logo
Saturday , 6 May 2023
  1. সকল নিউজ

ট্রলারে ১০ মরদেহ: জবানবন্দিতে যা বললেন আসামি গিয়াস

প্রতিবেদক
admin
May 6, 2023 10:30 am

কক্সবাজারে ডুবন্ত ট্রলারে অর্ধগলিত ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা মামলায় গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামের গ্রেফতার আরও এক আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় গিয়াসের জবানবন্দি রেকর্ড করেন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন আসিফ।

জবানবন্দিতে গিয়াস বলেছেন, গত পাঁচ বছর ধরে ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় তিনি জড়িত। তবে সম্প্রতি ট্রলারে ১০ জন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তখন তিনি চকরিয়ার লবণমাঠে কাজে ব্যস্ত ছিলেন। সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতি করতে গিয়েই ডুবন্ত ট্রলারটির ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রলারে ডাকাতির ঘটনায় মহেশখালী পৌরসভার এক কাউন্সিলর ও এক জলদস্যুর জড়িত থাকার কথাও জবানিতে তুলে ধরেন গিয়াস উদ্দিন মুনির।

 

গিয়াস উদ্দিনের জবানবন্দি রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেছেন, মামলায় এ পর্যন্ত ছয় আসামি গ্রেফতার হয়েছে। এরমধ্যে সবাইকে পাঁচ ও তিনদিন করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে চারজন (কামাল হোসেন বাইট্যা কামাল, আবু তৈয়ূব, ফজল কাদের ও গিয়াস উদ্দিন) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তারা কী বলেছেন, তা জানা নেই। তবে রিমান্ডের সময় জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন। বর্তমানে ছয় আসামি কক্সবাজার জেলা কারাগারে আছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে চকরিয়ার কোনাখালীর বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন মুনির বলেছেন, পেশায় তিনি লবণ চাষি হলেও মাঝেমধ্যে সাগরে নেমে মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতি করেন। কারণ, সংসারে অভাব-অনটন লেগে থাকে। চার-পাঁচ বছর ধরে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত গিয়াস। অনেক ট্রলারে হামলা চালিয়ে আহরিত মাছ, জাল ও জেলেদের মুঠোফোন লুট করেন তিনি। গিয়াসকে ডাকাতিতে নামিয়েছেন মহেশখালীর সোনাদিয়ার সুমন ডাকাত।

গিয়াস আরও বলেন, শেষবার তিনি অন্য কয়েকজন জলদস্যুর সঙ্গে সাগরে ডাকাতিতে নামেন রমজানের দ্বিতীয় দিন। জলদস্যু সুমনের কথায় ওই সময় মহেশখালী পৌরসভার কাউন্সিলর (৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাড়ার বাসিন্দা) খায়ের হোসেনের মায়ের দোয়া ট্রলার নিয়ে সাগরে নামেন। তখন ট্রলারে দেখা হয় মহেশখালীর নুরুল কবির (ডুবন্ত ট্রলারে নিহত), চকরিয়ার কোনাখালীর সাইফুল ইসলামসহ (ডুবন্ত ট্রলারে নিহত) আরও সাত জলদস্যুর সঙ্গে। রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে তারা একটি মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট চালান। ট্রলারটিতে মাছ ছিল না। তবে মাছ ধরার জাল, এক ব্যারেল ডিজেল ও পাঁচ-ছয়টি মুঠোফোন লুট করা হয়। পরের রাতে আরেকটি ট্রলার থেকে প্রায় ৬০০টি ইলিশ মাছ, পাঁচ-ছয়টি মুঠোফোন লুট করা হয়।

এর পরদিন দুপুরে লুটের মালামালসহ মায়ের দোয়া ট্রলারটি কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক উপকূলে পৌঁছালে কমিশনার খায়ের হোসেন ও জলদস্যু সুমন আরেকটি ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। কিছুক্ষণ পর লুটের মালামালগুলো ট্রলারে তুলে নিয়ে মহেশখালীর দিকে চলে যান খায়ের ও সুমন। ডাকাতির হিস্যা হিসাবে গিয়াসকে দেওয়া হয় আট হাজার টাকা। এ যাত্রায় চকরিয়ার সাইফুলকে ট্রলারে নিয়ে যান গিয়াস উদ্দিন। সাইফুলের জীবনে এটিই ছিল প্রথম ডাকাতির ঘটনা।

জবানবন্দিতে গিয়াস বলেন, ডুবন্ত ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন না। থাকলে তিনিও গণপিটুনিতে মারা যেতেন। ৭ এপ্রিল ট্রলার নিয়ে সাগরে ডাকাতিতে নামার জন্য সুমন ও নুরুল কবির তাকে (গিয়াস) কয়েক দফা ফোন করেছিলেন। কিন্তু লবণমাঠে কাজ থাকায় সে যাত্রায় তিনি যেতে পারেননি। ডাকাতি করতে গিয়ে ১০ জনকে পিটিয়ে হত্যার কথা কানে এলে তিনি (গিয়াস) সুমনকে ফোন করেন। জবাবে সুমন বলেছিলেন, তিনি তাদের (নিহত ব্যক্তিদের) মরতে পাঠাননি, পাঠিয়েছিলেন মালামাল লুটপাট করতে। রোজার মাসে তাদের (নিহত ব্যক্তিদের) হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই শহীদ হয়েছেন।

এর আগে আসামি কামাল হোসেন ওরফে বাইট্যা কামাল আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি কক্সবাজার শহরে ছিলেন। তবে ট্রলারের মাঝি-মাল্লাদের সঙ্গে তার কয়েক দফার কথায় নিশ্চিত হয়েছেন যে ১০ জনের ট্রলারটি সাগরে ডাকাতি করতে নেমেছিল। ডাকাতির একপর্যায়ে কয়েকটি ট্রলারের জেলেরা ১০ জনকে জিম্মি করে প্রথমে গণপিটুনি দেন। এরপর গুম করার জন্য মরদেহগুলো বরফ রাখার কক্ষে আটকে রেখে ট্রলারটি (ডুবন্ত ট্রলার) সাগরে ঢুবিয়ে দেওয়া হয়।

মামলার অন্য দুই আসামি (ট্রলারের মাঝি) আবু তৈয়ব ও ফজল কাদের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনাটি তাদের চোখের সামনে ঘটলেও এর সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেন না।

গত ২৩ এপ্রিল বিকেলে শহরের নাজিরারটেক উপকূলে ডুবন্ত একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। ২৫ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ৪ জন (মহেশখালীর মাতারবাড়ীর বাইট্যা কামাল, করিম সিকদার, আনোয়ার হোসেন ও বাবুল মাঝি) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করে মামলা করেন ডুবন্ত ট্রলারের মালিক ও মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত সামশুল আলমের স্ত্রী রোকেয়া বেগম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিদের চারটি ট্রলারের ৫০ থেকে ৬০ জন লোক মিলে সামশুলের ট্রলারটি আটকে পরবর্তী সময়ে সামশুলসহ অন্যদের গলায় রশি পেঁচিয়ে, হাত-পা রশি ও জাল দিয়ে বেঁধে মারধর করে মাছ রাখার হিমাগারের ভেতর আটকে রাখেন এবং ওপর থেকে ঢাকনায় পেরেক মেরে মরদেহ গুম করার উদ্দেশে ট্রলারের তলা ফুটো করে দেন। এতে ট্রলারটি ডুবে যায়। সামশুলের সঙ্গে এজাহারভুক্ত চার আসামির পূর্বশত্রুতা ছিল।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত

সংসদে প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি

যুবদল নেতা টুকুর নির্দেশনায় ট্রেনে নাশকতা: সিটিটিসি

বিএনপি-জামায়াত মাটিতে শুয়ে পড়েছে : মেনন

রিটার্ন জমা দিয়েছেন ৪ লাখ ৭৫০১ করদাতা

গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহ দেখাচ্ছে বিদেশিরা

প্রেমিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতেই কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা

তত্ত্বাবধায়কে ফেরার আর সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ অর্জন অনেক, আছে চ্যালেঞ্জও

শেখ হাসিনাকে সমীহের দৃষ্টিতে দেখেন বিশ্বনেতারা, গাত্রদাহ হচ্ছে বিএনপির: কাদের

যারা লুটপাট করেছে তারা কিভাবে বিদ্যুৎ খাতের সংস্কার করবে :-সজীব ওয়াজেদ জয়