ডয়চে ভেলেতে সাক্ষাৎকার দেয়া নাফিজ মো. আলমের গ্রেপ্তারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকে আবার সবকিছু জেনেও নাফিজ মো. আলমকে নিষ্পাপ প্রমাণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো- যার নামে সাথে ‘ডন’ উপাধি রয়েছে সে কীভাবে নিষ্পাপ হয়?
২০১৭ সালে উত্তরায় আলোচিত আদনান কবির হত্যা মামলার আসামি নাফিজ মো. আলম ওরফে ডন। সে সময় সকল গণমাধ্যমেই তার নামের পাশে ডন লেখা হয়েছে। হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় এই নাফিজ আলম। কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম এই সদস্য জামিনে বের হয়ে তার ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘আই ডোন্ট টক মাচ, আই জাস্ট পুল দ্য ট্রিগার’।
অভিজাত এলাকায় মাদক সাপ্লাই দেয় ডয়চে ভেলে (DW) ড্রামার নায়ক নাফিজ মো. আলম ওরফে ডন। অনলাইনে বিভিন্ন সিক্রেট গ্রুপের মাধ্যমে বিদেশি মদ, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক পুলিশের স্টিকার লাগানো বাইকে করে হোম ডেলিভারি দেয় এই নাফিস।
‘দ্য চেম্বার অব সিন্ডিকেট রিলোডেড’ নামে তার একটি ফেসবুক গ্রুপ রয়েছে। পবিত্র রমজানে ‘অফারে মদ বিক্রির যে ব্যানারটি’ সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয় সেটিও তার তত্ত্বাবধায়নেই করা। এছাড়া নাফিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্যের সঙ্গে তার অসংখ্য ছবি রয়েছে।
শুধু মাদকই নয়, নিজের রুমে গোপন ক্যামেরা ডিভাইস লাগিয়ে রাখতো এই নাফিজ। বান্ধবীদের সাথে সকল ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত গোপনে ধারন করে সেই ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তার একাধিক বান্ধবীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। চালিয়েছে অমানবিক নির্যাতন।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গত রোববার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নাফিজ মোহাম্মদ আলম ওরফে ডনকে গ্রেপ্তার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। ডিএমপির উপকমিশনার আবদুল আহাদ জানায়, ‘নাফিজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তাকে অ্যারেস্ট করার সময় বাসায় অবৈধভাবে রাখা অনেকগুলো বিদেশি মদ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার হেফাজত থেকে পুলিশ স্টিকারযুক্ত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।’
এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন নাফিজ। তখন তার এক বান্ধবীকেও আটক করেছিলো বাহিনীটি। সে সময়ও নাফিজের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করে র্যাব। তখন তার কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যবহৃত ওয়াকিটকি, পুলিশের ক্যাপ, ব্যাজসহ দুটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
ডয়চে ভেলের সাংবাদিকরা এই সমস্ত তথ্যই জানতো। কারণ, গুগলে সার্চ করলেই নাফিজের এসব অপরাধের বিভিন্ন সংবাদ পাওয়া যায়। আর ডয়চে ভেলে তো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এখন আপনারাই বলুন- এসব জানার পরেও কেন ডয়চে ভেলে এই অপরাধীকে একজন সাক্ষ্য হিসেবে ক্রেডিবল মনে করলো?
আপনার মতামত লিখুন :