একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির জন্যে নির্ধারিত একটি সংরক্ষিত নারী আসনে দলের হয়ে মনোনয়ন ফরম জমা দেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। হন এমপিও। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সেই সুযোগ না থাকায় বেশ ভেঙে পড়েছেন এই বিএনপি নেত্রী। আফসোস করে বলছেন, কি হতে কি হয়ে গেলো। নেতার কথায় গতবার পদত্যাগ করলাম। ভাবলাম, এবার ভালো কিছু হবে। কিন্তু তা আর হলো না। উল্টো আম-ছালা দুই’ই গেলো। এখন আর আমি এমপি নই। সাধারণ একজন মানুষ।
দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সম্প্রতি সংরক্ষিত নারী আসনে নিজেদের দলীয় প্রার্থী মনোনীত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকা বর্তমানে সরগরম সেই আমেজে। এমতাবস্থায় সংসদে এবার নিজের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় মুষড়ে পড়েছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। মূলত নাখালপাড়ার ন্যাম ভবনের ফ্ল্যাট ও শেরেবাংলা নগরের অফিস হাতছাড়া হওয়ার শোকই তাকে বিশেষভাবে পেয়ে বসেছে বলে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বিষয়টি নিয়ে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বলেন, সব দিক বিবেচনা করেই এবার তারেক রহমানের নির্দেশনায় নির্বাচনে যায়নি বিএনপি। হাইকমান্ড থেকে তৃণমূল, সবাই মেনে নিলেও রুমিনের মত কেউ কেউ এটিকে ভালোভাবে নেয়নি। এ কারণে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল না, তাদের সরব উপস্থিতি। এমনকি নির্বাচনের আগ থেকে অদ্যাবধি টকশোতেও তেমন দেখা যাচ্ছে না রুমিনকে। বলছেন না দলের হয়ে কোন কথাও। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, তার কাছে দল থেকে ব্যক্তিস্বার্থ বড়, এমপিত্ব বড়। আর তা চরিতার্থ না হওয়ায় দিনকেদিন তার এমন আচরণের বহিঃপ্রকাশ।
‘যার দুঃখ সে-ই বোঝে’ উল্লেখ করে বিষয়টির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা বাংলা নিউজ ব্যাংককে দিয়েছেন রুমিন। তিনি বলেন, মন খারাপ হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কারণ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আমি বা আমার দল বিএনপি এবার নেই। আর এটা আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত। যার ঊর্ধ্বে আমি কিংবা দলের কেউই নয়। শুধু খারাপ লাগাটা এই জায়গায়, যে দলের কথা ভেবে আমি সংসদের চলতি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলাম, সেই দলের নেতারাই এখন আমার দিকে আঙুল তুলছেন। বলছেন, আমার কাছে ব্যক্তিস্বার্থই বড়। এখন তাদের কাছেই প্রশ্ন, ব্যক্তিস্বার্থ যদি বড় হতো তাহলে কী আমি পদত্যাগ করতাম? এই গোবরভরা মস্তিস্ক নিয়ে কীভাবে আপনারা বিএনপির রাজনীতি করেন, একটু বলবেন?
চোখ মুছতে মুছতে রুমিন আরও বলেন, আসলে কী জানেন তো, যার দুঃখ সে-ই বোঝে। আমি এমপি হতে পারিনি, জনগণের কাছে যেতে পারিনি, তাদের কথা বলতে পারিনি- এই না পারার আক্ষেপ, ব্যর্থতা- সব আমারই। থাকুক না আমার হয়ে। ভালো থাকুক কটুক্তকারীরা।