পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার ভারতে গ্রেফতার হওয়ার বিষয়ে আমরা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানি না। তবে জানামাত্র তাকে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের স্মরণসভা ও আলোকচিত্র গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ড. মোমেন। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, নামে-বেনামে দেশ থেকে অনেকে টাকা পাচার করছে। তারা (পাচারকারীরা) দেশের শত্রু। তাদের ধরে আনা হবে।
এদিকে পিকে হালদারকে দ্রুত দেশে আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। শনিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিকের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো আমাদের কাছে খবর আসেনি। খবর পেলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার নামে দেশে মামলা রয়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমরা ভারতের সহযোগিতা চাইব।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও জ্যেষ্ঠ ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, পাঁচটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক অর্থ লুণ্ঠন করেছে পিকে হালদার এবং তার সহযোগীরা। এর মধ্যে পিপলস লিজিংকে অবসায়ন করা হয়েছে। বাকি চারটি প্রতিষ্ঠানও মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। তারা পথে পথে ঘুরছে। শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়, এর সঙ্গে ব্যাংকিং খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। পিকে হালদারকে দেশে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে। তার সঙ্গে আর কারা জড়িত তাদের নামও প্রকাশ করতে হবে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে এভাবে আর্থিক কেলেঙ্কারির কথা কেউ চিন্তাও করতে না পারে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) শাখা পশ্চিমবঙ্গের দমদম, চব্বিশ পরগনাসহ ১০টি এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় সন্দেহভাজন হিসাবে তিন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে একজন পিকে হালদার বলে নিশ্চিত করেছে ইডি সূত্র। অভিযানকারী দল জানায়, পিকে হালদার পশ্চিমবঙ্গে শিবশঙ্কর হালদার পরিচয়ে পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করেছিলেন।