যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম বিজয়, বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল বাংলাদেশের, বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীতে সেই বীর সন্তানদের স্মরণ করছে জাতি। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বুধবার মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর দুই লাখ সম্ভ্রমহারানো মা-বোনের প্রতি জানানো হয়েছে পরম শ্রদ্ধা। কৃতজ্ঞচিত্তে জাতি স্মরণ করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাস উপেক্ষা করে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন নানা বয়সী মানুষ। বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালেও ফুল, পতাকা, বাহুবন্ধনী আর প্ল্যাকার্ড হাতে দেশের স্মৃতিসৌধগুলোয় এদিন ছুটেছেন আবালবৃদ্ধবনিতা।
ব্যক্ত করেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত বাংলাদেশে মৌলবাদসহ সব অপশক্তি রুখে দেয়ার প্রত্যয়। সব বৈষম্য দূর করে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এক উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ নিয়েছেন তারা।
প্রায় দুই যুগের পাকিস্তানি শাসন এ দেশের জনজীবনকে পরিণত করেছিল নরকে। বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বাধীন দেশের স্বপ্ন এই শোষণের মধ্য দিয়েই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে।
পাকিস্তানি শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটাতে ১৯৭১ সালে নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ফলাফল ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিজয়। তাই প্রতিটি বাংলাদেশির কাছে বিজয় দিবস মানে অন্যরকম একদিন, অন্যরকম আনন্দ।
এই অনুভূতির সঙ্গে অন্য কোনো কিছুর তুলনা হয় না। করোনা মহামারীর সময়েও বিজয়ের এদিনে উৎসবমুখর ছিল সারা দেশ। পাড়া-মহল্লায় বেজেছে দেশাত্মবোধক গান ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। বিভিন্ন ভবনে তোলা হয় জাতীয় পতাকা।
ঝাড়বাতি আর রং-বেরঙের পতাকায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ভবন, বাড়ি, সড়ক, সড়কদ্বীপ। শহীদদের আত্মার শান্তি, জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে সব ধর্মের উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানায় পরিবেশন করা হয় উন্নত মানের খাবার। নানা আয়োজনে ফুটিয়ে তোলা হয় বহু মানুষের আত্মত্যাগ।
তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে বাংলাদেশে এবারের বিজয়ের উৎসব আরও বড় পরিসরে উদ্যাপনের কথা থাকলেও তাতে বাদ সেধেছে করোনাভাইরাস মহামারী।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। একই সময়ে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদনপর্ব।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে তার সামরিক সচিব এসএম শামিম-উজ-জামান ভোর ৬টা ৩৪ মিনিটের দিকে সূর্যোদয়ের সময় জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছু সময়ের জন্য নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দেশের মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষেও শহীদ বেদিতে ফুল দেয়া হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, প্রধান বিচারপতি ও তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ বেদি।
আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা : সূর্যোদয় ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে আওয়ামী লীগ।
এ ছাড়া সকাল ৯টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন এবং সকাল সোয়া ১০টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দলটি।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর নেতারা জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের নেতাকর্মীরা।
এ সময় সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূল উপড়ে ফেলা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে একটি অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি। এবার বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হচ্ছে, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেব।
এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান ও আবদুর রহমান, তথ্যমন্ত্রী ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল হোসেন ও মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা : গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুর সামাদ ডন ও আবদুল আউয়াল শামীমের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা সমাধিসৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
পরে তারা বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী ইমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বাশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন।
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ফল-মিষ্টি : বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য ফল এবং মিষ্টি পাঠিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে (মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১) বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু এবং সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ফল-মিষ্টি পৌঁছে দেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা প্রতিটি রাষ্ট্রীয় দিবস এবং উৎসবে তাদের স্মরণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা নিবেদন : মহান বিজয় দিবসে জাতীয় সৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক বিএলএফ মুজিব বাহিনীর যুদ্ধকালীন কমান্ডার মোহাম্মদ আবদুল হাই সিআইপি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, আলহাজ শরীফ উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন পাহাড়ি বীরপ্রতীক, কমান্ডার মোশাররফ হোসেন, কমান্ডার মো. আবুল বাশারসহ প্রমুখ।
স্মৃতিসৌধে বিএনপির শ্রদ্ধা : বিএনপির পক্ষ থেকে বুধবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিজয় দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এ সময় দেশ স্বাধীন হলেও গণতন্ত্রের মুক্তি মেলেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এখনও আমাদের গণতন্ত্রের মুক্তি মেলেনি। সেই মুক্তির জন্যই আমরা সংগ্রাম করছি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সভাপতি আলাল, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবু আশফাকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তাদের সঙ্গে এ সময় ঢাকা জেলা ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের ব্যানারে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীও শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।
জাতীয় পার্টির শ্রদ্ধা নিবেদন : সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপার নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের পক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আক্তার এমপি, এমরান হোসেন মিয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস চেয়ারম্যান শেখ আলমগীর হোসেন, সালমা হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ফকরুল আহসান শাহজাদা, মো. বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, দফতর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আজহার সরকার, যুগ্ম সাংগঠনিক আক্তার হোসেন, এমএ সুবহান, আবু সাদেক বাদল, কেন্দ্রীয় নেতা ফারুক শেঠ, জিয়াউর রহমান বিপুল, ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ সাংবাদিকদের নেতৃস্থানীয় কয়েকটি সংগঠন। বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলমের নেতৃত্বে প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্কস্তবক অর্পণ করেন। পরে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম-মহাসচিব অবদুল মজিদের নেতৃত্বে বিএফইউজে’র নেতৃবৃন্দ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এর সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপুর নেতৃত্বে ডিইউজের নেতারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক কমান্ডের পক্ষে উপদেষ্টা শফিকুর রহমান এমপি, সভাপতি শামসুদ্দিন পেয়ারা, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সলিমুল্লাহ সেলিম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়াও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাব এডিটরস কাউন্সিল, ঢাকা সাংবাদিক বহুমুখী সমবায় সমিতির নেতারা।
এমআইএসটিতে করোনা প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রম : ‘মাস্ক এ নিরাপত্তা’ এই প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে এবং ‘আমার জীবন সুরক্ষা আমার দায়িত্ব’ এই চেতনাকে ধারণ করে বুধবার মহান বিজয় দিবসে মিরপুর সেনানিবাসে মিলিটারী ইনষ্টিটিউট অব সাই›স এন্ড টেকনোলজি’তে (এমআইএসটি) করোনা সংক্রমন ও বিস্তার রোধে ‘করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম বিজয় দিবস ২০২০’ অনুষ্ঠিত হয়। এমআইএসটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রতিষ্ঠানটির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান।
চ্যানেল আইয়ে ভার্চুয়াল ঐক্য ‘বিজয় মেলা’ : মহান বিজয় দিবসে চ্যানেল আই প্রতি বছরই দিনব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করে। করোনার কারণে বিস্তৃত পরিসরে বিজয় মেলা না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ চ্যানেলটি ভার্চুয়াল বিজয় মেলার আয়োজনে করে। ১৪তম এ মেলার পৃষ্ঠপোষকতা করে ঐক্য ডটকম ডটবিডি। বেলা ২টা পর্যন্ত চ্যানেল আই মেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে। মেলার প্রসঙ্গে অনলাইনে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, ‘এই বিজয় মেলা বার বার মনে করিয়ে দেবে, বাঙালি বীরের জাতি। বাংলাদেশ সেই জাতি যারা গর্ব করতে পারে, গৌরব করতে পারে।’ চ্যানেল আই’র পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, করোনার কারণে যখন পুরো বিশ্ব বিপর্যস্ত, তখনও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বিন্দুমাত্র থমকে নেই।
ঢাকা সমিতির মাস্ক বিতরণ : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মাস্ক বিতরণ করেছে ঢাকার আদিবাসীদের সংগঠন ঢাকা মহানগরী (ঢাকা সমিতি)। পুরান ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঁচ হাজার মাস্ক বিতরণ করেন তারা। দিবসটি উপলক্ষ্যে একটি র্যালিও বের করে তারা। র্যলিটি নয়াবাজার হয়ে নাজির বাজার, বংশাল, আলু বাজার, ফুলবাড়ি সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক এমপি মোঃ হারুন অর রশিদ। আরও উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, ঢাকা মহানগরী সংগঠনের দায়িত্বে থাকা হাজী মোঃ ইসমাইল নোয়াব, হাজী আবু বক্কর, মোঃ ইলিয়াস রশীদ, হাজী গোলাম মোস্তফা, হাজী মোঃ রহমত উল্লাহ, হাজী হাফেজ উদ্দিন প্রমুখ।
এ ছাড়াও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছে শহীদ পরিবারের সন্তান ও যদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা। শ্রদ্ধা জানিয়েছে গণফোরাম, যুক্তফ্রন্ট, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বালাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি-সিপিবি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি।
যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ, জাতীয় পার্টি (জেপি), ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, উন্মক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ-৭১, মম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জাকের পার্টি, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মেডিকল অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি, বাংলাদেশ গণআজাদী লীগ, বাংলাদেশ ডেন্টল সোসাইটি, বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়, অতীশ দীপঙ্কও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক সংঘ, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর, প্রাইভেট মেডিকেল প্রাকটিশনারস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইণস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশন, ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ ।
ই-পোস্টার প্রকাশ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের জন্য একটি ই-পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। ‘ভাস্কর তুমি এই বাংলার জাতির সূর্যোদয়, তোমার সাহসে বিজয়ী মানুষ আমরা করি না ভয়।’ মহান বিজয় দিবসে জাতির পিতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা শীর্ষক এই ই-পোস্টার প্রকাশ করা হয়।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বজন সমাবেশ’র শ্রদ্ধা : সকালে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাভারে যুগান্তর স্বজন সমাবেশের স্বজনরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বজন সচিব হাজী সেলিম আহমদ, যুগান্তরের সাভার প্রতিনিধি মতিউর রহমান ভাণ্ডারী প্রমুখ।
বিপিপি’র আলোচনা সভা : রাজধানীর আইইবি সেমিনার হলে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ (বিপিপি) আলোচনা সভার আয়োজন করে। বিপিপির সভাপতি অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিপিপির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, আইইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী
মোহাম্মদ হোসাইন, প্রকৌশলী এসএম মনজুরুল হক মঞ্জু, সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন শীবলু প্রমুখ।
কদমতলীতে আলোচনা সভা : দনিয়া প্রতিনিধি জানান, রাজধানীর কদমতলীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে প্রত্যহ ভালো থাকি শরীর চর্চা সংগঠনের (প্রভাথা) উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ডিএনসিসি ওয়ার্ড ৪২ (বেরাইদ) : বুধবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ৪২নং ওয়ার্ড (বেরাইদ) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। ভোরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আনছার মিন্টু। উপস্থিত ছিলেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ ও স্থানীয় নেতারা।
পূর্ব বাড্ডা শেখ রাসেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ : পূর্ব বাড্ডায় শেখ রাসেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানের দুস্থ ও হতদরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ড. মো. জাকির হোসেন, উপদেষ্টা ড. হুমায়ুনসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।