আগের পর্বে কর্নেল শহীদ উদ্দিন খানের পরিচয় পেয়েছেন সেই ধারাবাহিকতায় আজ তার অপকর্মের একটি নমুনা তুলে ধরা হবে ।
নানা ‘অপকর্মের হোতা’হিসেবে সম্প্রতি আলোচিত-সমালোচিত হওয়া সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সেনাবাহিনীতে যোগদানের পর কিছু সময় যেতে না যেতে শহীদ উদ্দিন খানের নামে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আসতে থাকে। শহীদ উদ্দিন খান ১৯ জুলাই ২০০১ হতে ২৪ জানুয়ারী ২০০২ পর্যন্ত ১৭ইষ্ট বেঙ্গল, চট্টগ্রাম এর অধিনায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময় ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৩ ও ১৪ আসনের নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন এবং সেই সময় থেকেই বিএনপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। এ প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্রিগেড কমান্ডারের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে উক্ত নির্বাচনী এলাকা হতে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযান পরিচালনা করেন এবং বিভিন্ন ভুয়া অস্ত্র মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে হেনস্থা করতেন। অতঃপর ২০০২ সালে ১৫ই মার্চ জাতিসংঘ মিশন মনুক্কো কঙ্গোতে যান। সেখানেও শহীদ মিথ্যে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মিশন হতে নিজের নাম প্রত্যাহার করেন। পরবর্তীতে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নে আন্তঃবদলি করা হয়। সেখানে গিয়েও শহীদ নিজের দ্যুতি ছড়াতে থাকেন। ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নে যোগদানের অব্যবহিত পরেই ৩-৬ জুন ২০০৪ তারিখের মধ্যে তৎকালীন ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক, ডিজি বিডিআর, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সামরিক সচিব (এমএসপিএম) ও বিডিআর এর পরিচালক প্রশিক্ষণ (ডিওটি) এর বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিকট বেনামী পত্রের মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি উচ্চ পদস্থ সামরিক ও অসামরিক কার্যালয়ে এর অনুলিপি প্রদান করে সেনা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেন এবং সুস্পষ্টভাবে সেনা আইন লঙ্ঘন করেন। এরপর ৫জুন ২০০৪ তারিখে ৬ রাইফেল ব্যাটালিয়নের নায়েক মোঃ আবুল কালামকে বেনামী অভিযোগসমূহের ড্রাফট তৈরি করানোর জন্য তিনি তার সহকারী বাসস্থানে ডেকে নিয়ে ৪০০০ টাকা এবং এই ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক কাজী আবুল হোসেনকে ড্রাফট ও বিভিন্ন ঠিকানায় বেনামী পত্রগুলো প্রেরণ করার জন্য ৬০০০ টাকা প্রদান করেন। যাতে উক্ত ঘটনা ফাঁস না করা হয় সেজন্য তাদের চাকুরী-চ্যুতি ও জেল-জুলুমের ভয় দেখান । তাছাড়া, উক্ত ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ ধ্বংসের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও নষ্ট করে ফেলেন। অভিযোগের পাল্লা অনেক ভারী হয় যখন শহীদ উদ্দিন খানের কোর্ট মার্শাল হয়। ২০০৪ সালের ২৮ নভেম্বর হতে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ পর্যন্ত তৎকালীন ঢাকায় বিডিয়ার সদর দপ্তর পিলখানায় কোর্ট মার্শালে তার বিরুদ্ধে আনা সর্বমোট ২৮টি অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়। চাকরি থেকে বহিষ্কার হবার পরও শহীদ উদ্দিন খান থেমে থাকেন নি। চালিয়ে গেছেন তার নানান অপকর্ম। এরপর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক সেনানিবাসে অবাঞ্চিত হন। পরবর্তী পর্বে আমরা তার আরো একটি অপকর্মের নমুনা তুলে ধরবো