নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে বিএনপির কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছে জামায়াত। ঢাকা সিটি নির্বাচন, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনেও বিএনপির পাশে ছিলো না জামায়াত। এমনকি কালেভদ্রে অনুষ্ঠিত ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও উপস্থিত থাকে না জামায়াতের প্রতিনিধিরা। বিএনপির প্রতি ক্ষোভ থেকেই জামায়াত এমনটাই করছে বলে জানা গেছে। তাই অনাগত উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির সাথে থাকবে না জামায়াত।
জানা গেছে, বিএনপির সাথে না থাকলেও স্বতন্ত্রভাবে ঘুরে দাঁড়াতে নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করেছে জামায়াত। দলটিকে দেশের মানুষ যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবেই চেনে। যার কারণে গত এক দশকে জামায়াত দেশের রাজনীতিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে, হারিয়ে জনসমর্থনও। গোপন সূত্র বলছে, জনগণের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে আগামীতে কোনো ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার গোপন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। অন্তত আগামী ২টি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবে না দলটি, দিবে না বিএনপিকেও সমর্থন। অনেকটা পাপ মোচনের ন্যায় জামায়াত দেশের রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত হচ্ছে। জামায়াত নেতাদের বিশ্বাস, আগামী দশ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি বিস্তর প্রসার ঘটবে। নতুন প্রজন্ম নিত্যনতুন গ্যাজেটে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। সেক্ষেত্রে মানুষ জামায়াতের বিতর্কিত অতীতও ভুলে যাবে। আর সেই সুযোগ গ্রহণ করে জামায়াত ১০ বছর পর নতুন নামে, নতুন পরিচয়ে রাজনীতিতে পদার্পণ করবে। আর সেই কৌশল বাস্তবায়নে কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা।
একাধিক সূত্র বলছে, জামায়াত স্বতন্ত্রভাবে রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করতে চায়। জামায়াত কারো ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার ও সিঁড়ি হতে চায় না। জামায়াতকে যথেষ্ট ব্যবহার করেছে বিএনপি, বিনিময়ে বিপদের দিনে দলটির সমর্থনও পায়নি তারা। তাই নতুন প্রজন্মের ইতিহাস ভুলে যাওয়ার পরই রাজনীতিতে ফিরতে চায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দলটি। রাজনৈতিক কার্যক্রম আপাতত বন্ধ থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকতে চায় জামায়াত। তরুণ প্রজন্মের উপর কড়া নজরদারি করতে চায় তারা। পাশাপাশি দলীয় কলঙ্ক দূর করতে ভলান্টিয়ার কার্যক্রমে জড়াতে চায় জামায়াত। এতে করে তাদের পাপমোচন হবে এবং নতুন করে রাজনীতির পথ প্রশস্ত হবে বলেই বিশ্বাস করছেন দলটির নীতি-নির্ধারকরা।