না।

একীভূতকরণ নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সতর্কতা ॥ এদিকে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে এ খাত-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সব ধরনের নিয়ম-নীতি মেনে একীভূতকরণের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। জোরপূর্বক একীভূতকরণ না করার কথা বলেছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক বলেছে, ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মেনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা দরকার। এমনকি ব্যাংক খাতে সংস্কারে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে বলেও জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

যেভাবে বাধ্যতামূলক একীভূত ॥ নীতিমালা অনুযায়ী, এক্ষেত্রে দুর্বলমানের চিহ্নিত হওয়া ব্যাংকগুলো মানোন্নয়নে ব্যর্থ হলে ওই ব্যাংকের পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ধরনের ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক দায় ও সম্পদ গ্রহণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করবে। এতে ওই ব্যাংকের বিস্তারিত আর্থিক তথ্য উল্লেখ থাকবে। এতে কেউ সাড়া না দিলে যে কোনো ব্যাংককে দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষা করা হবে। তারা দায়দেনার পাশাপাশি শেয়ার বিনিময় ও সুনামের (গুডউইল) হিসাব করবে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্কিম গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর একীভূত হওয়া কোম্পানি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

দুর্বল ব্যাংকের মূল্য নির্ধারণ ॥ একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মূল্য নির্ধারণ কীভাবে হবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি সিকিউরিটিজ ব্যতীত অন্যান্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মাসের শেষ তারিখের বাজার দরে মূল্যায়ন হবে। অন্যান্য সিকিউরিটিজ তাদের পূর্ববর্তী মাসের শেষ তারিখে বিদ্যমান অভিহিত মূল্য অথবা নগদায়নযোগ্য মূল্যে মূল্যায়ন করতে হবে। জমি/প্রাঙ্গণ ও অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ এবং দাবি পরিশোধের সূত্রে অর্জিত সম্পদ বাজারদরে মূল্যায়ন করতে হবে। আসবাব ও সরঞ্জামের দাম ঠিক হবে লিখিত মূল্যের ভিত্তিতে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত

সরকার দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রেখেছে: তথ্যমন্ত্রী

কাল থেকে ঈদযাত্রায় ট্রেনে ভ্রমণ শুরু

৯ সচিবের বিদেশ যাওয়ার প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ‘না’

চট্টগ্রাম মহানগরীতে বসছে গ্যাসের আরো এক লাখ প্রিপেইড মিটার

ফায়ার সার্ভিস অফিসে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ

বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই

দেশের রাজনীতি থেকে ভালো মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে: কাদের

যমুনা নদীর বুক চিড়ে ক্রমশ দৃশ্যমান হচ্ছে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র : রাশিয়া

আ’লীগ সরকারের উন্নয়ন দেখে বিএনপির মাথা নষ্ট হয়ে গেছে