logo
Saturday , 4 February 2023
  1. সকল নিউজ

২৮ জেলায় নিপাহ ভাইরাস হাসপাতাল প্রস্তুতের নির্দেশ

প্রতিবেদক
admin
February 4, 2023 12:51 pm

দেশের ২৮ জেলায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে মহাখালীর ডিএনসিসি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে মোট ২০টি আসন প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গতকাল শুক্রবার অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শেখ দাউদ আদনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

1650290549_hospital-bed

এর আগে গত সোমবার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়, দেশের ২৮টি জেলায় নিপাহ ভাইরাসজনিত জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের প্রতিটি হাসপাতালে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের সেবা দেওয়ার সময় চিকিৎসকদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সম্প্রতি সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছিলেন, চলতি মৌসুমে আট জন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার শতকরা ৭০ শতাংশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কাঁচা রস, পাখির খাওয়া ফল খেলে এ রোগ হয়। বাদুড় এই ভাইরাস বহন করে। বাদুড় খেজুরের রস পান করলে সেটি মানুষ পান করলেও নিপাহ হয়। অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শে এলে এটি দ্রুত ছড়ায়। তখন মাল্টিপল সংক্রমণ হয়। তিনি বলেন, এই ভাইরাস থেকে রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা টিভিসি তৈরি করেছি। সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে আলাদা ইউনিট করে চিকিৎসা দিচ্ছি।

নির্দেশনার মধ্যে ছিল—রোগী দেখার সময় আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। রোগী দেখার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। জ্বরের উপসর্গ দেখা গেলে রোগীকে আবশ্যিকভাবে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখতে হবে। জ্বরের সঙ্গে অজ্ঞান অবস্থা দেখা দিলে রোগীকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের আইসিইউতে রাখতে হবে। আইসিইউতে থাকাকালে রোগীর পরিচর্যাকারীরা শুধু গ্লাভস, মাস্ক পরলেই হবে। কেননা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থেকে বাতাসের মাধ্যমে ঐ ভাইরাস ছড়ায় না। যেহেতু আইসিইউতে রেখে এই রোগীর চিকিৎসা করা যায়, সে জন্য রেফার করার প্রয়োজন নেই।

এদিকে গত ১১ জানুয়ারি সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায়, গত ২২ বছরে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল ৩২৬ জন এবং মারা গেছে ২৩১ জন। ‘শীতকালীন সংক্রামক রোগ ও নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ’ শীর্ষক কনফারেন্সে তারা জানায়, নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যেই রাজশাহীর এক নারী এ ভাইরাসে মারা যান। খেজুরের রস খেয়ে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। ২০২২ সালে নিপাহ ভাইরাস আক্রান্তের তিনটি কেস পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে দুই জন মারা গেছেন। এদের এক জন ছিলেন নওগাঁর, অন্যজন ফরিদপুরের।

আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, বাদুড়ের মূত্র বা লালার মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়ায়। বাদুড় যখন খেজুরের রস খায়, তখন তার দ্বারা সেটি ‘ইনফেকটেড’ হয়ে যায়। মানুষ সেই রস কাঁচা খেলে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তার পর আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্য ও পরিচিতরা আক্রান্ত হয়। তাদের মাধ্যমে

স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হতে পারেন। তিনি পরামর্শ দেন, কাঁচা খেজুরের রস ও বাদুড়ের অর্ধেক খাওয়া ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে।

সম্মেলনে বক্তারা আরও জানান, দূষিত খেজুরের রস খাওয়ার পর নিপাহ আক্রান্তের লক্ষণ দেখা দিতে ৮-৯ দিনও লাগতে পারে। ইতিমধ্যে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেয় ৬-১১ দিন পর। আইইডিসিআর গবেষকদের মতে, খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে খেলে তা নিরাপদ, গুড়ও নিরাপদ। সংস্থাটি গাছিদের রস সংগ্রহের পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়ার পরামর্শও দিয়েছে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ