logo
Thursday , 6 July 2023
  1. সকল নিউজ

এক দশকে ২২ লাখ কর্মসংস্থান

প্রতিবেদক
admin
July 6, 2023 10:05 am

পদ্মা সেতু বদলে দিয়েছে বেসরকারি বিনিয়োগের গতিপথ। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে উদ্যোক্তাদের নজর এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে। আগামী এক দশকে দক্ষিণাঞ্চলের ১৬ জেলায় ২২ লাখ কর্মসংস্থান হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে তৈরি করা হচ্ছে পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল। বিনিয়োগ বাড়াতে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কর্তৃপক্ষের (বেজা) গবেষণায় দেখা গেছে, আগামী ১০ বছরে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে কারখানা স্থাপনের জন্য প্রায় ২৫ হাজার একর জমির চাহিদা তৈরি হবে। কারখানা স্থাপনের পর চালু হলে কর্মসংস্থান হবে ২২ লাখ মানুষের। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে ওই দুটি বিভাগে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই সেতু শুধু পদ্মার দুই পাড়কেই এক করেনি। ব্যবসার নতুন দুয়ার খুলেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের হিসাবে চলতি বছর খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় কারখানা স্থাপনের জন্য ৭ হাজার ৫৪৫ একর জমির চাহিদা তৈরি হবে। আর বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ১ হাজার ১৬০ একর। ২০৩২ সাল নাগাদ খুলনা বিভাগে জমির এই চাহিদা বেড়ে দাঁড়াবে ১৬ হাজার ৭০৬ একরে। বরিশাল বিভাগে জমির     চাহিদা তৈরি হবে ২ হাজার ১২৮ একরে। সব মিলিয়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১৬ জেলায় নতুন কারখানা স্থাপনে প্রয়োজন হবে ২৫ হাজার একর জমির। আশার খবর জানিয়েছে বেজা, বলছে জমির স্বল্পতা নেই। দুই বিভাগে জমি আছে ৮৭ লাখ একরের বেশি।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোটালীপাড়ায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করব। সাতক্ষীরা জেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেয়েছি। কুষ্টিয়ায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। বাগেরহাটের মোংলা সরকারি-বেরসরকারি অংশীদারিত্বে পাওয়ার প্যাক একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছে। পাশাপাশি জি-২০ ভিত্তিতে মোংলায় আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গবেষণা বলছে, আগামী ১০ বছরে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে হিমায়িত মাছ, প্রক্রিয়াজাতকরণ কৃষি পণ্য, সিমেন্ট, জাহাজ নির্মাণের মতো প্রায় ১৫টি খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নতুন করে ২২ লাখ মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি হবে। এর মধ্যে খুলনা বিভাগে কাজের সুযোগ পাবেন ১৯ লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ জন ও বরিশাল বিভাগে কাজের সুযোগ তৈরি হবে ৩ লাখ ১৮ হাজার ৫৯৬ জনের। চলতি বছরেই খুলনা বিভাগে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে ৮ লাখ ২৫ হাজার ৯৫৩ জন ও বরিশাল বিভাগে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭১১ জনের। এই বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে ২০৩২ সালে খুলনা বিভাগে দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ২ হাজার ২৫৪ মেগাওয়াট। চলতি বছর চাহিদা রয়েছে ১ হাজার ১০৯ মেগাওয়াট। আর বরিশাল বিভাগে ২০৩২ সালে বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ৩৪৮ মেগাওয়াটে। চলতি বছর চাহিদা রয়েছে ১৬৬ মেগাওয়াটের। একই সঙ্গে খুলনা বিভাগের কারখানাগুলোতে পানির চাহিদা তৈরি হবে ১১৮ কোটি লিটারের। বর্তমানে চাহিদা রয়েছে ৬৪ কোটি লিটারের। বরিশাল বিভাগের কারখানায় পানির চাহিদা হবে ৬১ কোটি ৮০ লিটারের। চলতি বছর চাহিদা রয়েছে ৩ কোটি ৭৫ লাখ লিটারের।

এফবিসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালী বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে ভাঙ্গা থেকে মোংলা পর্যন্ত ছয় লেন, মোংলা থেকে খুলনা পর্যন্ত ছয় লেন, পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ, বিমানবন্দর, মোংলা বন্দরের ইনার ও আউটার ড্রেজিং, খুলনা নদীবন্দর এবং নওয়াপাড়া নদীবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি। তিনি আরও বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য অর্থনৈতিক নিরাপত্তা জ্বালানি ও সামাজিক নিরাপত্তা, দক্ষ শ্রম শক্তির দিকে নজর দিতে হবে। একই সঙ্গে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পদ্মা সেতুর রেলসংযোগের দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের পক্ষ হতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ