logo
Monday , 13 February 2023
  1. সকল নিউজ

সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার আলামত

প্রতিবেদক
admin
February 13, 2023 9:20 am

ডাকাতির কাজে ব্যবহার হচ্ছে সন্দেহে কাফরুল থেকে ২০০২ সালের ৫ অক্টোবর একটি প্রাইভেটকার আটক করে থানা পুলিশ। গাড়িটির নম্বর- ঢাকা-মেট্রো-গ-১৪-২৫৮৫। আটকের পর কাফরুল থানা পুলিশ একটি ডাকাতি মামলা করে। মামলার পর নিয়ম অনুসারে আলামত হিসেবে প্রাইভেটকারটি পাঠানো হয় আদালতে। আলামত নম্বর এম আর ৭৮/০৯ (ডব্লিউ)। মালখানায় জায়গা না হওয়ায় ওই আলামত রাখা হয় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে। ঝড়-বৃষ্টি, ধুলাবালিতে মরিচা পড়ে এটি এখন রূপ নিয়েছে ধ্বংসাবশেষে। চেনার উপায় নেই, এটি একটি প্রাইভেটকার।

মাদকদ্রব্য বহন করায় তেজগাঁও থানা এলাকা থেকে ২০০২ সালের ১১ নভেম্বর একটি পিকআপ আটক করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। আটকের পর মাদকদ্র্রব্য আইনে মামলা হয়। পিকআপটির নম্বর ঢাকা-মেট্রো-ঠ-১১-০৯৬০। নিয়ম অনুযায়ী আলামত হিসেবে পিকআপটি আদালতে পাঠানো হয়। স্থান স্বল্পতায় সেটিও রাখা হয় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে। পিকআপটির ওপর জন্মেছে আগাছা। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থাকায় পরিণত হয়েছে ময়লার স্তূপাগারে।

সরেজমিন ঘুরে ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, মালখানার স্থান স্বল্পতার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার হাজারো আলামত রাখা হচ্ছে ঢাকা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে। সংরক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকায় রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে বিচারাধীন মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, টাকা-পয়সা, অস্ত্র ও অন্যান্য ছোটখাটো আলামত মালখানার ভেতরে স্থান পেলেও গাড়ি, মোটরসাইকেলসহ বড় বড় আলামত সংরক্ষণের জায়গার অভাবে তা সুরক্ষিত থাকছে না। অযত্ন-অবহেলায় ধুলাবালি ও মরিচা পড়ে সব আলামত এমন চেহারা পায়, যা শনাক্ত করতে বিপাকে পড়ে পুলিশও।

সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার আলামত

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে যেসব আলামত রয়েছে, সেগুলো চেনাই যায় না। বছরের পর বছর পার হওয়ার পরও মামলার রায় না হওয়া বা মামলা নিষ্পতির পর তা ধ্বংস না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। মামলার আলামত নষ্ট হওয়ায় একদিকে রাষ্ট্রের ক্ষতি হচ্ছে কোটি কোটি টাকা, অন্যদিকে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি আনিছুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আদালত থেকে যেসব আলামত ধ্বংসের জন্য আমাদের চিঠি দেওয়া হয় সেগুলো আমরা ধ্বংস করি। আদালতের আদেশ ছাড়া আমরা কোনো আলামত ধ্বংস করতে পারি না।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থেকে ঢাকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে স্তূপাকারে পড়ে আছে শত শত মামলার আলামত। এর মধ্যে রয়েছে ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, রিকশাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। সংরক্ষণের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় যানবাহনের ভেতরের অধিকাংশ যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে গেছে। মরিচা পড়েছে সব আলামতের ওপর। প্রথম অবস্থায় দেখলে মনে হবে, এগুলো ভাগাড়ের কোনো ময়লা। মালখানা কর্তৃপক্ষের দেওয়া নম্বরও নেই অনেক আলামতের ওপর। অনেক আলামতের মধ্যে জন্মেছে আগাছা। অনেকেই মামলার আলামতকে চা খাওয়ার স্থান বানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার আদালতের মালখানা দুই ভাগে বিভক্ত। একটি জেলা মালখানা, অপরটি মহানগর মালখানা। জেলা মালখানা বর্তমানে চিফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আন্ডারগ্রাউন্ডে ও মহানগর মালখানা সিএমএম আদালতের আন্ডারগ্রাউন্ডে। জায়গা স্বল্পতার কারণে পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে শুরু করে ঢাকার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে পর্যন্ত আলামত রাখা হয়েছে।

সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার আলামত

অযত্ন অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে মামলার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ

অনেক ক্ষেত্রে বছরের পর বছর মামলার কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় আদালত আলামত মালিককে বুঝিয়ে দিতে পারছেন না। আবার যানবাহনের মালিকরা তাদের নিজস্ব জিম্মায় আলামত নিতে চাইলেও বিভিন্ন কাগজপত্র, প্রমাণাদি ও আইনি জটিলতায় তা নিতে পারছেন না।

 

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু জাগো নিউজকে বলেন, এভাবে মামলার আলামত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারণে আদালতের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আদালতের পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য এসব আলামত ভালো জায়গায় সংরক্ষণ করা উচিত। মামলা প্রমাণের জন্য আলামত গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাষ্ট্রের স্বার্থে এসব আলামত সংরক্ষণ করা উচিত।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জি এম মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মামলা প্রমাণের জন্য আলামত খুব গুরুত্বপূর্ণ। আলামত নষ্ট হয়ে গেলে মামলা প্রমাণ করা যায় না। তাই ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলার আলামত সংরক্ষণ করা উচিত।

সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার আলামত

এসব সমস্যা সমাধানের উপায় হিসেবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের বিশেষ পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) ফারুক আহম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে মামলা শেষ করতে সময় লাগছে। কোনো কোনো মামলা রয়েছে, যা ২৮ থেকে ৩০ বছরেও সমাধান হচ্ছে না। মামলা যত দ্রুত শেষ হবে, তত দ্রুত মালখানার আলামত নষ্ট করতে বা বিক্রি করে দিতে টেন্ডার দিতে পারবে সরকার।

তিনি আরও বলেন, অপরাধ প্রমাণের ক্ষেত্রে মামলার আলামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আলামত সংরক্ষণের জন্য দ্রুত সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত

২৫ মার্চ ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী

পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ কমিউনিটি অব পোর্তোর বৈঠক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে ভন্ড পিকানি

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি চীনকে ছাড়িয়ে যাবে : আইএমএফ

প্রবাসীরা ১৮ দিনে পাঠালেন ১১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা

রাজধানীতে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়বে এক লাখ ভবন

বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানে কংগ্রেসম্যানের ক্ষোভ

সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া

নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী