logo
Wednesday , 20 September 2023
  1. সকল নিউজ

মানবাধিকারের নামে কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে আদিলুর?

প্রতিবেদক
admin
September 20, 2023 9:47 am

যেকোনো মানবাধিকার সংস্থার প্রধান দায়িত্ব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে প্রকৃত সত্য তুলে ধরা। কিন্তু তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর প্রধান কাজই যেন অপপ্রচার চালানো। যার মূল নায়ক- আদিলুর রহমান খান।

সংগঠনটি ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়ার অভিযান নিয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিতর্কিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, শাপলা চত্বরে পুলিশের অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়। সেই সময় দেশের একটি শীর্ষ দৈনিক পত্রিকা ওই প্রতিবেদনকে ‘অর্ধসত্য ও পক্ষপাতমূলক’ বলে অভিহিত করে।

প্রকৃতপক্ষে ‘ইসলামের রক্ষক’ দাবি করা চট্টগ্রামভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের হাজার হাজার কর্মী সেদিন মতিঝিল শাপলা চত্বরে উন্মাদের মতো আচরণ করেছিল। নজিরবিহীন সহিংসতার পাশাপাশি তারা আগুন নিয়ে মরণ খেলায়ে মেতে উঠেছিল। অসংখ্য দোকান-পাট ও বইয়ের দোকানে তারা আগুন লাগিয়ে দেয়। ওইদিন রাতে এই উত্তেজিত জনতাকে অভিযান চালিয়ে সরিয়ে দেয় পুলিশ।

কিন্তু এ ঘটনায় সরকারকে ‘সহিংস’ ও হেফাজতে ইসলামকে ‘শান্তিপূর্ণ সংগঠন’ এবং এর কর্মীদের ‘মাসুম লোক’ হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে অধিকার। হেফাজতে ইসলাম পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করলেও সে কথা রিপোর্টে আনেনি সংগঠনটি।

এ ছাড়া ‘ইসলাম রক্ষা’র নামে যেভাবে ছোট ছোট শিশুকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে আসতে বাধ্য করা হয়েছিল, সে ব্যাপারেও কোনো উচ্চবাচ্য করেনি অধিকার। অথচ ছোট শিশুদের এভাবে কোনো সমাবেশে আসতে বাধ্য করা জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ ও বাংলাদেশের শিশু অধিকার আইন ২০১৩-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।

অধিকারের দাবি, সেদিন শাপলা চত্বরে পুলিশের অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছিল। কিন্তু এ দাবির পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করেনি তারা।

অথচ তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রস-চেকে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। অধিকারের তালিকায় মৃতদের যে ঠিকানা দেয়া হয়েছিল, সেই ঠিকানায় ১৯ জনের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। পাঁচজনের নাম দুইবার করে করে উল্লেখ করা হয়েছে। চারজন এখনও জীবিত রয়েছে। আর ছয়জন নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সহিংসতায় মারা গেছে। আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে।

তালিকার প্রথম নাম ছিল সিদ্দিকুর রহমান নামে এক ব্যক্তির। এই সিদ্দিকুর রহমান হেফাজত কর্মীদের হাতেই নিহত হয়েছিলেন। তিনি মূলত একটি বাসের চালক ছিলেন। যে বাস সেদিন পুলিশ জব্দ করেছিল। তালিকার ৫৭তম নাম ছিল কামাল উদ্দিন খানের। তিনি একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপক ছিলেন। ঘটনার রাতে তার মৃত্যু হয়েছিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।

আর যে ১৯ জনের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি তারা হলেন- নারায়ণগঞ্জের মাসুম বিল্লাহ (সিরিয়াল ১২), ময়মনসিংহের লুৎফর রহমান (সিরিয়াল ১৩), নারায়ণগঞ্জের মাওলানা মো. হাসান, নারায়ণগঞ্জের হাফেজ লোকমান (সিরিয়াল ২৯), নারায়ণগঞ্জের আল আমিন (সিরিয়াল ৩০), মুন্সীগঞ্জের মাওলানা জুবাইর (সিরিয়াল ৪৫), ডেমরার রাজিব (সিরিয়াল ৪৬), কুমিল্লার মাওলানা মতিউর রহমান (সিরিয়াল ৪৯), ডেমরার সাব্বির (সিরিয়াল ৫৪), ডেমরার তাহের (সিরিয়াল ৫৫), শরীয়তপুরের জালাল আহমেদ (সিরিয়াল ৬০) ও কুমিল্লার সিরাজুল ইসলাম (সিরিয়াল ৬১)।

এখান থেকেই পরিস্কার হয়- দেশবিরোধী শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নেই ধর্মের নামে সহিংসতা ছড়ানো হেফাজতের পক্ষে এই অপপ্রচার চালায় আদিলুর। আদিলুর ও এলানের বিচার শেষ করতে বিচার বিভাগের বহু বছর লেগেছে। এখন আদালতের রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নতুন করে মাঠে নেমেছে তারা।

সর্বশেষ - সকল নিউজ