দেশের আসন্ন গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সবকটি বয়কটের পথে হাঁটছে বিএনপি। মেয়র পদের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদেও যেন নেতাকর্মীদের কেউ প্রার্থী না হন সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। কিন্তু তোয়াক্কা করছে না নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিএনপির প্রার্থীরা। অনেকই আবার শীর্ষ নেতাদের ফোনই ধরছে না।
পাঁচ সিটিতে মেয়র, কাউন্সিলর মিলিয়ে প্রায় দুইশতাধিক বিএনপি নেতা প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে অনেকে ইতোমধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। অনুসারীদের নিয়ে তারা পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন। তাদের সঙ্গে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরাও রয়েছেন। তবে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা স্থানীয় সিনিয়র নেতাদের এড়িয়ে চলছেন। এমনকি নেতাদের ফোনও তারা ধরছেন না।
এ নিয়ে ‘ঝুঁকির’ মুখেই পড়ছে বিএনপি। যদিও দলীয়ভাবে বিএনপি পাঁচ সিটির নির্বাচনে যাচ্ছে না—এটা পরিষ্কার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝুঁকিটা এখানেই। কারণ এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কারও কারও রহস্যময় আচরণ, আবার কারও কারও নির্বাচনের ব্যাপারে যে উৎসাহ-আগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে, তাতে ঝুঁকি যেন বিএনপির দরজায় উঁকিই দিচ্ছে। বিএনপির ইজ্জত ধুলোয় মিশে যাওয়ার উপক্রম।
রাজশাহী বিএনপির এক শীর্ষ নেতা জানান, আসন্ন নির্বাচন থেকে দলের নেতাদের বিরত রাখা যাচ্ছে না। বিষয়টি বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জানানো হয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান যেকোনো উপায়ে সিটি নির্বাচন থেকে দলের নেতাদের বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকার বলেন, যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে দল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ ব্যাপারে কঠোর বার্তা দিয়েছেন। গাজীপুরে ইতিমধ্যে ৩০ জনকে শোকজ করা হয়েছে।
এদিকে সিটি নির্বাচনে আগ্রহী বিএনপি নেতারা বলছে, সিটি এলাকায় নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখা এবং আগামীতে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে চান তারা।
কিন্তু কেউই এই শোকজ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না বলে জানা গেছে। গাজীপুর ৩৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হান্নান মিয়া হান্নু চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দলের চিঠি পেয়েছি। আগে থকেই জানতাম দল এমন চিঠি পাঠাবে। সবকিছু জেনেশুনেই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পূবাইল থানা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বিকি বলেন, এসব নিয়ে এখন ভাবার সময় নেই। আমরা স্থানীয় রাজনীতি করি। এলাকার মানুষের আমাদের উপর একটা দাবি রয়েছে। নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে বিরোধী পক্ষকে খালি মাঠে গোল দেবার সুযোগ করে দিতে পারি না। হাইকমান্ড বেশি বোঝে বলেই আজ দলের এই অবস্থা। আমার মনে হয় শোকজ নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না।