logo
Sunday , 21 January 2024
  1. সকল নিউজ

তারেক রহমানকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর পরামর্শ পশ্চিমাদের

প্রতিবেদক
admin
January 21, 2024 9:49 am

পশ্চিমা দেশগুলো এখন বিএনপির সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে। বিএনপির আন্দোলনের কৌশল কি, তারা ভবিষ্যতে কি করতে চায় ইত্যাদি বোঝার চেষ্টা করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিনিধি দল বিএনপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এছাড়াও অন্যান্য দেশের কূটনীতিকরাও বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র স্বীকার করেছেন, পশ্চিমা কূটনীতিকদের পরামর্শেই তারা আন্দোলনের কর্মসূচি থেকে বিরত আছে। তারা দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচন এবং নতুন সরকারের ব্যাপারে কি মনোভাব দেখায়? তারপর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বিএনপিকে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ দিয়েছে। এই পরামর্শগুলো না মানা হলে বিএনপির সঙ্গে সহযোগিতা এবং সমঝোতা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। এই পরামর্শগুলোর মধ্যে প্রধান পরামর্শ হলো তারেক জিয়াকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া।

বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুস্পষ্টভাবে বিএনপির একাধিক নেতাকে বলেছেন, যেহেতু তারেক জিয়া দেশে অবস্থান করছেন না, তিনি একাধিক মামলায় দণ্ডিত এ কারণে তার এই মুহূর্তে বিএনপির নেতৃত্বে থাকা উচিত নয়। কারণ বিএনপির নেতৃত্বে এমন একজন ব্যক্তি থাকা উচিত যিনি দেশে অবস্থান করছেন এবং চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। অবশ্য বিএনপির যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ করেছেন তারা কেউই এই প্রস্তাব মেনে নেননি। বরং তারা এখনও তারেক জিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বিএনপিকে দ্বিতীয় যে পরামর্শটা পশ্চিমা দেশগুলো দিয়েছে, তাতে তারা বলছে, কোন অবস্থাতেই সন্ত্রাস এবং সহিংসতার রাজনীতি বরদাস্ত করা হবে না। কোন অবস্থাতেই যেন ট্রেনে আগুন, বাসে অগ্নিসংযোগ জ্বালাও পোড়াও ইত্যাদি কর্মসূচি বিএনপি না করে। এ ধরনের কর্মসূচি যদি পালন করা হয় তাহলে বিএনপির আন্দোলনকে সমর্থন দেওয়ার কোন কারণ থাকবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো।

তৃতীয়ত, বিএনপিকে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চালু করার পরামর্শ দিয়েছে। দলের মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং গণতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করার ব্যাপারে জোর দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তারা জানতে চেয়েছে বিএনপিতে কীভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অসহযোগ আন্দোলন বা অন্যান্য আন্দোলনের কর্মসূচি বিএনপি কীভাবে গ্রহণ করল? এই প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির নেতারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এর একটি বড় কারণ হলো বিএনপির অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের সমস্যা। বিএনপি বিএনপিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে একক ব্যক্তির ইচ্ছায় এবং অন্য কারো মতামত ছাড়াই। এই বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো পছন্দ করছে না।

চতুর্থত, জামায়াতসহ উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদী দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক চিরতরে ছিন্ন করার পরামর্শ দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ কয়েকটি দেশ। তারা বলছে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল উগ্র মৌলবাদী এবং কট্টর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারে না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল যখন নির্বাচন নিয়ে ড. মঈন খান সহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছেন, তখন তারা সুস্পষ্ট ভাবে জানতে চেয়েছিলেন জামাতের সাথে বিএনপির সম্পর্ক কী? যদিও মঈন খান বলেছেন, জামাতের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু মঈন খানের এই ব্ক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। বরং তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির এখনও সুসম্পর্ক রয়েছে।

পঞ্চমত, রাজনৈতিক সমঝোতা এবং সংলাপের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিএনপিকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানতে চেয়েছিল সরকার যখন সমঝোতা বা সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল তখন তারা কেন সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তখন কেন তারা সমঝোতার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এর জবাবে মঈন খান তার মত করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন চায় এখনও আলাপ-আলোচনা হতে পারে এবং রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য আলাপ-আলোচনার জন্য কোন বিকল্প নাই। তবে বিএনপি এ ধরনের পরামর্শগুলো শুনবে কিনা সেটাই হলো এখন দেখার বিষয়।

সর্বশেষ - সকল নিউজ