logo
Tuesday , 13 June 2023
  1. সকল নিউজ

পশ্চিমাদের ফাঁদে বিএনপি, ষড়যন্ত্রের আভাস

প্রতিবেদক
admin
June 13, 2023 9:23 am

বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি এবং বিএনপির মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে বিএনপি সম্ভবত পশ্চিমা বিশ্ব এবং সুশীল সমাজের ফাঁদে পড়েছে। বিএনপিকে সুশীল সমাজ এবং পশ্চিমা বিশ্ব গুলো সামনে রেখেছে তাদেরকে ব্যবহার করছে একটি অনির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। বাংলাদেশে যতবার অনির্বাচিত সরকার এসেছিল ততোবারই রাজনৈতিক গোলযোগ এবং কোন্দলের কারণে এসেছিল।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তার বড় প্রমাণ। হরতাল, জ্বালাও-পোড়াও এবং পাল্টাপাল্টি সহিংসতা রাজনীতির স্থিরতাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে নিয়ে যায়। সেরকম প্রেক্ষাপটেই এক-এগোরো এসেছিল। এখন বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে। তারা এই আন্দোলনকে এক দফার আন্দোলনে রূপান্তরিত করবে এমন কথা বলা হচ্ছে।

জুলাই মাস থেকে বিএনপি তাদের আন্দোলনের গতি বাড়াবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু বিএনপির মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে যে, এই আন্দোলনের পরে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হবে সেই সরকারের ভূমিকা কি হবে? তারা কি করবে?

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল চেতনা ছিল নির্বাচনকালীন সরকার। একটি সরকার নির্বাচনের সময়ে রেফারি গিরি করবে যে সরকারটি নিরপেক্ষ। যাদের আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কারো প্রতি কোনো পক্ষপাত নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হওয়ার পর তারা তাদের অভিপ্রায় অনুযায়ী পশ্চিমা বিশ্ব এবং সুশীল সমাজের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। পশ্চিমা বিশ্ব এবং সুশীল সমাজ নির্বাচনে যাকে জয়ী করতে চায় তারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জয়ী হয়।

২০০৭ সালে এক-এগোরো তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুই বছর ক্ষমতায় ছিল। যদিও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংবিধানিক ম্যান্ডেট মাত্র ৯০ দিনের।

এখন প্রশ্ন হলো বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাইরে বিভিন্ন এজেন্ডা নিয়ে এসেছে। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পুনদ্ধারের কথা বিএনপির দাবির মধ্যে রয়েছে। তাহলে বিএনপির আন্দোলনের ফলে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাজ কি হবে? তারা কি রাষ্ট্রকাঠামো মেরামত করবে? তারা কি নির্বাচন মিশন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শুদ্ধি অভিযান করবে। আর এই অজুহাতে তারা গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠাবে? একটা দীর্ঘমেয়াদী অনির্বাচিত সরকার দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করবে? এই প্রশ্নগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক এবং সামনে আসছে।

যদি বিএনপি শর্ত দিয়ে নির্বাচনে যেত এবং একটি সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হতো তাহলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকত। যে বক্তব্যটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলছেন। কিন্তু সেই পথে না গিয়ে বিএনপি রাজনীতিকে অনির্বাচিত সরকার গঠনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এক ধরনের অনিশ্চিয়তার পরিস্থিতি তৈরি করছেন। এটি কি বিএনপি ইচ্ছাকৃতভাবে করছে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি এখন পশ্চিমাদের ফাঁদে পড়েছেন। পশ্চিমা দেশের ধারাবাহিক শক্তিশালী গণতন্ত্র চায় না। বরং তার বদলে একটি দুর্বল সরকার চায় যে দুর্বল সরকার পশ্চিমাদের সঙ্গে এক ধরনের আত্মসমর্পণ করবে এবং তাদের কথামত বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। আর এখানে এটি করার জন্য সুশীলদের কর্তৃত্ব অত্যন্ত জরুরী।

সুশীলরা সবসময় পশ্চিমা দেশগুলোর অনুগত হয় এবং পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে চায় সেভাবে দেশ পরিচালনা করতে আগ্রহী হয়। এই বাংলাদেশে পশ্চিমাদের এখন নানা রকম স্বার্থ জড়িত রয়েছে। ভূ-রাজনীতির জটিল-কঠিন মেরুকরণে বাংলাদেশ এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আর তাই পশ্চিমারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক রকমের কথাবার্তা বলছে। আসল লক্ষ্য তাদের বাংলাদেশকে তাদের কর্তৃত্বে আনা। আর সেটি আনার ক্ষেত্রেই কি বিএনপিকে তারা ব্যবহার করছে এই প্রশ্ন এখন সকলের?

সর্বশেষ - সকল নিউজ