বিএনপি প্রত্যাশা করেছিল যে নির্বাচনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে, বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেবে। ফলে সরকার আরেকটি নতুন নির্বাচন করতে বাধ্য হবে। এরকম একটি প্রত্যাশার জায়গা থেকে বিএনপি তাদের অবস্থানে অনড় ছিল। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।
বিএনপি মনে করেছিলো, আমেরিকা আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কিন্তু ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় অর্জনের পর পাশা পাল্টে গেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারে পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র; তাই দেখে হতাশা আর অস্তিত্ব সংকটে দীর্ঘশ্বাস ফেলছে দলটির নেতারা।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক জোরদারে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও উদ্যোগ নিচ্ছে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এ কথা জানান। এরপর থেকেই বিএনপিতে নেমে এসেছে হতাশার ছায়া।
ব্রিফিংয়ের প্রশ্নোত্তর পর্বে একজন সাংবাদিক সম্প্রতি বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতির কথা উল্লেখ করে জানতে চান একটি উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি সম্পর্ক জোরদারে কী করবে?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারি সম্পর্ক জোরদারে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ আছে। আমরা এই সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ নেওয়া অব্যাহত রাখব। আমরা আগেই বলেছি, গত বছর ছিল আমাদের সম্পর্কের বার্ষিকী (৫০তম)। বিশেষ করে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, নিরাপত্তা সহযোগিতার মতো যেখানে সহযোগিতার সুযোগ আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি, সেখানে উদ্যোগ নেওয়া অব্যাহত রেখেছি।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি দেশ ও দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা নষ্ট করতে চেয়েছিল তা বুঝতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনের আগে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস এবং বেনাপল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত হয়েছে, বিএনপি আগের মতোই আছে। তাই বিএনপিকে বয়কট করেছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারি সম্পর্ক জোরদারে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটি।