logo
Tuesday , 29 January 2019
  1. সকল নিউজ

চট্টগ্রাম বন্দর: নানা সংকটেও এক বছরে প্রবৃদ্ধি ১৩ শতাংশ

প্রতিবেদক
admin
January 29, 2019 10:59 am

অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতাসহ নানা সংকটের মধ্যেও বিদায়ী বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে।

২০১৭ সালে দেশের প্রধান এ সমুদ্রবন্দরে যেখানে ৮ কোটি ৫২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৪৮ মেট্রিক টন পণ্য ওঠানামা হয়, সেখানে ২০১৮ সালে হয়েছে ৯ কোটি ৬৩ লাখ ১১ হাজার ২২৪ মেট্রিক টন। এক বছরে পণ্য ওঠানামা বেড়েছে ১ কোটি ১০ লাখ ৬৪ হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন। প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ২০১৭ সালে ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। কনটেইনারবাহী এবং খোলা পণ্যবাহী (বাল্ক কার্গো) দুই ধরনের জাহাজযোগে আসা পণ্যের ভিত্তিতে এই প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে। আলাদাভাবে কনটেইনারজাত পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং খোলা পণ্যে ১৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, নতুন নতুন ইকুইপমেন্ট সংযোজন, নতুন ইয়ার্ড নির্মাণ ও সংস্কারের মাধ্যমে পণ্য সংরক্ষণের স্থান বাড়ানো এবং বন্দর ব্যবহারকারীদের সার্বিক সহযোগিতার কারণে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, ২০১৮ সালে ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৯৬ টিইইউএস (টুয়েন্টি ফিট ইকুইভিলেন্ট ইউনিটস) কনটেইনার পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে, ২০১৭ সালে ছিল ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ টিইইউএস। অর্থাৎ গত বছর ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৩ টিইইউএস কনটেইনার পণ্য বেশি হ্যান্ডলিং হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে এ খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত বছর কনটেইনারের চেয়ে খোলা পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে, যা ছিল ১৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। ২০১৭ সালে খোলা পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ। কনটেইনারজাত ও খোলা পণ্য মিলিয়ে ২০১৮ সালে আগের বছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়।

বন্দর সচিব বলেন, ‘গত এক বছরে বন্দরে ৬টি গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ ৪৭টি নতুন ইকুইপমেন্ট যোগ হয়েছে। এছাড়া বন্দরের ভেতরে পণ্যের ধারণক্ষমতা বাড়াতে নতুন ইয়ার্ড নির্মাণ ও পুরনো ইয়ার্ড সংস্কার করা হয়েছে। এসব কারণে পণ্য হ্যান্ডলিং আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া বন্দর ব্যবহারকারীরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা দিয়ে গেছেন। সবার সর্বাত্মক চেষ্টায় গতি বাড়ছে বন্দরের।’

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছর জাহাজের আগমনও ছিল বেশি। ২০১৮ সালে বন্দরে ৩ হাজার ৭৪৭টি জাহাজ এসেছে, যা আগের বছর ছিল ৩ হাজার ৩৭০টি।

বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, পণ্য পরিবহনে প্রবৃদ্ধি হলেও গত বছর বিভিন্ন সময় বহির্নোঙর থেকে জেটিতে বার্থিং পেতে অনেক জাহাজকেই বাড়তি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে আমদানিকারকদের। তাদের অভিযোগ, পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে যে হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, সেই তুলনায় বন্দরের অবকাঠামো বাড়ছে না। বিশেষ করে জেটি সংকটের কারণে সময়মতো ভিড়তে পারেনি অনেক জাহাজ। এসব জাহাজকে বহির্নোঙরে অপেক্ষা করতে হয়েছে অতিরিক্ত সময়। এজন্য গুনতে হয়েছে ডেমারেজ। একদিন বাড়তি অবস্থানের কারণে ১০ থেকে ১২ হাজার ডলার ডেমারেজ গুনতে হয় প্রতি জাহাজকে।

খাতুনগঞ্জের বৃহৎ ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের কর্ণধার মো. আবুল বশর চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘২০১৮ সালেও অনেক জাহাজকে ডেমারেজ গুনতে হয়েছে তবে তা ২০১৭ সালের চেয়ে কম ছিল। গত বছর বন্দরের সার্বিক অবস্থা আগের বছরের চেয়ে কিছুটা ভালো থাকলেও লাইটার জাহাজ ও ঘাট সংকট এখনও কাটেনি। লাইটার জাহাজ ও দেশের অভ্যন্তরীণ ঘাটগুলোর ওপর পণ্য খালাস অনেকাংশে নির্ভরশীল। বছরের শুরুতে বেসরকারি আইসিডিগুলোতে (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) কনটেইনার আনা-নেয়ার গতি ছিল কম। তবে বছরের শেষদিকে বাড়ে। বিভিন্ন আইসিডি কর্তৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এখনও নিয়মবহির্ভূত নানারকম চার্জ দাবি করছে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক অবস্থায় ১৮ থেকে ২০ দিনে একটি জাহাজের (বাল্ক কার্গো) পণ্য খালাস সম্পন্ন হয়। এখন ২০-২৫ দিন সময় লাগছে। সময় আরও কমিয়ে আনতে হবে। বন্দরের অবকাঠামো বাড়াতে হবে। বর্তমানে যে অবকাঠামো রয়েছে তার সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেও হ্যান্ডলিং আরও বাড়ানো সম্ভব।’ 68Shares

সর্বশেষ - সকল নিউজ