logo
Thursday , 2 March 2023
  1. সকল নিউজ

গ্রাহকের ৩০ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এনজিও

প্রতিবেদক
admin
March 2, 2023 9:54 am

‘দৃষ্টি সঞ্চয় ঋণদানকারী’ সমবায় সমিতি নামে একটি এনজিওর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে আনুমানিক ৩০ কোটি টাকা আদায় করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সমবায় সমিতি আইন, ২০০২ (সংশোধিত) অনুযায়ী ব্যাংকিং কার্যক্রম জিপিএস, এফডিআর সঞ্চয়পত্র সেভিং হিসাব খুলে কোনো ক্রমেই গ্রাহকদের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করা যাবে না। অথচ এখানে এসব নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষুদ্রঋণের নামে গ্রামের সহজ-সরল লোকের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকার আমানত আদায় করা হয়েছে। আমানতকারীদের টাকা না দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অফিসে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় এনজিও কর্তৃপক্ষ।  গ্রাহকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হঠাৎ এনজিওর মালিক অফিসে প্রবেশ করতে দেখামাত্র বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা অফিস ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। জানমালের নিরাপত্তার ভয়ে ঐ মালিক ভেতর থেকে কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবার সকালে সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের মধুরচর গ্রামে এমনটি ঘটে। পরে শান্তিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আব্দুস সালাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এনজিওর মালিককে উদ্ধার করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। 

জানা গেছে, ২০০২ সালে উপজেলা সমবায় অফিস থেকে নিবন্ধন নিয়ে ‘দৃষ্টি সঞ্চয় ঋণদানকারী’ নামে এনজিও গঠন করেন ঐ এলাকার বাসিন্দা বাহালুল হক। মাঠকর্মীদের নিয়ে তিনি এই ঋণদান কর্মসূচি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সমিতির বর্তমানে তিন শতাধিক গ্রাহক রয়েছে। কয়েক দিন ধরে অফিসে তালা দিয়ে এনজিওর মালিক বাহালুল  এবং তার  ম্যানেজার আব্দুল আজিজ ও মাঠকর্মী রাসেল উধাও হয়ে যান।

এলাকার শরিফ উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, তিনি অধিক মুনাফার আশায় (লাখে ১ হাজার টাকা) ৯ লাখ টাকা এই সমিতিতে জমা রাখেন। তাহেরুন ও নেহেরুন নামে দুই নারী বলেন, তারাও ১০ লাখ টাকা রাখেন। নুরজাহান আক্তার আড়াই লাখ ও মিনুয়ারা বেগম ৯০ হাজার টাকা জমা রাখেন। সুন্দরী বেগম নামে আরেক নারী বলেন, ‘অন্যের বাড়ি কাজ করে খেয়ে-না খেয়ে সব টাকা এক জায়গায় করে লাভের আশায় বাহালুলের কাছে জমা রাখি। এই টাকা এখন পাচ্ছি না।’ স্কুলশিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে সঞ্চয়  সংগ্রহ করেন। সাধারণ মানুষ তাদের সবটুকু সঞ্চয় সমিতিতে জমা রাখেন। গ্রাহকের প্রায় ৩০ কোটি টাকা এই এনজিওতে সঞ্চয় রয়েছে। কয়েক দিন ধরেই সমিতিটি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। হঠাত্ করে সমিতির লোকজন উধাও হয়ে যায়।’ আনেচা বেগম নামে আরেক নারী বলেন, তিনি জমা রেখেছেন ২৪ লাখ টাকা। তারা বলেন, গ্রামের  লোক হয়ে বাহালুল এমন কাজ করবেন তারা ভাবতে পারেননি।

অভিযুক্ত বাহালুল টাকা নেওয়া এবং স্টাফ পালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে সবার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।  উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আরব আলী বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে অডিটের জন্য ডাকা হলে তারা অডিট ফেস করেনি। তাদের অনিয়ম সম্পর্কে তিনিও অবহিত। অন্যদিকে গ্রাহকেরা বলেন, ঘুষের বিনিময়ে সমবায় অফিস সবকিছু জেনেই নিয়মবহির্ভূতভাবে এ ধরনের প্রতারকদের সমিতি করার অনুমতি দিয়েছে, যা তদন্ত করলেই জানা যাবে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ