সম্প্রতি কক্সবাজারে আস শাহাদাত নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেন গোয়েন্দারা। তাদের কাছে জানা গেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কৌশলগুলোকে মাথায় রেখে ভিন্ন কৌশলে যাচ্ছে জঙ্গিরা। কারাগার থেকেও তারা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে।
এরপর থেকে দেশে একে একে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে নিহত হন একাধিক শীর্ষ নেতাসহ অনেকেই। এরপর নব্য জেএমবিসহ অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলো কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে।
র্যাব সদর দপ্তর সূত্র বলছে, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত র্যাবের অভিযানে দেশে এক হাজার ৮৭৫ জন জঙ্গি সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে।
পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট ও র্যাবের গোয়েন্দা দল সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে এখনো জঙ্গি সংগঠনগুলোর দাওয়াতি কার্যক্রম চলছে। সদস্য সংগ্রহ ও উগ্রবাদী প্রচারও চলছে। সাংগঠনিক যোগাযোগের জন্য নিত্যনতুন অ্যাপস ব্যবহার করছে তারা।
সূত্র জানায়, বর্তমানে নব্য জেএমপির আমির আমির মাহাদী হাসান জন তুরস্কে থেকে অনলাইনে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
জঙ্গি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ‘হলি আর্টিজানের পৈশাচিক ঘটনার পর থেকে আমরা বহু জঙ্গিকে আইনের আওতায় এনেছি। এতটুকু বলতে পারি, জঙ্গিদের একযোগে হামলা কিংবা নাশকতার ক্ষমতা নেই।’
পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের সঙ্গে একত্রিত হয়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার আমির ও শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ প্রায় শতাধিক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ ছাড়া নিষিদ্ধঘোষিত আনসার আল ইসলাম ও হুজিসহ অন্যান্য জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে র্যাবের নিয়মিত নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
র্যাব জানায়, সম্প্রতি বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে তারা জানতে পেরেছে, নতুন করে সংগঠনকে পুনরুজ্জীবিত করতে তারা কিশোর বয়সীদের রিক্রুট করছে। উঠতি বয়সী কিশোরদের অপব্যাখ্যা দিয়ে সহজে ব্রেন ওয়াশের মাধ্যমে ভুলপথে নেওয়া যায় বিধায় কোমলমতি কিশোরদের তারা প্রথমে টার্গেট করছে। এসব সদস্য নিয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন সময়ে তারা ধর্মীয় স্থাপনা, বাসা বা বিভিন্ন স্থানে গোপন সভা করেছে। গত ২৭ জুন কক্সবাজার সদরের চৌফলদণ্ডী থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এরই মধ্যে আনসার আল ইসলামের কর্মীরা যে আস শাহাদাত নামের সংগঠন করেছিল তাদের অনেককে প্রথমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং সর্বশেষ তিন দিন আগে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত বছর ১২ আগস্ট মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পাহাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’ নামের নতুন একটি জঙ্গি দলের ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :