logo
Thursday , 28 July 2022
  1. সকল নিউজ

ইবি ক্যাম্পাসে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক

প্রতিবেদক
admin
July 28, 2022 9:32 am

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সর্বত্র মাদকের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। ক্যাম্পাসে হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদের মতো নেশাদ্রব্য। ছেলেদের হলগুলোতে বিভিন্ন কক্ষে নিয়ম করে বসছে মাদকের আসর। বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বেশ ধরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক পৌঁছে দেন। এক্ষেত্রে ক্যাম্পাসে মাদক প্রবেশের সবচেয়ে নিরাপদ রুট বঙ্গবন্ধু হল ও লালন শাহ হলের পকেট গেট। আগে মুঠোফোনের মাধ্যমে, হাতেহাতে মাদক বিক্রি হলেও সাম্প্রতিক সময়ে মাদক বিক্রির পদ্ধতিতে পরিবর্তন এসেছে। পরিচিত ক্রেতা ছাড়া কারো কাছে সহজে মাদক বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা। তবে অপরিচিতদের জন্য রয়েছে পরিবর্তনশীল গোপন কোড বা সংকেত। এমনকি মাদক সেবন ও মাদকের আসর বসানোর ক্ষেত্রেও কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়। জানা যায়, ইদানীং নবীন শিক্ষার্থীরা মাদকের দিকে ঝুঁকছে। এর মধ্যে গাঁজা সহজলভ্য, সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় সেবনের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে সিনিয়রকে লাঞ্ছিত করা, ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নেশার টাকা জোগাড়ে নৈতিক স্খলনের একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যরাতে ক্যাম্পাসসংলগ্ন মহাসড়কে মাদকের টাকা জোগাড় করতে মালবাহী কাভার্ড ভ্যানের চালক ও সহযোগীকে মারধর করে টাকা ও গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাব্য ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিনের বিরুদ্ধে। পরে কাব্যকে পুলিশ ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে। এ ঘটনায় তাদের দুই জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে, প্রধান ফটক থেকে গাঁজাসহ পুলিশের হাতে আটক হন লোকপ্রশাসন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। গত জানুয়ারিতে মাত্রাতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দস্তগীর হোসেন। তাকে দুই দফায় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত তিন জন ছাত্রী এবং একাধিক শিক্ষকও নিয়মিত মাদক সেবন করেন। সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। যার অধিকাংশ সদস্যই ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা। এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান অন্তত ৮-১০ জন শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, মাদকাসক্তদের কারণে ক্যাম্পাসে প্রায়ই হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা যেখানে যে তথ্য পেয়েছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সে তথ্য দিয়েছি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে ক্যাম্পাসে মাদক বিস্তার না করে। হলগুলোতে অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, হলবডি এবং প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিক বার মিটিং করা হয়েছে তারা যদি প্রয়োজন বোধ করে তাহলে সে অনুযায়ী সহায়তা দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। এটা চলমান থাকবে। যে যে জায়গায় চেষ্টা করা দরকার সবকিছুই করা হচ্ছে। মাদক নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরো ব্যাপক মনিটরিং করা হবে। ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে বিষয়টি নিয়ে আমরা জোরেশোরে কাজ শুরু করবো।

সর্বশেষ - সকল নিউজ