logo
Friday , 17 March 2023
  1. সকল নিউজ

৬০ দেশে রপ্তানি হচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওরের মাছ

প্রতিবেদক
admin
March 17, 2023 11:42 am

মাছ খেতে কার না ভালো লাগে। আর সেই মাছ যদি হাওর-নদীর দূষণমুক্ত সুস্বাদু হয় তাহলে তো কথাই নেই। দেশের সব অঞ্চলে মাছ কমবেশি থাকলেও হাওরের মৎস্য সম্পদের জন্য এখনও বিখ্যাত সুনামগঞ্জ।

দেশের ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে শুধু সুনামগঞ্জের হাওর-নদীতেই দুইশো প্রজাতির অধিক মাছ পাওয়া যায়। হাওর অধ্যুষিত এ জেলায় কল-কারখানা না থাকায় বৃষ্টির পানিতে প্রাকৃতিক জলজ খাবার খেয়েই এসব মাছ বেড়ে ওঠে। আর পানি দূষণমুক্ত হওয়ায় এ মাছ খেতেও অনেক সুস্বাদু। তাই ঢাকাসহ সারাদেশেই এ মাছের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আবার দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের ৫০-৬০ দেশে রপ্তানি হচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওর-নদীর মাছ।

jagonews24

 

জানা যায়, মৎস্য, পাথর ও ধান সুনামগঞ্জের প্রাণ। আদিকাল থেকেই সুনামগঞ্জের মাছের সুনাম ছড়িয়ে আছে দেশজুড়ে। এই সুনাম এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও। হাওরের রাজধানী কিংবা মাছের রাজধানী যে নামেই বলা হোক দেশের মিঠা পানির সর্ববৃহৎ জলাধার সুনামগঞ্জ।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়দৈই বিল। প্রায় ২৫০ জেলে এ বিলে মাছ ধরা ও বাছাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলেরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জাল দিয়ে মাছ ধরেন। পরে নৌকায় সেই মাছ বিলের খলায় (বিলে মাছ রাখার জায়গাকে খলা বলা হয়) নিয়ে আসেন। জেলেরা প্রায় ২০০ প্রজাতির ভিন্ন ভিন্ন সাইজের মাছ ধরে সাজিয়ে রাখেন সেখানে। এসব মাছের মধ্যে ১০-১৫ কেজি ওজনের রুই, বোয়াল, কাতল, গ্রাসকার্প ও কার্পজাতীয় মাছ রয়েছে।

jagonews24

 

একইভাবে চিতল, কালিবাউশ, শোল, গজার, পাবদা, টেংরা, কই, শিং, মাগুরসহ প্রচুর ছোট মাছ ধরে খলায় থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়। প্রতিদিন সকাল থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত বিলে এই কর্মযজ্ঞ চলে। বছরে এই বিল থেকে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জ জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে দুইভাবে মাছের উৎপাদন হয়। মুক্ত জলাশয়ে এবং ইজারাদারদের তত্ত্বাবধানে। সুনামগঞ্জে নদী-খাল ছাড়াও এক হাজারের মতো জলাশয় বা বিল রয়েছে। মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির মাধ্যমে স্থানীয়রা মুক্ত জলাশয় ইজারা নেন সরকারের কাছ থেকে। এই জলাশয়গুলোকে স্থানীয়ভাবে বিল বলা হয়। ইজারাদার প্রতি দুই বা তিন বছর পর পর বিলে মাছ ধরেন। এই দু-তিন বছর হাওর-বিলে পোনা ছাড়া, গাছের ডাল দিয়ে অভয়াশ্রম বানানোসহ প্রাকৃতিকভাবে মাছের রক্ষণাবেক্ষণ করেন ইজারাদাররা। এই দু-তিন বছর পরপর মাছ ধরার কারণে মাছের সাইজ অনেক বড় এবং এর গুণগত মানও ভালো হয়।

jagonews24

সুনামগঞ্জে ছোটবড় প্রায় এক হাজার বিল রয়েছে। এসব বিল থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

সুনামগঞ্জের হাওরের এই মাছ প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। তবে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিশ্বের ৫০-৬০টি দেশে হাওর ও নদীর এই মাছ রপ্তানি হচ্ছে।

জেলেরা জানান, সুনামগঞ্জে অনেক প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়, যা অন্য কোনো জেলায় পাওয়া যায় না।

jagonews24

জেলে আলতাব মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, জেলার প্রায় এক হাজার হাওর-বাঁওড়, নদী-নালা ও খাল বিলের বিস্তীর্ণ জলাশয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।

বড়দৈই বিলের ইজারাদার মনোয়ার পীর জানান, আমাদের এই বিলের মাছ দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত দে জাগো নিউজকে জানান, সুনামগঞ্জের হাওরগুলো দেশীয় ছোট মাছের বৈচিত্র্যে ভরপুর। পানি দূষণমুক্ত এবং প্রাকৃতিক জলজ উদ্ভিদ খাওয়ায় এসব মাছ খেতে সুস্বাদু। সুনামগঞ্জের হাওর ও নদীর মাছ ৫০-৬০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

সর্বশেষ - সকল নিউজ

আপনার জন্য নির্বাচিত