logo
Thursday , 2 November 2023
  1. সকল নিউজ

টাকা পে স্মার্ট বাংলাদেশের একটি পদক্ষেপ : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেদক
admin
November 2, 2023 10:59 am

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে অর্থনীতির চাকা সচল থাকতো না। টাকা পে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলারই একটি পদক্ষেপ। এর ফলে পরনির্ভরশীল থাকতে হবে না।’আজ বুধবার ন্যাশনাল স্কিম টাকা পে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আজ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। এখন আমাদের ভবিষ্যৎ হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আজ আমরা যে কাজটা করতে যাচ্ছি সেটাও সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার একটি পদক্ষেপ। সেটাই আমরা মনে করি। কাজেই ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নাগরিকরা সব স্মার্ট নাগরিক হবে। আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা, আমাদের সরকারও হবে স্মার্ট। আমরা স্মার্ট গভমেন্ট গড়ে তুলব। আমাদের পুরো সমাজ ব্যবস্থাই হবে স্মার্ট। অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও স্বাধীন সার্বভৌম ব্যবস্থায় গড়ে তুলতে পারছি। আমাদের পরনির্ভরশীলতা কমে যাবে। কারণ, আমরা এখন যেসব কার্ড ব্যবহার করি সেগুলো বিদেশি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। সেখানে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রাও পে করতে হয়। এখন আর সেটা করা লাগবে না। আমাদের বিদেশি নির্ভরতাও হ্রাস পাবে। নিজস্ব নেটওয়ার্ক আমরা ব্যবহার করব, যাতে তথ্য কেউ না নিতে পারে। প্রতিটি মানুষের তথ্য যাতে সুরক্ষিত থাকে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ক্যাশলেস সোসাইটি করতে চাই। আজ যে ন্যাশনাল স্কিম টাকা পে অর্থাৎ ক্যাশলেস সোসাইটি করার যে পদক্ষেপ, এটা বাংলাদেশের জন্য একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতদিন আন্তর্জাতিক কোম্পানির মাধ্যমে কার্ড পরিচালনা হতো, অনেক খরচ হতো, অন্যের নিয়ন্ত্রণ থাকতো। এখন সব আমাদের দেশের মাধ্যমেই হবে। টাকা যেহেতু বাংলাদেশের। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে বাংলাদেশের। প্রায় সময় আন্তর্জাতিকভাবে বৈরি পরিবেশ হয়। সেক্ষেত্রে যেন আমাদের আর্থিক ব্যবস্থাটা সচল থাকে, সেজন্যও এই পদক্ষেপ।’

রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে কীভাবে ‘টাকা-পে’র সুবিধাটা সহজ করা যায়, সে ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রবাসীরা অনেক সময় বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন মুদ্রায় কামাই করে। তারা সেখান থেকে ডলার কিনে দেশে পাঠাতে হয়। ন্যাশনাল কার্ড স্কিমের মাধ্যমে তিনি যাতে ওই দেশের মুদ্রা সরাসরি টাকায় পাঠাতে পারেন সে ব্যবস্থা সহজ করতে হবে।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

‘টাকা পে’ কার্ড এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম লেনদেন করবে রাষ্ট্রায়ত্ব সোনালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি।

‘টাকা-পে’ কার্ডের মতো ভারতের রয়েছে ‘রুপি কার্ড’। একইভাবে শ্রীলঙ্কার ‘লঙ্কা-পে’, পাকিস্তানের ‘পাক-পে’, এবং মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবের ‘মাদা-কার্ড’ নামে নিজস্ব কার্ড রয়েছে। এবার ‘টাকা-পে’ চালুর মধ্য দিয়ে সেই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশও।

টাকা-পে কার্ড হল এক ধরনের ডেবিট কার্ড। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ব্যাংক ইস্যু করতে পারবে। নিয়ন্ত্রণ থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে। এই কার্ডের মাধ্যম প্রচলিত কার্ডের (ভিসা, মাস্টার) মতো লেনদেন করতে পারবেন গ্রাহকরা।

বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা খরচ করছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। আগামী ডিসেম্বরে ডুয়েল কারেন্সি বা দ্বৈত মুদ্রা ব্যবহারের সুবিধা যুক্ত হলে ‘টাকা-পে’ কার্ডের মাধ্যমে ভারতীয় মুদ্রা রুপিও ব্যবহার করতে পারবেন বাংলাদেশিরা।

দ্বিপক্ষীয় লেনদেন চালু করতে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক ইন্ডিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মাধ্যমে টাকা ও রুপি বিনিময় করতে ‘টাকা পে’ কার্ড ‘ডুয়েল কারেন্সি কার্ড’-এ পরিণত হবে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ