logo
Thursday , 21 September 2023
  1. সকল নিউজ

এভিয়েশন খাতের চিত্রই পাল্টে দেবে তৃতীয় টার্মিনাল

প্রতিবেদক
admin
September 21, 2023 9:47 am

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগামী অক্টোবরে ‘স্বল্প পরিসরে’ চালু হতে যাচ্ছে বিমানবন্দরটির তৃতীয় টার্মিনাল। অত্যাধুনিক এই টার্মিনালের থাকবে যাত্রীদের জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা, যা এভিয়েশন খাতের চিত্রই পাল্টে দেবে।

জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের আদলে তৈরি হচ্ছে এ টার্মিনাল। এতে যাত্রীদের বাড়তি সুবিধার মধ্যে থাকবে— স্ট্রেইট এসকেলেটর, অত্যাধুনিক ব্যাগেজ বেল্ট, বেবি কেয়ার-চিলড্রেন প্লে, ফার্স্ট-এইড, মুভি লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট, চেক-ইন বোর্ডিং। এই টার্মিনালে যাত্রী নিজেই ইমিগ্রেশন করতে পারবেন। এছাড়া এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নতমানের হবে।

সব ঠিক থাকলে ‘স্বল্প পরিসরে’ আগামী অক্টোবরে উদ্বোধন করা হবে। পরিপূর্ণভাবে নতুন এ টার্মিনালটি চালু হতে আরও বছর খানেক সময় লাগবে। এ টার্মিনাল চালু হলে দেশের এভিয়েশন খাতের সম্ভাবনার দুয়ারগুলো আরও বাড়বে। ফি বছর যুক্ত হবে নতুন নতুন এয়ারলাইন্স কোম্পানি।

নান্দনিক এই তৃতীয় টার্মিনালের কাজ করছে অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিৎসুবিসি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং এই তিনটি প্রতিষ্ঠান। টার্মিনালটির নকশা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি রোহানি বাহারিন। যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের নকশা করেছেন বলে দাবি বেবিচকের।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের শুরু হয় ২০১৭ সালে। এরপর ২০২০ সালে ঠিকাদারী চুক্তি হয়। চুক্তির পর ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাদের কাজ শুরু করে। তখন তারা কাজ বাস্তবায়নে সময় চায় ৪৮ মাস।

বেবিচক সূত্র আরও জানায়, টার্মিনাল নির্মাণে যা ব্যয় হবে তাতে সহযোগিতা করছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বিমানের পার্কিং এপ্রোনটি হবে ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের। যাতে অনায়াসে উড়োজাহাজ রাখার ৩৬টি পার্কিং করা যাবে।

নান্দনিক এই তৃতীয় টার্মিনালের কাজ করছে অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে জাপানের মিৎসুবিসি ও ফুজিটা এবং কোরিয়ার স্যামসাং এই তিনটি প্রতিষ্ঠান। টার্মিনালটির নকশা করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি রোহানি বাহারিন। যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের নকশা করেছেন বলে দাবি বেবিচকের।

অত্যাধুনিক এই টার্মিনালে যা যা থাকছে

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল ভবনটির আয়তন হবে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। লম্বা ৭০০ মিটার এবং চওড়া ২০০ মিটার। যেখানে প্রতি বছর ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী সেবা নিতে পারবে। আর তাদের সুবিধায় থাকবে টানেলসহ বহুতল বিশিষ্ট কারপার্কিং। যা হবে ৫৪ হাজার বর্গমিটারের। আগুন লাগলে বা কোনো দুর্ঘটনা থেকে রক্ষায় থাকবে ফায়ার ফাইটিং স্টেশন।

এসবের পাশাপাশি ২৭ হাজার বর্গমিটারেট ইমপোর্ট কার্গো টার্মিনাল, ৩৬ হাজার বর্গমিটারের এক্সপোর্ট কার্গো টার্মিনাল। আরও ২টি রেপিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে। যা সাড়ে ৮১ হাজার বর্গমিটার, কানেকটিং টেক্সিওয়ে ৬৬ হাজার ৫০০ বর্গমিটার, ল্যান্ডসাইডে এলিডেটেড রোড। পাশাপাশি থাকবে বিমানবন্দর সংলগ্ন সড়ক (হাইওয়ে), এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সংযোগ, যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ইকুয়েপমেন্ট (অটোমেটেড ওয়ার) সব কাজ এখন এগিয়ে চলছে।

সম্প্রতি বেবিচক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পের প্রথম ধাপে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ থাকবে। যাত্রীরা বহির্গমনে ব্যবহার করতে পারবেন ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টার। এছাড়াও সব মিলে ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। বিমানবন্দরে ঢুকে একজন যাত্রীকে চেক-ইন কাউন্টারে তার টিকিট দেখিয়ে বোর্ডিং পাস নিয়ে ব্যাগেজ জমা দিতে হয়। এ ঝামেলা এখানে থাকবে না।

এগুলোতে নিজের পাসপোর্ট এবং টিকিটের তথ্য প্রবেশ করালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে বোর্ডিং পাস ও সিট নম্বর। এরপর নির্ধারিত জায়গায় যাত্রী তার লাগেজ রেখে দেবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাগেজগুলো এয়ারক্রাফটের নির্ধারিত স্থানে চলে যাবে। এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার।

আগমনীর ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক ইন কাউন্টারসহ ৫৯টি পাসপোর্ট ও ১৯টি চেক ইন অ্যারাইভাল কাউন্টার থাকবে। এর বাইরে টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হচ্ছে।

এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট স্থাপন করা হবে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে ১৩৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

এ টার্মিনাল চালু হলে যাত্রীরা আসা-যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হবেন না। কারণ তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ পথ ও উড়াল সেতু নির্মাণ হচ্ছে। যা যাতায়াতকে সহজতর করবে। একজন যাত্রী টার্মিনাল থেকে বের হয়ে সহজে গাড়িতে চড়ে মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগে যুক্ত হতে পারবেন। থাকবে আন্তর্জাতিকমানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত