প্রাণান্তর চেষ্টা করেও বিএনপির পদত্যাগী হেভিওয়েট নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে পারেনি বিএনপির হাইকমান্ড। দলটির একাধিক হেভিওয়েট নেতা দল থেকে বের হয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কেবল বিএনপির পদে থাকা নেতারা নন, অতীতে বহিষ্কার, পদচ্যুত অথবা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করা নেতারা বিদ্যমান সংবিধানের আলোকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। আর এই অপমান সহ্য করতে না পেরে দলটির সাবেক এসব নেতাদের বিতর্কিক করার যাবতীয় চেষ্টা করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর শেষ জীবনে এসে রাজনীতিতে ইউটার্ন নিয়েছেন। ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন তিনি। নৌকার প্রার্থিতা জমা দেওয়ার আগে তিনি বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছেন। বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়া ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ নির্বাচন করছেন কুমিল্লা-৫ আসন থেকে।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ একে একরামুজ্জামান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার নির্বাচনি আসন ব্রহ্মণবাড়িয়া-১। বিএনপি থেকে বেরিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন দলটির নির্বাহী সদস্য শাহ মো. আবু জাফর তার নির্বাচনি আসন ফরিদপুর-১। দলে বড় কোনো পদ না থাকলেও বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বগুড়ার রাজনীতিতে পরিচিত মুখ সাবেক চারবারের সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মোল্লা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তার নির্বাচনি আসন বগুড়া-৪।
গাজীপুর মহানগর বিএনপি নেতা ও বাসন থানা বিএনপির সহসভাপতি জব্বার সরকার, সাবেক ছাত্রনেতা ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মোজাফফর আহমেদ ও জাতীয়তবাদী আইনজীবী ফোরামের সহসভাপতি আব্দুল কাদির তালুকদার নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি থেকে বেরিয়ে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন।
এখানেই শেষ নয় বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সিলেট-৫ আসনে নির্বাচন করছেন। আর তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচন করছেন নারায়ণগঞ্জ-১ আসন থেকে।
এছাড়াও এসকল নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করছে বিএনপির লাখ খানেক নেতাকর্মী। এসব নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ দেখে অপমান,আত্মগ্লানিতে ভুগছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্র এখন এসব নেতাদের পেছনে লেগেছে। প্রতিশোধ গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যমসহ সব জায়গায় তাদের বিতর্কিত করতে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে দলটির সাইবার যোদ্ধাদের।
এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডিপফেকের মাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট ছবি এবং প্রোপাগান্ডা ভিডিও বানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে সাবেক বিএনপির এসব নেতাদের বিতর্কিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যা নিয়ে বিব্রত নয় বিএনপি থেকে বেরিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতারা। বরং তারা বলছেন, এই নোংরা রাজনীতির কারণেই বিএনপি থেকে বেরিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। কারণ, আমাদের স্থানীয় মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট আছে, তা পুরণ করতে হবে।
