২ শিক্ষার্থীকে আইসিইউতে পাঠানো সেই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত


admin প্রকাশের সময় : জুলাই ৪, ২০২২, ১০:৪২ পূর্বাহ্ন | 487
২ শিক্ষার্থীকে আইসিইউতে পাঠানো সেই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জসিম উদ্দিন নামে এক শিক্ষক স্কুলের ভেতরে জরি (চমকি) নিয়ে খেলা করায় তানজিলা আক্তার (১৪) ও নিশী চৌধুরী (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করেন। পরে ওই দুই শিক্ষার্থীকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বরপা হাজী নুর উদ্দিন আহম্মেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি।

শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে উপজেলার বরপা এলাকার হাজী নুর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। রোববার (৩ জুলাই) অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক জওহর লাল ঘোষ।

স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) আহত দুই শিক্ষার্থী বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

শিক্ষার্থী তানজিলার মা মিনু বেগম ও নিশীর মা বিউটি আক্তার অভিযোগ করেন, উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা এলাকার হাজী নুর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জসিম মাস্টার এক উগ্র প্রকৃতির মানুষ। তিনি প্রায় সময়ই শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করে থাকেন। আগামী দুই-একদিনের মধ্যেই স্কুল ঈদের জন্য বন্ধ দিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার খুশিতে শনিবার দুপুরে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা ও নিশীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী চমকি দিয়ে খেলা করছিল। বিষয়টি শিক্ষক জসিম উদ্দিন দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তানজিলা ও নিশী আক্তারকে অফিস কক্ষে ডেকে পাঠান। এ সময় জসিম উদ্দিন লাঠি দিয়ে দুইজনকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন।

জসিম উদ্দিন দুই শিক্ষার্থীকে লাথি ও চুলের মুঠি ধরে অমানুষিক নির্যাতন চালান। পরে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে জসিম উদ্দিন তাদের অভিভাবকদের না জানিয়ে তাদের স্থানীয় ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে দুই শিক্ষার্থীর অবস্থার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে জসিম উদ্দিন অভিভাবকদের খবর দেন। অভিভাবকরা হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের মুখ থেকে নির্মম ঘটনার কথা জানতে পারেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানজিলা ও নিশীর অবস্থা খারাপের দিকে গেলে তাদের হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী নিশী ও শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তারের পরিবার থেকে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয় ও স্কুলের অন্যান্য অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ কারণে তিনি বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছেন। ওপর মহলের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলার কারণে জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক আটকে আন্দোলন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।

এ ব্যাপারে শিক্ষক জসিম উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।