বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেছেন, তারা (বিএনপি) বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দিয়ে তারা চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। কানাডার আদালতও বলেছিল সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি। এরা সব সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে থাকে। দেশের সব খুনি-সন্ত্রাসীদের জায়গা হয় এদের দলে। এ দেশের মানুষ বারবার তাদের আসল চরিত্র দেখেছে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বিএনপি মেনে নিতে পারছে না। তাই তাকে নানাভাবে উৎখাত করতে চায় তারা। প্রধানমন্ত্রীকে খুন করার কথাও বলে বেড়ায়। দেশে অশুভশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারেনি শুধুমাত্র শেখ হাসিনার কারণে। সন্ত্রাসীদের কোনো জায়গা বাংলাদেশে হবে না। বাংলাদেশ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গণতান্ত্রিক দেশ।
মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেলে গাজীপুরে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাস্টার-এর ১৮তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, কিছুদিন আগে বিএনপির ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা লাঠি, রট, রামদা, লোহার পাইপ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করে। আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে এই খুনিদের সংগঠন, চাচ্চুদের সংগঠনকে প্রতিহত করেছে। তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তারা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করে ফায়দা লুটতে চায়।
তিনি আরও বলেন, তারা (ছাত্রদল তথা বিএনপি) যদি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে তাহলে আমরা তাদের বাধা দেবো না। এটা আমাদের অঙ্গিকার। কিন্তু তারা যদি হুমকি দেয়, হত্যাকাণ্ড ঘটানোর মতো ভাষায় বক্তব্য দেয়, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাহলে দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করা হবে। আমরা কোনো খুনিদের কাছে মাথা নত করবো না। আমরা বীরের জাতি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাদের প্রতিহত করবো।
এনপি-জামাতের প্রত্যক্ষ মদতে সন্ত্রাসীরা গাজীপুরের এ কীর্তিমান মানুষকে হত্যা করেছে। হত্যাকারীদের আড়াল করার জন্য বিএনপি-জামাত অনেক চেষ্টা করেছে। শুধুমাত্র গাজীপুরের মানুষ ও সারাদেশের মানুষের আন্দোলনের কারণে তারা সেটি পারেনি।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামাত জোট সরকার) ক্ষমতায় থাকাবস্থায় দেশে দুঃশাসন কায়েম করেছে। অত্যাচার, হত্যা, ধর্ষণ- এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। আমাদের এটি ভুলে গেলে চলবে না যে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো এমন একজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা আর কোনদিন খুঁজে পাবো না। কিন্তু তার যে আদর্শ সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে। তিনি বিএনপি-জামাতের অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। তার মতো আদর্শবান মানুষই যেন হয় আমাদের আদর্শ।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জীবন দিয়ে গেছেন। তার রক্তের বিনিময়ে আমরা খুনি বিএনপি-জামাতের হাত থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে পেরেছি। আমাদের মনে রাখতে হবে এ বিএনপি-জামাত এখনো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রিক বাংলাদেশের উন্নয়ন মেনে নিতে পারছে না। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে ঘুরে দাঁড়াক তারা তা কখনোই চায় না। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। খুনি জিয়া ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন, সহযোগীদের চাকরি দিয়েছেন। খালেদা জিয়া তাদের সংসদে নিয়েছেন। জাতির পিতার হত্যাকারীদের সঙ্গে জিয়া যেমন হাত মিলিয়েছেন, খালেদা জিয়াও মিলিয়েছেন। তাই তো তারা এখন আবার ৭৫-এর খুনি হাতিয়ার গর্জে ওঠার স্লোগান দেয়।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সঞ্জিত কুমার মল্লিকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ এবং বিশেষ বক্তা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম আফজালুর রহমান বাবু।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আতাউল্ল্যাহ মন্ডল, গাজীপুর সিটি করপোরেশন ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বর চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সায়েম, মেহেদি হাসান মোল্লা, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল প্রমুখ।