logo
Tuesday , 23 May 2023
  1. সকল নিউজ

গতি এসেছে এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে

প্রতিবেদক
admin
May 23, 2023 9:46 am

শেষ সময়ে গতি এসেছে চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই এক্সপ্রেসওয়ের প্রায় ১৩ কিলোমিটারই দৃশ্যমান হয়েছে। বাকি অংশেও চলছে পাইলিং ও গাডার বসানোর কাজ। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে দেশের প্রথম সুড়ঙ্গ পথ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চালুর আগেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

তাতে নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে চলা নগরবাসীর চরম ভোগান্তির অবসান হবে। চার হাজার ২৯৮ কোটি টাকার এই মেগাপ্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এটি হবে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার মাইলফলক।

এক্সপ্রেসওয়ে টানেল হয়ে মহানগরী এবং উত্তর চট্টগ্রামের সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সেতুবন্ধন তৈরী করবে। চট্টগ্রাম বন্দর, দেশের সর্ববৃহৎ ইপিজেড-চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, নদীর ওপারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনালের সাথে সিটি আউটার রিং রোড হয়ে যোগাযোগ সহজতর হবে।

এদিকে এক্সপ্রেসওয়ের মূল অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষ হলেও এখনও নয়টি অংশের ২৪টি র‌্যাম্পের কোনটিরই কাজ শুরু হয়নি। যানবাহন ওঠা-নামার ব্যবস্থা না করে এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে প্রকল্পের সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন প্রকৌশল খাতের বিষেজ্ঞরা। যদিও প্রকল্প পরিচালক বলছেন, মূলকাঠামোর কাজ শেষে র‌্যাম্প নির্মাণ কাজ দ্রুতই শেষ করা যাবে।

সরেজমিন দেখা যায়- পতেঙ্গা সৈকত এলাকা থেকে শুরু করে কাটগড়, সিমেন্ট ক্রসিং, বন্দরটিলা, ইপিজেড, সল্টগোলা ক্রসিং, কাস্টমস মোড় হয়ে ফকিরহাট পর্যন্ত পুরো অংশে গাডার বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। কিছু অংশ বাদ দিয়ে আবার বারিক বিল্ডিং থেকে আগ্রাবাদ বাদামতল থেকে চৌমুহনী হয়ে দেওয়ানহাট পর্যন্ত অংশেও গাডার বসেছে। দেওয়ানহাট থেকে টাইগারপাস হয়ে লালখান বাজার অংশে পাইলিংয়ের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী এক মাসের মধ্যে ১৬ কিলোমিটারের পুরোটাতে গাডার বসানোর কাজ শেষ করা যাবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। আর তখন পুরো এক্সপ্রেসওয়ে দৃশ্যমান হবে। মূল অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেই নয়টি পয়েন্টে শুরু হবে র‌্যাম্প নির্মাণ কাজ। ওই নয়টি পয়েন্টে এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন উঠানামা করবে। ইতোমধ্যে বন্দর নিমতলা বিশ্বরোড অংশে র‌্যাম্পের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম বন্দর ভবন থেকে ফকিরহাট অংশে পাইলিংয়ের কাজ শেষ হলেও সড়কে এখনও বড় বড় গর্ত রয়েছে। তাতে যানবাহন আটকে নিত্য যানজট হচ্ছে। যানবাহন চালকেরা বলছেন, সড়কের গর্ত ভরাট না করায় তাতে যানবাহনের চাকা আটকে ছোটখাট দুর্ঘটনাও ঘটছে। ওই অংশে বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করে। তবে সড়কের বেহাল দশার কারণে সেখানে নিত্য যানজট হচ্ছে। আবার দেওয়ানহাট অংশে পাইলিংয়ের কাজ শেষ হলেও কিছু অংশে গাডার বসানো হয়নি। সেখানে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় সড়ক সরু হয়ে যানজট হচ্ছে। আগ্রাবাদ বাদামতল অংশে গাডার বসানো হচ্ছে। সেখানে রাতে দিনে কাজ চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ চলাকালে সড়কের একাংশ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তাতেও যানজট এবং দুর্ভোগ হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, কখনো আবার দিনের বেলায় ব্যস্ত সড়কে তেমন সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই গাডার বসানোর কাজ করা হচ্ছে। তাতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নগরীতে যানজট কমাতে এবং বিমানবন্দর, টানেল ও সিটি আউটার রিং রোডের সঙ্গে যোগাযোগ দ্রুত করতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয়। এটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ। বিগত ২০১৭ সালে একনেকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা। তিন বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে কোনরকমের সমীক্ষা যাচাই এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে সমন্বয় না করে কাজ শুরু করায় নির্মাণ কাজে ধীরগতি নেমে আসে। ট্রাফিক পুলিশ এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়ে প্রকল্পের কাজ। তাতে বাড়তে থাকে জনদুর্ভোগ। পরে সকলের সাথে সমন্বয় করে কয়েক দফায় নকশা পরিবর্তন করে প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়। প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়ায় চার হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আপত্তি, জমি অধিগ্রহণের জন্য অপেক্ষা, ট্রাফিক বিভাগের অনুমতি না পাওয়া, করোনা মহামারী, লালখান বাজার অংশের নকশা নিয়ে আপত্তি ও বিকল্প সড়ক চালু করতে দেরিসহ নানা কারণে নির্মাণ কাজে গতি আসেনি। তাছাড়া পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার লাইন সরিয়ে নিতে দেরি হওয়ায় প্রকল্প কাজে দেরি হয়।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেপথে নির্মাণ হচ্ছে সেখানে কর্ণফুলী ইপিজেড, সিমেন্ট ক্রসিং, নৌবাহিনীর একাধিক স্থাপনা, সিইপিজেড, বন্দর এলাকা, কাস্টমস সার্কেল এবং আগ্রাবাদ এলাকার ২০টি জংশন রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের নয় এলাকায় গাড়ি ওঠানামার জন্য ২৪টি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে টাইগারপাস এলাকায় চারটি, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড়ে চারটি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে দুটি, বন্দর-নিমতলা মোড়ে দুটি, কাস্টম হাউস মোড়ে দুটি, চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকায় চারটি, কর্ণফুলী ইপিজেড এলাকায় দুটি, কাটগড় এলাকায় দুটি ও পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় থাকবে দুটি র‌্যাম্প। প্রতিটি র‌্যাম্প নির্মাণ হবে দুই লেনের। র‌্যাম্পগুলো একমুখী গাড়ি চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হবে। ১৬ কিলোমিটার উড়াল সড়কটি দেওয়ানহাট রেলসেতুর পশ্চিম পাশ দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে টাইগার পাস মোড়ের পর মূল সড়কের ওপর দিয়ে লালখান বাজার মোড় পেরিয়ে ওয়াসার মোড়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে গিয়ে মিলবে।

এদিকে গত জানুয়ারি মাসে এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা থেকে নিমতলা অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়। কিন্তু শেষ সময়ে এসে র‌্যাম্প নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে তা পিছিয়ে যায়। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, এ কারণে পুরো প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এখন নিমতলা বিশ^রোড পর্যন্ত নয়, কর্ণফুলী টানেল চালুর আগে তথা সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ করা হবে। মূল অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে উল্লেখ করে তিনি জানান, বাকি কাজ শেষ হলে একসাথে নয়টি পয়েন্টে র‌্যাম্পের কাজ শুরু করা হবে। র‌্যাম্প নির্মাণে বেশিসময় লাগবে না বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলেও দুইপাশের সংযোগ সড়কসহ অবকাঠামো নির্মাণ বাকি থাকায় টানেল উদ্বোধন সেপ্টেম্বর নাগাদ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত

‘বিএনপি স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করে’

‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৩০০ দলীয় ক্যাডার নিয়োগ দিয়েছিল বিএনপি’

‘মাইনাস ওয়ান’ বাস্তবায়নে মরিয়া বিএনপি, নয়া ওয়ান-ইলেভেনের প্রস্তুতি বিদেশিদের নিয়ে

বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জেলাজুড়ে তালিকা করছে র‌্যাব-পুলিশ রাজশাহীতে কিশোর গ্যাংয়ের পাঁচ শতাধিক সদস্য সক্রিয়

রবিউলসহ বিএনপি ১০ নেতার কারাদণ্ড

২৩ লাখ টাকাসহ ঢাকায় আটক কক্সবাজারের সার্ভেয়ার আতিকুর

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ণ প্রকল্প কক্সবাজারের চেয়ে ১৮টি উন্নত সেবা ভাসানচরে

আইএমএফের ঋণ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ

ধ্বংস-মৃত্যু-বেদনার মধ্যেই গাজাবাসীর ঈদ