logo
Monday , 18 April 2022
  1. সকল নিউজ

মার্কিন ররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ-পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

প্রতিবেদক
admin
April 18, 2022 10:41 am

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার চেয়ে এই প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু যোজন যোজন দূরে রয়েছে। এই প্রতিবেদনে দেওয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রে যেসব বাংলাদেশি বিভিন্ন সময়ে নিহত হয়েছে; তাদের হত্যায় জড়িত অপরাধীদের বিচার চাইব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেলকে বিস্তারিত তথ্যের জন্য বলা হয়েছে।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা আলাদা এনগেজমেন্ট শুরু করেছি। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশই প্রতিবেদনকে ইগনোর করেছে কিংবা ওই সব দেশের সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে আগ্রহ নেই। কেন নেই এটা গবেষণার বিষয়। আমাদেরও দ্বিতীয় দফা ব্রিফিং করার মতো বিষয় এটি নয়। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে আমরা আরও অনেক কিছু করতে পারব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ২০১৮ সালের তথ্যে ২৭৫টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলা হয়েছে; যেগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যার ক্যাটাগরিতে ফেলা যায়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০৬টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই রিপোর্টে কোয়ালিটি অব রিসার্চ বা ডাটা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের মানবিক হয়ে আশ্রয় দিয়েছেন। আইএলও’র প্রতিটি কনভেনশনে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করেছে। পোশাক খাতে শিশুশ্রম অনেক আগেই নির্মূল করা হয়েছে। অনানুষ্ঠিক খাতেও যেন এটা মেনে চলা হয় সে জন্য পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ আইএলও কনভেনশনের ৮টি মূল ডকুমেন্টে অনুস্বাক্ষর করেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাত্র দুটো মূল কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেছে। বাকি ৬টিতে তারা অনুস্বাক্ষর করেনি। ফলে আইএলও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের রেফারেন্স দিয়ে প্রশ্ন তোলা কতটা সঠিক। এ রকম অনেক অসঙ্গতি এই রিপোর্টে রয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে যদিও কিছুটা খেদ আছে কিন্তু তার দায় আমাদের কিনা সেটাও বিবেচ্য।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করেছেন। মাত্র ১৯৯১ বা ১৯৯৬ থেকে গণতন্ত্র এসেছে। তারপর থেকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো যতটা শক্তিশালী হয়েছে তার কোনো প্রশংসা এই প্রতিবেদনে নেই। শ্রমমানের বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিজেই বলেছেন, ৯৮ শতাংশ অগ্রগতি করেছে। আমরা যে এত পথ পাড়ি দিয়েছি; এই রিপোর্টে তার কোনো এপ্রিসিয়েশন নেই।

শাহরিয়ার আলম বলেন, যেসব উৎস থেকে তথ্য নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে ওই সব উৎস খুবই দুর্বল। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার পুরো দায়িত্ব বাংলাদেশের সরকারের। এই বিষয়গুলো নিয়ে কোনো হস্তক্ষেপ বাংলাদেশ কারও কাছ থেকে প্রত্যাশা করে না।

র‌্যাব সম্পর্কে তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন দেশের সুপারিশের ভিত্তিতে র‌্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের প্রশিক্ষণে র‌্যাব সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হয়েছে। আমরা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিতে জঙ্গিবাদকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। মোটামুটি বলা যায় মূলোৎপাটন করতে পেরেছি। বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলো এই ধরনের সমস্যায় যে কোনো সময়ে পড়তে পারে। এই অঞ্চলের ইতিহাস ভালো নয়। বাংলাদেশকে যারা সত্যিকার অর্থে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র দেখতে চান, যেখানে মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে, সবার মতামত দেওয়ার মতো পরিবেশ থাকবে, এ কাজগুলো করতে হলে জাতির গর্বের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ করতে হবে। আগে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, পয়সা দিয়েছেন, এখন কোনো কারণে দিচ্ছেন না। এসব প্রতিষ্ঠান যাদের ওপর আমরা নির্ভর করি তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করবেন না। গ্রামেগঞ্জে যাবেন, র‌্যাব ইজ অ্যা ব্র্যান্ড নেইম, ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য র‌্যাব ব্র্যান্ড নেইম, সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য র‌্যাব ব্র্যান্ড নেইম। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করেছেন। এখানে যে ব্যত্যয় ঘটেছে সেগুলো নিয়ে আমরা যুক্ত আছি, আমরা খোলাখুলি সুরাহার পথ খুঁজছি। তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দেওয়ার কোনো অপচেষ্টাকে আমরা ভালোভাবে নিতে পারব না।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক চোরাচালান, অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। পর্যায়ক্রমে অবৈধ বাণিজ্যের নিরাপদ সাম্রাজ্য হয়ে উঠছে। এই জায়গায় রোহিঙ্গারা নিজেরা নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বে নিহত হচ্ছেন। মুহিবুল্লাহর মতো একজন মিয়ানমারের নাগরিক যিনি বোঝাতে ব্যস্ত ছিলেন যে আমাদের ফিরে যাওয়া উচিত; তাকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হলো। সেখানে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে থাকে সেটা সহজেই অনুমেয়। এই রকম একাধিক রোহিঙ্গা নেতা আছেন যাদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়ে থাকে। আমরা একটা জটিল বিশ্বে বাস করি।

সর্বশেষ - সকল নিউজ