‘আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংকসহ তদারকি প্রতিষ্ঠান) ঘুমিয়ে থাকি বলেই পি কে হালদারের সৃষ্টি হয়’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১২ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এক রিটের শুনানিতে এমন মন্তব্য করেন।
শুনানি শেষে হাইকোর্ট জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানির আমানতকারী মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরীকে এফডিআরের ১৩ কোটি দুই লাখ ৯৬ হাজার ৫৭৮ টাকা পরিশোধ করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইমদাদুল ইসলামকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘৩১ আগস্টের মধ্যে আমানতকারীর এফডিআরের টাকা পরিশোধ করবেন। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি, এসময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে আপনাদের কোম্পানি শাটডাউন করে দেবো। প্রয়োজনে প্রশাসক নিয়োগ করবো।’
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাসেরও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আপনাদের দায়িত্ব সুপারভাইজ করা।’
হাইকোর্ট বলেন, ‘তারা গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করবে। আর গ্রাহক টাকা আমানত রেখে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবেন, এটা হতে পারে না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু চিঠি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করতে পারে না। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অ্যাকশন না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মর্যাদা থাকবে না।’
আদালতে এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনী। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
২০২১ সালের জুনে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা পরিশোধ করতে চিঠি দেয় জিএসপি ফিন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষকে। এরপরও টাকা পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
পরে পাওনা টাকা আদায়ে হাইকোর্টে রিট করেন মো. ইশতিয়াক হাসান চৌধুরী। এ রিট শুনানির একপর্যায়ে গত ৫ জুন হাইকোর্ট জিএসপি ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তলব করেন।
পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরকে আদালতে আসতে বলা হয়। আদালতের আদেশে জিএসপি ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর রোববার হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন।