logo
Monday , 18 March 2024
  1. সকল নিউজ

দলের হাইকমান্ডের ওপর ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিএনপি

প্রতিবেদক
admin
March 18, 2024 9:40 am

নেতৃত্বের সংকট, সমন্বয়হীনতা, সিদ্ধান্তহীনতা ও দীর্ঘদিন কাউন্সিল না হওয়ায় দলের হাইকমান্ডের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দলের বড় একটি অংশ এখন কাউন্সিল চাচ্ছে না। কারণ, কাউন্সিল হলে যারা রাজপথে সক্রিয়, কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিবেদিত ও কূটনৈতিক বিষয়ে দক্ষ- তারা সামনে চলে আসতে পারেন। এর ফলে মহাসচিবসহ দলটির অনেক সিনিয়র নেতা নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়তে পারেন।

ঐ অংশটি চাচ্ছে- কাউন্সিল না করে সরাসরি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ওপর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হোক। তাতে অন্তত সিনিয়ররা বাদ পড়বেন না। এতে দলের মধ্যে সিনিয়র-জুনিয়র সংমিশ্রণ থাকবে।

কাউন্সিল না চাওয়া অংশটি আশঙ্কা করছেন, কাউন্সিল হলে ক্ষুব্ধ নেতারা যেকোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন। আবার তৃণমূলও যে হাইকমান্ডের ওপর ক্ষুব্ধ- এটি প্রায় স্পষ্ট। তবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে তাদের কোনো মন্তব্য নেই। তারা প্রথমে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং তার অবর্তমানে তারেক রহমানের নেতৃত্বে থাকতে চান।

এ দুই পদ ঠিক রেখে কাউন্সিল হলেও অনেক পরিবর্তন চলে আসবে। তাতে কপাল পুড়বে মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির অনেকের।

রাজনৈতিক সচেতন মহল বলছেন, বিএনপিতে একই দৃশ্যপট! কোনো পরিবর্তন নেই। বারবার আন্দোলনে ব্যর্থ তারা। যেমন একাদশ নির্বাচন, তেমননি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ভোট এলে জোট বাঁধে। সংখ্যা বাড়ে আর হুঙ্কার আসে। কিন্তু ভোট শেষে তারা চুপসে যায়। এমন দল দিয়ে আর যাই হোক, জনতার দাবি আদায় করা কোনোদিনই সম্ভব নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু তাদের দলেই গণতন্ত্র নেই। তাই তারা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তোয়াক্কা করছে না। দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরাও বারবার জাতীয় কাউন্সিলের দাবি তুলছেন। কিন্তু বিএনপি হাইকমান্ড তাদের দাবি আমলে নিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩০টির মতো পদ এখন শূন্য। বয়সজনিত কারণেও নিষ্ক্রিয় রয়েছেন অনেকে। স্থায়ী কমিটিতে বর্তমানে পদ রয়েছে ১৯টি। এর মধ্যেও পাঁচটি পদ খালি রয়েছে।

সবশেষ ২০১৬ সালের মার্চে কাউন্সিল করে বিএনপি। ঐ বছরের আগস্টে ১৭ সদস্যের স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করে তারা। স্থায়ী কমিটিতে পদ রয়েছে ১৯টি। তখন থেকেই দুটি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। এরপর এম কে আনোয়ার, তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ ও মওদুদ আহমদ মারা গেলে ছয়টি পদ শূন্য হয়। সাবেক সেনাপ্রধান মাহবুবুর রহমান পদত্যাগ করায় শূন্যপদ দাঁড়ায় সাতটিতে।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২২ জুন সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও এখনো পাঁচটি পদ খালি রয়েছে। বর্তমানে স্থায়ী কমিটিতে রয়েছেন- দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

জানতে চাইলে সাবেক ছাত্রনেতা মিলন মিয়া বলেন, আমাদের তৃণমূলের আসলে করণীয় কী, সে বিষয়ে আমরা সঠিক বার্তা থেকে দূরে ছিলাম।

সিনিয়র নেতাদের সম্পর্কে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা রাজপথ থেকে আটক হই, ঘরে যেতে পারি না। আর আমাদের নীতিনির্ধারকরা বেডরুম থেকে আটক হন। সব মিলিয়ে আমাদের মধ্যে না আছে চিন্তার স্বচ্ছতা, না আছে কাজকর্মের স্বচ্ছতা। এ কারণেই আজ বিনপির ভঙ্গুর অবস্থা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিষয়ে তৃণমূল থেকে হাইকমান্ড- কারো কোনো প্রশ্ন নেই। খালেদা জিয়া আমাদের প্রধান নেতা। তার অবর্তমানে তারেক রহমান। কাউন্সিল হলেও কেউ এ দুজনের বিষয়ে আপস করবেন না।

তিনি আরো বলেন, দলে মির্জা ফখরুলের কোনো বিকল্প নেই। তার মতো স্বচ্ছ ও ত্যাগী এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নেতা খুব কমই আছেন। এখন যে পরিস্থিতি, তাতে কাউন্সিল হবে কী না বলা দুষ্কর। কাউন্সিল না হলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সেই ক্ষমতা দেওয়া আছে। তিনি যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা বৃহৎ রাজনৈতিক দল। কাউন্সিল করতেই হবে। সময়-সুযোগ করে আমরা তা করবো। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কাউন্সিলের তারিখ নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন।

সর্বশেষ - সকল নিউজ