গুলির ঘটনায় মিয়ানমারকে প্রতিবাদ জানাল বাংলাদেশ


admin প্রকাশের সময় : জুন ১৫, ২০২৪, ২:১৫ অপরাহ্ন | 591
গুলির ঘটনায় মিয়ানমারকে প্রতিবাদ জানাল বাংলাদেশ

টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনের মধ্যে চলাচলকারী বাংলাদেশি ট্রলারে গুলির ঘটনায় মিয়ানমারকে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক নির্ভরযোগ্য সূত্র যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, গতকাল (বুধবার) বাংলাদেশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মোয়ের কাছে প্রতিবাদলিপিটি হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিবাদলিপিতে মিয়ানমারকে বাংলাদেশ জানিয়েছে যে, তাদের দিক থেকে একটি গুলিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসা উচিত নয়।

টেকনাফ এবং সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী একাধিক ট্রলার লক্ষ্য করে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়। নাফ নদীর মোহনায় এই ঘটনাগুলো ঘটে।

এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের কাছে বুধবার রাত থেকে একের পর এক মর্টারশেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়। নাফ নদের এপারে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে শোনা গেছে বিকট শব্দ।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে চলাচল করা ট্রলার ও স্পিডবোটে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গুলি ছোড়ায় কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে যেতে পারছে না। ৮ দিন ধরে চলছে এই পরিস্থিতি। এ অবস্থায় সেন্টমার্টিনে ১০ হাজারের মতো অধিবাসী খাদ্য ও নিত্যপণ্য সংকটে পড়েছেন।

সেন্টমার্টিনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ৬ জুন থেকে নৌযান লক্ষ্য করে একের পর এক গুলির কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ডিসি স্যার বলেছেন, বিশেষ ব্যবস্থায় শুক্রবার (আজ) থেকে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দাদের জন্য নিত্যপণ্য পাঠানো হবে।

টেকনাফ সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন, বুধবার রাত ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় অন্তত ২০০টি মর্টারশেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। এ সময় আকাশে যুদ্ধবিমান উড়ে যাওয়ার শব্দও শোনা গেছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত টানা আবারও শতাধিক বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।

সাবরাং ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তার সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান যুদ্ধে গেল এক মাস টেকনাফ সীমান্ত পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। শোনা যায়নি বিস্ফোরণের শব্দ। কিন্তু গত ৫, ৮ ও ১১ জুন নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারের অংশ থেকে সেন্টমার্টিনগামী নৌযানে গুলিবর্ষণ হয়। বুধবার দুপুরে নাফ নদে দেখা যায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ। এরপর রাত থেকে আবারও শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ।

তিনি জানান, বুধবার রাত থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপসহ আশপাশের সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ওপার থেকে থেমে থেমে ভেসে আসে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। এতে সীমান্ত লাগোয়া শাহপরীর দ্বীপ, জেটিঘাট, জালিয়াপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়া ও আচারবনিয়ার আশপাশের বসতঘর ও স্থাপনা কেঁপে ওঠে। সীমান্তে বসবাসকারীদের অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

আব্দুস সালাম জানান, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল­াহপাড়া, মাঙ্গালা, নলবইন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা। ধারণা করা হচ্ছে, মংডু শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, একটি বড় জাহাজ দেখা এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সতর্ক অবস্থানে রয়েছি আমরা।