দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র কালের কণ্ঠকে জানায়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে দুটি নাম বেশি আলোচনায় রয়েছে। তাঁরা হলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। এ ছাড়া আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, আজ রাষ্ট্রপতি পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা না-ও হতে পারে। সংসদীয় দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সংসদীয় বোর্ডের সঙ্গেও বসতে পারেন শেখ হাসিনা। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা হতে পারে।
দলীয় একাধিক সূত্র মতে, দলের মধ্যে একজন রাজনীতিবিদকে রাষ্ট্রপতি করতে জোরালো দাবি আছে। সে ক্ষেত্রে অনেকেই সাবেক সচিব মসিউর রহমানের বিরুদ্ধে ছিলেন। তবে মসিউর রহমান অবসর গ্রহণের পর থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গেই আছেন। আওয়ামী লীগের বিগত কয়েকটি কমিটিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। ফলে তাঁকে শুধু আমলা বলতে চায় না আওয়ামী লীগের একটি অংশ। সাবেক সিএসপি কর্মকর্তা মসিউর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করেছেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুসারে, রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র দাখিল ১২ ফেব্রুয়ারি, মনোনয়নপত্র যাচাই ১৩ ফেব্রুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ ১৯ ফেব্রুয়ারি। তবে রাষ্ট্রপতি কে হচ্ছেন তা জানতে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। কারণ আওয়ামী লীগ যাঁকে মনোনয়ন দেবে তিনিই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবেন। কারণ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
২০১৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয় ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গণভবনে সংসদীয় বোর্ডের সভা হয় ৩১ জানুয়ারি। ওই দিনই গণমাধ্যমকে জানানো হয়, মো. আবদুল হামিদকেই দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি তাঁর কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর এই পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের কার্যভার গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ী তাঁর দায়িত্বের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। এ পদে একই ব্যক্তি তৃতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হতে পারেন না।
সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। আইনজ্ঞদের মতে, মেয়াদ পূরণের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে বলতে প্রথম ৩০ দিনকে বোঝাবে। এই বিধানের আলোকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ২৪ জানুয়ারি।