logo
Tuesday , 29 January 2019
  1. সকল নিউজ

সেই বৃদ্ধা মাকে ঠাঁই দিল বিসিএস ক্যাডার-বিত্তবান সন্তানরা

প্রতিবেদক
admin
January 29, 2019 10:45 am

মৃত্যুশয্যায় থাকা বৃদ্ধা মায়ের অবশেষে পুলিশ ও নেতাদের সহযোগিতায় নিজ সন্তানের কাছে ঠাঁই হয়েছে। বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার ও ফেনী জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের নেতাদের তত্ত্বাবধানে পুলিশ তার উচ্চশিক্ষিত ও বিত্তবান সন্তানদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মৃদুলা সাহা থাকতেন গ্রামের একাকি একটি বাড়িতে। আর বিসিএস ক্যাডার, উচ্চশিক্ষিত ও বিত্তবান ছেলেরা তাদের স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন শহরে যার যার নিজস্ব বাসায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে মেয়েরা থাকেন স্বামীর বাড়ি। কিন্তু মায়ের স্থান হয়নি কারো কাছেই। গ্রামের বাড়িতে ছোট একটি ঘরে অনাহারে-অর্ধাহারে, অযত্ন আর অবহেলায় মৃত্যুর পথযাত্রী মা। দেখারও কেউ নেই।

মঙ্গলবার বিকালে বাড়ির একটি কক্ষে একাকী বৃদ্ধাকে মৃত ভেবে স্থানীয় কাউন্সিলর বাদলের মাধ্যমে থানায় খবর দেন প্রতিবেশীরা। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে বৃদ্ধা মা মৃদুলা সাহাকে। পরে ওই মায়ের দেখাশোনার দায়িত্ব নেন ফেনীর পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও ফেনীর সিভিল সার্জন হাসান শাহরিয়ার।

পুলিশ জানায়, ফেনী পৌরসভার মধুপুর এলাকায় বাড়ির পরিত্যক্ত কক্ষে থাকতেন অসুস্থ বৃদ্ধা মৃদুল সাহা। মারা গেছেন ভেবে মঙ্গলবার বিকালে প্রতিবেশীরা থানায় খবর দেয়।

পরে পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পায়। তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। চিকিৎসক জানান, বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ওই বৃদ্ধা।

ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, উনি বেশ অসুস্থ। মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। আমরা আমাদের যতটুকু দেয়ার সব দিচ্ছি।চিকিৎসার পাশাপাশি তার প্রয়োজন আপনজনের ভালোবাসা। কিন্তু এই বয়সেও পাশে নেই ভালোবাসার মানুষগুলো।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৪ বছর ধরে মধুপুরের ওই বাড়িতে একা থাকেন বৃদ্ধা মা। তার ছেলে বাপ্পি সাহা ও বিপুল সাহা ফেনী শহরে বাবার রেখে যাওয়া চালের আড়তের মালিক।

বুধবার বিকালে জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ফেনী জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন,সদর থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটস সাহা ও যুগান্তরের প্রতিনিধি যতন মজুমদারের সমঝোতায় বৃদ্ধাকে তার সন্তানদের হাতে তুলে দেয়া হয়। একই সঙ্গে বৃদ্ধা মায়ের সার্বিক দায়িত্ব দেয়া হয় সদর থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটস সাহার ওপর।

এদিকে বিসিএস ক্যাডার ছেলে সুসান্ত কুমার সাহা ও উচ্চশিক্ষিতা কন্যা সরমিলা সাহা বলেন, আমরা অনেক ভুল করেছি। আমরা আর ভুল করতে চাই না। মায়ের দায়িত্ব নিয়ে মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা পেতে চাই।

সর্বশেষ - সকল নিউজ