logo
Monday , 18 December 2023
  1. সকল নিউজ

বিএনপির চরিত্র বদলায়নি, তাদের মুখে গণতন্ত্র মানায় না : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেদক
admin
December 18, 2023 4:14 pm

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির চরিত্র বদলায়নি, কখনো বদলাবে না। তাদের মুখে গণতন্ত্র মানায় না। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আন্দোলন-সংগ্রাম করে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। আজকে নির্বাচনী সংস্কার আমরা করেছি। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে তারা নির্বাচিত করবে।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় গতকাল তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে জনরোষের আন্দোলনে ছিয়ানব্বইতে ভোট চুরির অপবাদ নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা দেশের জন্য দুর্ভাগ্যের।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নাম নিয়ে ২০১৩ সাল থেকে মানুষকে পুড়িয়ে মেরে আন্দোলন করে তারা। বাসে, গাড়িতে, ট্রেনে লঞ্চে—সব জায়গায় তাদের আগুন। তাদের এ অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার কত মানুষ আজকে অসহায় জীবনযাপন করছে। নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল, পারেনি। জনগণ সঙ্গে না থাকলে পারা যায় না।’

ভোট কারচুপি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে খুব অবাক লাগে বিএনপি যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া, ভোট কারচুপি করা, সিল মারা, হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরা, এগুলো কে করেছে? এগুলো তো জিয়াউর রহমানই শুরু করে। ওদেরকে বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করবে কীভাবে?’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে নয়, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করেছে। এদের চরিত্র কখনো বদলাবে না। তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। জনগণের কল্যাণ-মঙ্গলের কথা এরা চিন্তা করে না। নিজেদের কথাটা ভালো বোঝে। এরা যখনই ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোট চুরি করা, অর্থ সম্পদ বানানো, বিদেশে পাচার করা, মানি লন্ডারিং করা এবং এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করা—এগুলোই তারা করেছে। আর তাদের কাছ থেকে বড় বড় কথা এবং গণতন্ত্রের কথা আজকে শুনতে হয়।’

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের চর্চা করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচন তারা করবে কীভাবে। একটা নমিনেশন দেয় লন্ডন থেকে, একটা আসে পল্টন থেকে, আরেকটা আসে গুলশান থেকে। এখন যখন লন্ডনেরটা আসে তখন পল্টনেরটা চলে যায়। যখন পল্টনেরটা আসে তখন গুলশানেরটা যায়। সকালে একটা দেয় তো বিকালে আরেকটা দেয়। এভাবে তাদের নির্বাচন পল্টনও গেল, লন্ডনও গেল, গুলশানও গেল। তাও কয়েকটি আসন পেয়েছিল। সংসদে তাদের যে সদস্য ছিল, আমরা কিন্তু তাদেরকে কথা বলার সুযোগ দিতাম। কারণ আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম আমাদের কথা বলতে দিত না। যে কারণে আমরা গণতন্ত্রের চর্চা করি।’

তিনি বলেন, ‘ওই দলের তো মাথা নেই। শুধু একটা ধড় চলছে। কেউ কেউ কোন অন্ধকার জায়গা থেকে যে কথা বলে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করে দিয়েছি। তার সুযোগ নিয়ে তারা কাজে লাগাচ্ছে। আজ হরতাল-অবরোধ ডেকে মানুষকে পুড়িয়ে মারে। রেললাইন কেটে সরাসরি মানুষ হত্যা করা। কেন মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে পারবে না? কেন তাদের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারবে? আমার মনে হয় দেশের মানুষকে এ প্রশ্ন বিএনপির কাছে করা উচিত।’

নির্বাচনী সংস্কার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আন্দোলন-সংগ্রাম করে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। আজকে নির্বাচনী সংস্কার আমরা করেছি। আজকের জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে তারা নির্বাচিত করবে। কে সরকারে আসবে। অগ্নিসন্ত্রাস-খুন করে জনগণের হৃদয় জয় করা যায় না। এটা তাদের জানা উচিত।’

রেললাইন কাটা এবং অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা হরতাল ডেকে ঘরে চুপ করে থাকে। যারা রেললাইন কাটতে যাবে তাদের ধরিয়ে দিন। এদের ধ্বংসাত্মক কাজ চলতে পারে না। বাংলাদেশ যখন কভিড আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে উঠে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন হরতাল-অবরোধ ডেকে আবারো বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।’

আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে উৎখাত করা সহজ নয় বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশের মাটি-মানুষের সংগঠন। এর শেকড় অনেক গভীরে। এভাবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করতে পারবে না। সংগ্রাম করে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন সংস্কার আমরা করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার তাদের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। অগ্নিসন্ত্রাস আর খুন করে জনগণের মন পাওয়া যায় না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে এবং আওয়ামী লীগের ওপর যত আঘাত আসুক; আওয়ামী লীগই জনগণের হয়ে লড়াই করে।’

আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিরুল আলম মিলন এমপি প্রমুখ।

সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহপ্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম।

সর্বশেষ - সকল নিউজ